মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর সহিংসতা বন্ধে দেশটির সেনাপ্রধানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন। মার্কিন সময় বৃহস্পতিবার মিয়ানমার সেনাপ্রধান মিন অং হলেইংকে ফোন করে এ আহ্বান জানান তিনি। ফোনালাপে টিলারসন চলমান মানবিক সংকট ও রাখাইনে নৃশংসতার নানা রিপোর্ট নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হিথার নয়ের্টের এক বিবৃতিতে টিলারসনের সঙ্গে মিয়ানমার সেনাপ্রধানের ফোনালাপের বিষয়টি জানান।
নয়ের্ট তার বিবৃতিতে বলেন, ‘পররাষ্ট্রমন্ত্রী টিলারসন রাখাইন রাজ্যে সহিসংতা বন্ধ এবং এতে বাস্তুচ্যুত হওয়া ব্যক্তিদের বিশেষ করে বিপুল সংখ্যক জাতিগত রোহিঙ্গাকে নিজ ঘরে নিরাপদে প্রত্যাবর্তনের সুযোগ করে দেয়ার জন্য মিয়ানমার সরকারকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান বার্মার নিরাপত্তা বাহিনীগুলোকে।
বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে বলা হয়, আগস্ট মাসের শেষ থেকে সংকট ঘনীভূত হওয়া শুরু করার পর ৬ লক্ষাধিক সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিম বাংলাদেশে পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। রাখাইনে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর ওপর মিলিট্যান্ট হামলার পর রোহিঙ্গাদের ওপর ব্যাপক অভিযান শুরু করে সেনাবাহিনী। রোহিঙ্গাদের ‘অবৈধ বেঙ্গলি অভিবাসী’ বলে আখ্যা দিয়ে থাকে বেশিরভাগ বার্মিজ।
অথচ, প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে তারা মিয়ানমারের ভূখ-ে বাস করে আসছে।
টিলারসন বাস্তুচ্যুতদের কাছে ত্রাণ পৌঁছানোর সুযোগ করে দেয়ার জন্যও মিয়ানমার সেনাবাহিনীকে আহ্বান জানান। একইসঙ্গে, মানবাধিকার লঙ্ঘনের যে সকল অভিযোগ রয়েছে তার স্বতন্ত্র তদন্ত এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে জাতিসংঘের সঙ্গে সহযোগিতার করতে বলেন তিনি।
এর আগে সোমবার যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা দেয় যে, রাখাইন সহিংসতায় জড়িত মিয়ানমারের সেনা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে টার্গেটেড নিষেধাজ্ঞা দেয়ার বিষয়টি বিবেচনা করছে তারা। যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমনে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর সিনিয়র সদস্যদের দেয়া আমন্ত্রণ প্রত্যাহারের পাশাপাশি ট্রাভেল ওয়েভার সুযোগ স্থগিত করার কথাও জানানো হয়।
সাম্প্রতিক শরণার্থী সংকটের জন্য যুক্তরাষ্ট্র মিয়ানমারের সামরিক নেতৃত্বকে দোষী মনে করে এমন বক্তব্য দেয়ার পরই টিলারসন বার্মিজ সেনাপ্রধানকে ফোন করলেন।
গেল সপ্তাহে টিলারসন হুশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, যেসব নৃশংসতার খবর আসছে বিশ্ব তা বসে থেকে দেখবে না। আর সামরিক বাহিনীকে অবশ্যই শৃঙ্খলা ও নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আসতে হবে।