সাতক্ষীরার অতি-প্রাচীনতম বল্লী মো. মুজিবুর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সুবর্ণ জয়ন্তীতে শিক্ষক, সুধী ও শিক্ষার্থীদের মিলন মেলা

শেখ কামরুল ইসলাম : সাতক্ষীরার অতি-প্রাচীনতম বল্লী মো. মুজিবুর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৫০ বছর পুর্তি সুবর্ণ জয়ন্তী উৎসব-২০১৭ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার সকালে সদরের বল্লী ইউনিয়নের অবস্থিত স্কুলটির প্রতিষ্ঠার ৫০ বছর পূর্তিতে প্রাক্তন কৃতি ছাত্র-ছাত্রীদের উৎসাহ, সহযোগিতায় ও বিদ্যালয়ের প্রচেষ্টায় বল্লী মুজিবুর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে আনন্দ ও উৎসবমুখর পরিবেশে বর্ণাঢ্য সুবর্ণ জয়ন্তীতে সাবেক ও নতুন-পুরাতন ছাত্র-ছাত্রীদের মিলন মেলায় পরিনত হয়। মেহগনি ও কৃষ্ণচূড়ার মনোরম পরিবেশে ঘেরা এতিহ্যবাহী বল্লী মুজিবুর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি ১৯৬৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। বল্লী মুজিবুর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ এমপি। অনুষ্ঠানের উদ্বোধক হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাতক্ষীরা-০২ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সংসদ সদস্য এস. এম জগলুল হায়দার, জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মুনসুর আহমেদ, যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মোহাম্মদ আব্দুল আলিম, জেলা প্রশাসক (ভারপ্রাপ্ত) স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক আব্দুল লতিফ খান, জেলা পুলিশ সুপার মো. সাজ্জাদুর রহমান, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আসাদুজ্জামান বাবু, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ নূর হোসেন সজল, সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এস.এম শওকত হোসেন, জেলা শিক্ষা অফিসার এস.এম ছায়েদুর রহমান, সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. জাহিদুর রহমান প্রমুখ। অনুষ্ঠানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, বেলুন ও ফেস্টুন উড়িয়ে বল্লী মো. মুজিবুর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৫০ বছর পুর্তি সুবর্ণ জয়ন্তী উৎসবের উদ্বোধন করা হয়। মুল অনুষ্ঠান শুরুর পূর্বে সকালে পুরাতন ও নতুন ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকদের সমন্বয়ে এলাকায় আনন্দ র‌্যালি বের করা হয়। এরপর নির্দিষ্ট সময়ে সম্মানিত অতিথিবৃন্দের আগমনে পবিত্র মহাধর্মগ্রন্থ কোরআন তেলাওয়াত গীতা থেকে পাঠের পর অতিথিরকে ফুল দিয়ে বরণের মাধ্যমে মুল অনুষ্ঠান শুরু হয়।
প্রথমে বিদ্যালয়টির সাফল্য ও অতিথিদেরকে শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করে বক্তব্য রাখেন অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সুবর্ণ জয়ন্তী উদ্যাপন কমিটির আহবায়ক মো. আব্দুর রাজ্জাক। প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ এমপি বলেন, ‘দেশ ও জাতি গড়তে শিক্ষার বিকল্প নেই। এই বিদ্যালয়ে শিক্ষা অর্জন করে অনেকেই দেশের ভালো ভালো অবস্থানে আছেন। পাশিপাশি তারা দেশ ও জাতি গঠনে অগ্রনী ভূমিকা পালন করে চলেছেন। আগামীতেও সেই ধারা অব্যাহত রেখে দেশকে এগিয়ে নিতে বিদ্যালয়টি ভূমিকা পালন করে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।’
অনুষ্ঠানের উদ্বোধকের বক্তব্যে এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি বলেন, ‘বিদ্যালয়টি যখন প্রতিষ্ঠা হয়েছে তখন অত্র এলাকার কয়েকটি ইউনিয়নে কোন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ছিল না; এমনকি কোন রাস্তা-ঘাট ও ছিল না। অনেক দূর-দূরান্ত থেকে ছেলে মেয়েরা পায়ে হেঁটে স্কুলে এসে প্রতিষ্ঠিত হয়ে এখন অনেকেই বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে দেশের কল্যাণে অবদান রাখছেন। তিনি বর্তমানে অত্র বিদ্যালয়ে অধ্যয়ণরত সকল শিক্ষার্থীদেরকেও দিক নির্দশনা দিয়ে বক্তব্য প্রদান করেন। বিশ্বে পরিশ্রম ও মেধা দিয়ে অধিষ্ঠিত কিছু মহাব্যক্তিদের উদাহরণ তুলে ধরে বক্তব্যের মাধ্যমে ছাত্র ছাত্রীদেরকে অধিক জ্ঞানার্জনে উদ্বোর্দ্ধ করেন।’
প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ, বল্লী মো. মুজিবুর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠার ডা. শীতল প্রসাদ রায়ের পুত্র রমা প্রসাদ রায়, ইউপি চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ ফজলুর রহমান, বল্লী মো. মুজিবুর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সুবর্ণ জয়ন্তীর প্রধান সমন্বয়কারী আব্দুর রহিম, প্রাক্তণ ছাত্র ইউপি চেয়ারম্যান মো. বজলুর রহমান, জেলা পরিষদের সদস্য ওবায়দুর রহমান লাল্টু প্রমুখ। এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামীলীগের দপ্তর সম্পাদক শেখ হারুন উর রশিদ, সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শাহাজান আলী, পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি মোহাম্মদ আবু সায়ীদ, জেলা পরিষদের সদস্য সৈয়দ আমিনুর রহমান বাবু, জেলা যুবলীগের আহবায়ক মো. আব্দুল মান্নান, সদর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান মিজান, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. রেজাউল ইসলাম রেজা, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাদিকুর রহমান, আওয়ামীলীগ নেতা মো. শাহিদুল ইসলামসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তা, গন্য মান্য ব্যক্তি বর্গ, শিক্ষক, নতুন ও প্রাক্তন কৃতি ছাত্র-ছাত্রীরা। সমগ্র অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন যুবলীগ নেতা আবতাবুজ্জামান লাল্টু। সন্ধ্যায় সংগীত পরিবেশন করেন দেশ বরেণ্য কণ্ঠ-শিল্পী গানের পখি সাবিনা ইয়াসমিন।

Check Also

স্বামীর মৃত্যুর খবর শুনে স্ত্রীও মারা গেলেন

কানাইলাল দাশ (৬৮) অসুস্থ ছিলেন। চিকিৎসার জন্য তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছিল। তবে পথেই তাঁর মৃত্যু …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।