অতিথি পাখির কলতানে মুখর জাহাঙ্গীরনগর ক্যাম্পাস

ক্রাইমবার্তা রির্পোট:জাবি: অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখর হয়ে উঠেছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।  প্রতিবছরের মতো এবারও অতিথি পাখির আগমন ঘটেছে এ ক্যাম্পাসে। প্রতিদিন শিক্ষার্থীদের ঘুম ভাঙে অতিথি পাখির কিচিরমিচির শব্দে। লেকজুড়ে হাজার হাজার লাল পদ্মের মাঝে পাখিদের ওড়াউড়িতে চোখ জুড়িয়ে যায় ঘুরতে আসা পাখি প্রেমীদের।

প্রতি বছর সেপ্টেম্বর মাসের পরে হিমালয়ের উত্তরে শীত নামতে শুরু করার ফলে উত্তরের শীত প্রধান অঞ্চল সাইবেরিয়া, মঙ্গোলিয়া, চীন, নেপাল, জিনজিয়াং ও ভারত থেকে পাখিরা উষ্ণতার খোঁজে পাড়ি জমায় বিভিন্ন নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে। এ সময় দক্ষিণ এশিয়ার নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চল বাংলাদেশে হাজারো অতিথি পাখির আগমন ঘটে। বাংলাদেশের যেসব এলাকায় অতিথি পাখি আসে তার মধ্যে জাহাঙ্গীরনগর ক্যাম্পাস অন্যতম।

মূলত অক্টোবরের শেষ ও নভেম্বরের প্রথম দিকেই অতিথি পাখিরা বাংলাদেশে আসে। আবার মার্চের শেষ দিকে ফিরে যায় আপন ঠিকানায়।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছোট বড় প্রায় ১৭টি লেকের মধ্যে পরিবহন চত্ত্বর, রেজিস্ট্রার ভবনের সামনের লেক ও বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন ওয়াইল্ডলাইফ রেসকিউ সেন্টারের লেকেই অতিথি পাখির সমাগম ঘটে সবচেয়ে বেশি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগ সূত্রে জানা যায়, দুই ধরনের পাখির আগমন ঘটে এ ক্যাম্পাসে। এক ধরনের পাখি ডাঙ্গায় শুকনো স্থানে বা ডালে বসে বিশ্রাম নেয়। আরেক ধরনের পাখি বিশ্রাম নেয় পানিতে। এদের বেশির ভাগই হাঁস জাতীয়। এর মধ্যে সরালি, পচার্ড, ফ্লাইফেচার, গার্গেনি, ছোট জিরিয়া, পান্তামুখী, পাতারি, মুরগ্যাধি, কোম্বডাক, পাতারী হাঁস, জলকুক্কুট, খয়রা  ও কামপাখি অন্যতম।

এছাড়া মানিকজোড়, কলাই, ছোট নগ, জলপিপি, নাকতা, খঞ্জনা, চিতাটুপি, বামুনিয়া হাঁস, লাল গুড়গুটি, নর্দানপিনটেল ও কাস্তেচাড়া প্রভৃতি পাখিও আসে এই ক্যাম্পাসে। এরা ডানায় ভর করে হাজার হাজার মাইল পথ পাড়ি দিয়ে এ অঞ্চলে আসে। পাখি সংরক্ষণে গণসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগ প্রতিবছর ক্যাম্পাসে আয়োজন করে ‘পাখিমেলার’। এ বছরও পাখি মেলা করা হবে বলে জানিয়েছেন আয়োজক পক্ষ।

এদিকে জলাশয়ের পাশে গাড়ির হর্ন বাজানো, ছবি তোলার জন্য পাখিদের দিকে ঢিল ছোড়া কিংবা দর্শনার্থীদের একেবারে পাখির কাছে চলে যাওয়া এসব বন্ধ করতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কোন তৎপরতা দেখা যায়নি।

এ বিষয়ে প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ মোস্তফা ফিরোজ বলেন, ক্যাম্পাসের পরিবেশ ও জলাশয়গুলোকে পরিযায়ী পাখির জন্য উপযোগী করতে প্রশাসনের কোনো উদ্যোগ নেই। এভাবে চললে হয়তো কয়েক বছর পর পাখি আসা বন্ধ হয়ে যাবে।

Please follow and like us:

Check Also

‘জলবায়ুু পরিবর্তন’ —– ঝুঁকিতে উপকূলের ৪০ শতাংশ কৃষিজমি

বাস্তুচ্যুত হওয়ার আশঙ্কা দুই লাখ ৪০ হাজার কৃষকের আবু সাইদ বিশ্বাস,সাতক্ষীরাঃ ‘জলবায়ুু পরিবর্তনে সবচেয়ে বড় …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।