গাজীপুর সংবাদদাতাঃ গাজীপুরে সিটি মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা অন্য মেডিকেল কলেজে মাইগ্রেশনের দাবিতে এবং কর্তৃপক্ষের নানা অনিয়মের প্রতিবাদে বৃহষ্পতিবার বিক্ষোভ, সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে। ওই দাবীতে তারা প্রায় তিন মাস ধরে লাগাতার ক্লাশ বর্জন করে আসছে।
জয়দেবপুর থানার ওসি আমিনুল ইসলাম ও শিক্ষার্থীরা জানায় গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের চান্দনা চৌরাস্তা সংলগ্ন ইটাহাটা এলাকাস্থিত সিটি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম ব্যাচের অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী কলেজ মাইগ্রেশনের দাবিতে এবং কর্তৃপক্ষের নানা অনিয়মের প্রতিবাদে বৃহষ্পতিবার সকালে বিভিন্ন ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে কলেজের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে। দুপুর পর্যন্ত তারা বিক্ষোভ ও সমাবেশ করে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন কর্মসূচি চলাকালে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একটি পরিদর্শণ টিম কলেজ পরিদর্শণে আসেন। তারা প্রয়োজনীয় সক্ষমতা অর্জনের শর্তপূরণ না হওয়ায় এ কলেজের স্থগিত হওয়া ভর্তি কার্যক্রম প্রত্যাহারের লক্ষ্যে কলেজ পরির্দশণে আসেন এবং প্রায় এক ঘন্টা অবস্থান করেন। এসময় পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের শান্ত রাখার চেষ্টা করে।
সিটি মেডিক্যল কলেজের পঞ্চম ব্যাচের শিক্ষার্থী জান্নাতুন নূর, প্রথমা মোদক ও চতুর্থ বর্ষের আশিকুর রহমানসহ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানায়, সিটি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা ২০১৩-১৪, ২০১৪-১৫ ও ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিবিএস কোর্সে ভর্তি হয়। এ কলেজের নিজস্ব কোন ভবন, জমি ও ক্যাম্পাস নেই। এছাড়া হাসপাতালের অনুমোদন ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সামগ্রীও নেই। এ মেডিকেল কলেজে বর্তমানে শিক্ষা কার্যক্রম চালানোর জন্য পর্যাপ্ত শিক্ষকও নেই। বাংলাদেশ মেডিক্যাল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) নীতিমালা মেনে না চলার কারণে ২০১৬-২০১৭ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি কার্যক্রম এবং বিএমডিসির অনুমোদন স্থগিত করা হয় এবং সকল শর্ত পূরণ করার জন্য এক বছর সময় দেয়া হয়। কিন্তু নির্ধারিত এসময়ের মধ্যেও কলেজ কর্তৃপক্ষ সরকারি শর্ত পূরণ করতে পারেনি। ফলে, ২০১৭-২০১৮ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি কার্যক্রম সম্পর্কে প্রাথমিকভাবে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় কর্তৃক পূর্ব ঘোষিত সিদ্ধান্ত বহাল রেখে স্থগিত করা হয়। এ অবস্থায় শিক্ষার্থীরা ভবিষ্যৎ শিক্ষা জীবন নিয়ে অনিশ্চিয়তার দিকে ধাবিত হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা অনুমোদনহীন মেডিকেল কলেজে তাদের শিক্ষা কার্যক্রম চালাতে অনিচ্ছুক। এরপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীরা বিএমডিসি কর্তৃক অনুমোদিত মেডিকেল কলেজে স্থানান্তর করার জন্য দাবী জানায়।
এব্যপারে ওই মেডিক্যল কলেজের পরিচালক হায়াতুল ইসলাম আহাদ বলেন, শিক্ষার্থীরা অযৌক্তিক ভাবে এসব দাবী করছে। বিএমডিসি এ কলেজ প্রতিষ্ঠার পর প্রথম দুই বছর ছাড়া অন্য শিক্ষাবর্ষের জন্য অনুমোদন না দিলেও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ২০১৩-২০১৪ এবং ২০১৪-২০১৫ শিক্ষাবর্ষের জন্য শিক্ষার্থী ভর্তির অনুমোদন দিয়েছে। তবে নিজস্ব ভবন না থাকাসহ কিছু শর্ত পূরণ না হওয়ায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নির্দেশে এ কলেজসহ দেশের ৯টি মেডিক্যাল কলেজের গত ২০১৬-২০১৭ ও ২০১৭-২০১৮ বছরের ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয়। পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় সক্ষমতা অর্জনের শর্তপূরণ করা হলে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের লক্ষ্যে ওইসব কলেজসমূহ পূনঃপরিদর্শণ করে রিপোর্ট দাখিলের জন্য গত মাসে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় একটি কমিটি গঠণ করে। সরেজমিন পরিদর্শণ করে কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বলা হয়েছে। বৃহষ্পতিবার বেলা ১১টার দিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালকের নেতৃত্বে ১১ সদস্যের এ পরিদর্শণ টিম সিটি মেডিক্যাল কলেজ পরিদর্শণে আসেন। আশা করছি শীঘ্রই কলেজের ভর্তি কার্যক্রমের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করা হবে। তবে কলেজের বর্তমান শিক্ষার্থীদের এখনো পর্যন্ত দুশ্চিন্তায় থাকার কোন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি। তিনি আরো জানান, এ কলেজে ভারতের ৭জন ও নেপালের ২০জনসহ প্রায় সাড়ে তিনশ’ শিক্ষার্থী রয়েছে।
শ্রীপুরে পিকআপ ভ্যান চাপায় ভিক্ষুক নিহত
গাজীপুর সংবাদদাতাঃ গাজীপুরের শ্রীপুরে বৃহষ্পতিবার বিকেলে পিকআপ ভ্যানের চাপায় বৃদ্ধ এক ভিক্ষুক নিহত হয়েছে। তার নাম মুক্তার হোসেন (৬০)। সে ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা উপজেলার বিরুনিয়া গ্রামের মৃত কান্দু শেখের ছেলে।
মাওনা হাইওয়ে থানার ওসি দেলায়ার হুসেন বলেন, বৃহস্পতিবার বিকেলে শ্রীপুরের নয়নপুর বাজার এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক পার হওয়ার সময় ঢাকাগামী একটি পিকআপ ভিক্ষুক মুক্তার হোসেনকে চাপা দেয়। এতে সে গুরুতর আহত হয়। স্থানীয়রা তাকে আশংকা জনক অবস্থায় উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে সে মারা যায়। পুলিশ পিকআপ ভ্যানটি আটক করলেও চালক পালিয়ে গেছে।
###