ক্রাইমবার্তা রিপোর্ট:চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে খালেদা জিয়া
চট্টগ্রাম থেকে: দীর্ঘ সাড়ে ১১ ঘণ্টা যাত্রা শেষে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে পৌঁছেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। সেখানে রাত্রি যাপন শেষে আগামীকাল রোববার বেলা ১১টায় কক্সবাজার সার্কিট হাউজের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়ার কথা রয়েছে তার।
এ যাত্রা পথে তার গাড়িবহরে একাধিক স্থানে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে সাংবাদিকসহ অর্ধশতাধিক আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে বিএনপি চেয়ারপারসন অক্ষত ও শারীরিকভাবে সুস্থ-স্বাভাবিক আছেন।
এর আগে, দীর্ঘ প্রায় পৌনে ৬ ঘণ্টা যাত্রার পর বিকেল ৫টা ১০মিনিটে ফেনী সার্কিট হাউজে পৌঁছান বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। সেখানে ১ ঘণ্টা ৪০ মিনিট যাত্রা বিরতি শেষে ৬টা ৫০ মিনিটে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে ফেনী ত্যাগ করেন তিনি।
শনিবার সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে গুলশানের বাসভবন ফিরোজা থেকে রওনা হয়ে বিকেল ৫টার দিকে ফেনী পৌঁছান তিনি। দুপুর ২টার দিকে ফেনী সার্কিট হাউজে থাকার কথা থাকলেও যাত্রা পথে নেতাকর্মীদের ভিড় ও যানজটের কারণে সার্কিট হাউজে পৌঁছাতে বিলম্ব হয়।
এদিকে ফেনীর দুই স্থানে ও চট্টগ্রামের মীরেরসরাইতে খালেদা জিয়ার গাড়িবহরের হামলার ঘটনা ঘটেছে। আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা এ হামলা চালায় বলে অভিযোগ করেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
গাড়ি বহরের হামলার ওই সব ঘটনায় ৫ সাংবাদিকসহ বিএনপির অর্ধশত নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
এ হামলায় নিন্দা জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। হামলার শিকার আহত সাংবাদিকদের প্রতি গভির সমবেদনা জানিয়ে তাদের সুচিকিৎসার নির্দেশনাও দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
ফেনীর মহিপাল ও চট্টগ্রামের মীরেরসরাই এলাকায় বিএনপি চেয়ারপারসনের গাড়িবহরে সাংবাদিকদের ওপর হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন খালেদা জিয়া।
শনিবার রাত ৮টায় শীর্ষনিউজকে এ তথ্য জানিয়েছেন খালেদা জিয়ার মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার।
খালেদা জিয়ার বরাদ দিয়ে শামসুদ্দিন দিদার বলেন, ‘কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণে আসা গাড়িবহর ও সাংবাদিকদের ওপর সরকার দলীয় সন্ত্রাসীদের ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবদ জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। সেই সাথে কর্মসূচি কাভার করতে আসা সাংবাদিকদের আহত হওয়া, ক্যামেরা ভাঙচুর ও গণমাধ্যমের গাড়িতে হামলার কথা জেনে তিনি (খালেদা জিয়া) দুঃখ প্রকাশ করে আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে জরুরি নির্দেশনা দিয়েছেন।’
এর আগে শনিবার বিকাল পাঁচটার দিকে ফেনীর মহিপালের ফতেহপুর এলাকায় প্রথম দফায় সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে।
দ্বিতীয় দফায় চট্টগ্রামের মীরেরসরাই উপজেলার নিমচরে আরও কয়েকজন সাংবাদিক দুর্বৃত্তদের হামলার স্বীকার হন।
এসব হামলায় একাত্তর টিভি, বৈশাখী, এনটিভি, সময়, ডিবিসি, বাংলাভিশন ও চ্যানেল আইসহ বহরে থাকা বেশ কটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। আহত হন অন্তত ৫ সাংবাদিকসহ বিএনপির অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী।
ফেনী:ফেনীর মহিপাল নাইন স্টার হোটেলের পাশে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলা করেছে ক্ষমতসীন দলের নেতাকর্মীরা। এতে একাত্তর টিভির সিনিয়র রিপোর্টার শফিক আহমেদসহ পাঁচ সাংবাদিক আহত হয়েছেন। ভাংচুর করা হয়েছে ডিবিসি, চ্যানেল আই, একাত্তর ও বৈশাখী টিভিসহ বিএনপি নেতাকর্মীদের অর্ধ শতাধিক গাড়ি ও সাংবাদিকদের ক্যামেরা।
শনিবার বিকেলে এই হামলা হয়।
হামলায় একাত্তর টিভি, সময় টিভি, বৈখাশী টিভি, বাংলাভিশনের রিপোর্টার ও চ্যানেল আইর ক্যামেরাম্যানসহ পাঁচ সাংবাদিক আহত হয়েছেন। হামলাকারীরা লাঠিসোটা ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে এ হামলা চালায়।
হামলার শিকার সাংবাদিকরা শীর্ষনিউজকে জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এ হামলা চালিয়েছে।
রোহিঙ্গাদের ত্রাণ দিতে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার যাওয়ার পথে ফেনীতে বিএনপি চেয়ারপারসনের গাড়ি বহর পৌঁছলে ছাত্রলীগ-যুবলীগ নেতা-কর্মীদের অতর্কিত এ হামলার শিকার হন সাংবাদিকসহ বিএনপি নেতাকর্মীরা। হামলাকারীরা অর্ধশতাধিক গড়ি ভাঙচুর করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, একাত্তর টিভি, বৈশাখী, ডিবিসি, চ্যানেল আই, প্রথম আলো, ডেইলি স্টারের গাড়ি, খালেদা জিয়ার মিডিয়া উইংয়ের গাড়ি হামলার শিকার হয়। বহরের পেছনে থাকা প্রায় সব গাড়ি বেছে বেছে ভাঙচুর করা হয়।
এর আগে শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ফেনী শহরের পাঁচ কিলোমিটার আগে মোহাম্মদ আলী বাজার এলাকায়ও হামলার ঘটনা ঘটে। এছাড়া কুমিল্লার ইলিয়টগঞ্জে, ভবেরচর ও দাউদকান্দিতে হামলা হয়েছে। এ ঘটনায় অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন। খালেদা জিয়ার গাড়ি চলে যাওয়ার মিনিট কয়েক পরেই এ হামলা হয়।