ক্রাইমবার্তা রিপোর্ট:ঢাকা: একাংশের বিরোধিতার মুখে শেষ পর্যন্ত ঢাকা ছাড়তে হল দিল্লির নিজামুদ্দিন তাবলিগের মুরব্বি মাওলানা সা’দ কান্ধলভির। তার সঙ্গে ফিরে গেছেন ওই মারকাজ থেকে আসা ১০ জনের জামাতও।
শনিবার সকালে তিনি দিল্লির উদ্দেশ্যে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করেন তিনি।
তাবলিগ ও বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, সকাল ১১টা ৪৫ মিনিটে জেট এয়ারওয়েজের ফ্লাইটে সফরসঙ্গীদের নিয়ে ঢাকা ছাড়েন মাওলানা সা’দ।
এর আগে বিশ্ব ইজতিমায় অংশ নেয়ার জন্য মাওলানা সাদ গত ১০ জানুয়ারি ঢাকায় এসেছিলেন। ইজতেমায় অংশ নেয়ার কথা থাকলেও বিক্ষোভ প্রতিবাদ ও আপত্তির মুখে অংশ নিতে পারেননি।
তিনি ঢাকায় আসার পর বাংলাদেশের তাবলিগ জামাতের কেন্দ্রীয় মারকাজ মসজিদ কাকরাইলে ৩ দিন অবস্থান করেন এবং শুক্রবার জুমার নামাজের আগে দীর্ঘ বয়ান ও নামাজের ইমামতি করেন।
বিশ্ব ইজতেমায় বরাবরই দিল্লি মারকাজ থেকে আগত মুরব্বিরাই সাধারণত শেষ মুনাজাত পরিচালনা করেন। কিন্তু মাওলানা সাদ ইজতেমায় না থাকায় এবার ইজতেমায় মুনাজাত পরিচালনা করবেন কাকরাইল মারকাজরে শুরা সদস্য হাফেজ মাওলানা মুহাম্মাদ যুবায়ের।
বিতর্কের মুখে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করলেন মাওলানা সা’দ
তাবলিগ জামাতের একাংশ, হেফাজতে ইসলাম ও কওমিপন্থী আলেমদের বিরোধিতার মুখে এবার টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমায় অংশ নিতে পারছেন না দিল্লির নেজামুদ্দিনের মুরব্বি মাওলানা সা’দ কান্ধলভি।
শুক্রবার বাংলাদেশে তাবলিগ জামাতের মারকাজ কাকরাইল মসজিদে জুমার নামাজের আগে বয়ান ও নামাজ শেষে দোয়া পরিচালনা করেন তিনি। এ সময় মাওলানা সা’দ উর্দুতে তার বয়ান পেশ করেন। এতে তিনি তার পূর্বে দেওয়া তার বক্তব্য থেকে সরে এসেছেন বলে জানান।
নিজের অবস্থান পরিষ্কার করে বয়ানে মাওলানা সা’দ বলেন, ‘কোনও সময় যদি আামাদের ওলামায় কেরাম কোনও কারণে ভুল ধরেন, আমরা মনে করবো, ওনারা আমাদের ওপর এহসান করেছেন, ওনারা আমাদের মোহসেন। ওলামায় কেরাম যে কথা বলবেন, তাতে আমাদের সংশোধন হবে ইনশাল্লাহ। এজন্য ওলামাদের কাছ থেকে আমরা লাভবান হবো। ওনারা কোনও ভুল ধরলে আমরা সংশোধন হবো। ’
তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের কাজ হলো বয়ান করা। বয়ানে অনেক সময় ভুল হয়ে যায়। আমি সবার সামনে রুজু (বর্তমান অবস্থান থেকে সরে আসা) করেছি। কোনও কথায় যদি দোষ হয়, এটা থেকে আমি রুজু করতেছি, আগেও করেছি, এখনও করছি।’
সকাল থেকেই কাকরাইল মসজিদে আসতে থাকেন মাওলানা সা’দের অনুসারীরা। তাদের মধ্যে রয়েছেন বিদেশি মুসল্লিও।
বির্তকিত বক্তব্য দিয়েছেন এমন অভিযোগ তুলে মাওলানা সা’দ যেন বাংলাদেশে না আসতে পারেন, সে দাবি তোলে তাবলিগ জামাতের একাংশ, হেফাজতে ইসলাম ও কওমিপন্থী আলেমরা।
প্রসঙ্গত, ভারতের তাবলিগ জামাতের মুরব্বি মাওলানা মোহাম্মদ সাদের বাংলাদেশে আসা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়েছে। সরকারের সিদ্ধান্ত অমান্য করে মাওলানা মোহাম্মদ সাদ ইজতেমায় অংশ নিতে ঢাকায় এসেছেন—এমন বক্তব্য দিয়ে গত বুধবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর গোলচত্বরের পূর্ব পাশে বিক্ষোভ-সমাবেশ করে বিক্ষুব্ধরা। তারা মাওলানা সাদ ও তার সফরসঙ্গীদের বিমানবন্দর থেকে দিল্লিতে ফেরত পাঠানোর দাবি জানায়। পরে তারা খবর পায় মাওলানা সাদ বিমানবন্দর থেকে তাবলিগ জামাতের কেন্দ্রস্থল কাকরাইল মসজিদে চলে গেছেন। এরপর আন্দোলনকারীরা মাওলানা সাদকে ভারতে ফেরত না পাঠানো পর্যন্ত কাকরাইল মসজিদ ও টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমায় অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করে।
১৩জানুয়ারী,২০১৮শনিবার::ক্রাইমর্বাতা.কম/প্রতিনিধি/আসাবি