ক্রাইমবার্তা আন্তজার্তিক রিপোর্ট:ঢাকা: ‘মিয়ানমারের রাখাইনে বৌদ্ধ নেতারা জাতিগত সংঘাতের উসকানি দিচ্ছে। বৌদ্ধরা মুসলমানদের পোশাক পরে হিন্দুদের ওপর নির্যাতন করছে, নারী ধর্ষণ করছে ও লুটপাট করছে। এভাবে তারা মুসলমাদের বিরুদ্ধে হিন্দুদের উসকে দিচ্ছে। পাশাপাশি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে দেশটির নাগরিকদের কাছে অসত্য তথ্য দিয়ে উসকানি দিচ্ছে।’
সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘ইউনাইটেড মুসলিম উম্মাহ’ নামের একটি সংগঠন আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।
মিয়ানমারে অসংখ্য রোহিঙ্গাকে অমানবিক অবস্থায় ক্যাম্পে বন্দী রাখা হয়েছে। তাদের খাবার, পানি ও ওষুধ দেয়া হয় না। সম্প্রতি মিয়ানমারে গিয়ে এমন দৃশ্য দেখে আসার দাবি করেছে ইউনাইটেড মুসলিম উম্মাহ নামের ওই সংগঠনটি। সংগঠনটি রোহিঙ্গা নির্যাতন বন্ধে মিয়ানমারের বৌদ্ধধর্মীয় নেতাদের আলোচনায় বসাতে কনফারেন্স করবে বলেও জানিয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আরকানের মুসলমানরা এক আন্তর্জাতিক গভীর ষড়যন্ত্রের মধ্যে পড়েছে। আমরা স্বচক্ষে দেখেছি, আরকানে মুসলমানদের তাড়িয়ে গড়ে উঠছে চীন ও ভারতের ব্যবসার স্বর্গরাজ্য। সিতুয়ে শহরে গড়ে উঠেছে ওই অঞ্চলের সবচেয়ে বড় জেটি, যা নির্মিত হচ্ছে ভারত সরকারের উদ্যোগে। তাই মুসলমানদের অবস্থানকে হুমকি মনে করা হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন ইউনাইটেড মুসলিম উম্মাহর প্রধান সমন্বয়ক মজুমদার মোহাম্মদ আমিন।
এক প্রশ্নের জবাবে মজুমদার মোহাম্মদ আমিন জানান, তিনি জন্মসূত্রে বাংলাদেশি নাগরিক। তবে এ সংগঠনটি ২০১৩ সালে আন্তর্জাতিক মুসলিম নেতাদের নিয়ে রাশিয়ার মস্কোতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে তার পাশে রাশিয়ার নাগরিক তাদরিকভ রাসুল এবং কলম্বিয়ার নাগরিক আমিনা মোহাম্মদ উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে মজুমদার মোহাম্মদ আমিন বলেন, সংগঠনের একটি প্রতিনিধিদল গত ৮ থেকে ১৩ অক্টোবর কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো পরিদর্শন ও আক্রান্ত রোহিঙ্গাদের বক্তব্য শুনেছেন।
গত ১৪ থেকে ২৫ অক্টোবর তারা মিয়ানমার সফর করেছেন। সেখানে মুসলমানদের অবস্থান দেখেছেন। ওই দুই সফর ও পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে জানাতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।
মজুমদার মোহাম্মদ আমিন বলেন, আমরা মিয়ানমারের আরাকান, বুতিডং, মিন্ডিলে ও রেঙ্গুন শহরের আশপাশে অসংখ্য রোহিঙ্গাদের অমানবিক অবস্থায় ক্যাম্পে বন্দী রাখতে দেখেছি। ওইসব ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের খাবার, পানি ও ওষুধ দেয়া হয় না। মুসলিম ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, মাদ্রাসা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ করে দেশটির সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘিরে রেখেছে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মিয়ানমারের বৌদ্ধ নেতারা জাতিগত সংঘাতের উসকানি দিচ্ছে। আমরা শুনেছি, বৌদ্ধরা মুসলমানদের পোশাক পরে হিন্দুদের ওপর নির্যাতন করছে, নারী ধর্ষণ করছে ও লুটপাট করছে। এভাবে তারা মুসলমাদের বিরুদ্ধে হিন্দুদের উসকে দিচ্ছে। পাশাপাশি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে দেশটির নাগরিকদের কাছে অসত্য তথ্য দিয়ে উসকানি দিচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, এ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা বৌদ্ধসহ সব ধর্মের নেতাদের নিয়ে শান্তি আলোচনায় বসার উদ্যোগ নিতে চাই। আগামী ডিসেম্বরে এ কনফারেন্স করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের কাছে অনুমতি চাওয়া হবে। অনুমতি পেলে ওই কনফারেন্সে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর প্রতিনিধি, জাতিসংঘ, ওআইসির প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানানো হবে। একইভাবে মিয়ানমারেও এ ধরনের উদ্যোগ নেয়া হবে।