ক্রাইমবার্তা রিপোর্ট:রাজধানীয়র মানিক মিয়া এভিনিউর সংসদ সদস্য ভবন (ন্যাম ভবন) থেকে সাতক্ষীরা-১ আসনের এমপি মুস্তফা লুৎফুল্লাহর ছেলে অনিক আজিজের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।রোববার সকালে ৫ নম্বর ন্যাম ভবনের ৬০৪ নম্বর কক্ষ থেকে অনিকের লাশ উদ্ধার করা হয়।শেরেবাংলা নগর থানার ওসি গোপাল গণেশ বিশ্বাস (জিজি বিশ্বাস) বিষয়টি সংবাদ মাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।তিনি জানান, অনিকের মরদেহ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।
শেরেবাংলা নগর থানার এসআই শফিকুর জানান, রাতে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের কেবল (তার) গলায় পেঁচিয়ে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে ছিল অনিকের লাশ। এছাড়া তার শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই।
২৭ বছর বয়সী অনীক খুলনার সিটি পলিটেকনিক থেকে ইলেক্ট্রিক্যালে ডিপ্লোমা করে বিদেশে পড়তে যাওয়ার জন্য ঢাকা থেকে আইইএলটিএস করছিলেন। পাশাপাশি পাঠশালায় ফটোগ্রাফির কোর্স করছিলেন তিনি।
শনিবার রাতে ন্যাম ভবনের ওই বাসায় ছিলেন অনীক, তার বোন অদিতি আদৃতা সৃষ্টি এবং তাদের পরিবারের এক ড্রাইভার।
ডভোকেট মুস্তফা লুৎফুল্লাহ বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির পলিট ব্যুরো সদস্য। লুৎফুল্লাহ ও তার স্ত্রী নাসরীন খান লিপি শনিবার ছিলেন সাতক্ষীরায়। রোববার সকালেই তারা ঢাকায় ফেরেন। তবে কি কারণে সে আত্মতহ্যা করেছে না কি কেউ তাকে হত্যা করেছে তা জানাযায়নি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ২৬ বছর।
সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মুস্তফা লুৎফুল্লাহ’র একান্ত সচিব জাহাঙ্গির হোসেন জানান, আজ রোববার ভোর ৬ টার দিকে এমপি লুৎফুল্লাহ ও সে (জাহাঙ্গির ) নিজে সাতক্ষীরা থেকে ঢাকার ন্যাম ফ্লাটে গিয়ে পৌছান। ওই বাসায় এমপি লুৎফুল্লাহ’র ছেলে অনিক আজিজ ও তার মেয়ে সৃষ্টি ছিল।
বাসায় গিয়ে অনিক আজিজকে অনেক ডাকাডাকির পরও সে দরজা খুলছিল না। পরে বিকল্প চাবি দিয়ে ঘরের ভিতর প্রবেশ করে তারা দেখতে পান ইন্টারনেট লাইনের তার ফ্যানের সঙ্গে জড়িয়ে অনিক আজিজ ঝুলে রয়েছে। ততক্ষনে তার মৃত্যু হয়েছে।
পরে স্থানীয় থানা পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌছে অনিকের ঝুলান্ত লাশ উদ্ধার করে। সকাল পৌনে ৯ টার দিকে সুরতহাল রিপোর্ট সম্পন্ন করে ময়না তদন্তের জন্য তার লাশ সহরোওয়ারদি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানাগেছে।
পরিবারের ধারণা, রাতের কোন এক সময় অনিক আত্মহত্যা করেছে। তবে কি কারণে ছেলেটি আত্মহত্যা করেছে তা প্রাথমিক ভাবে জানাযায়নি।
অনিক আজিজ এমপি লুৎফুল্লাহ’র একমাত্র ছেলে। অনিক আজিজ দুই ভাই-বোনের মধ্যে সবার বড়। সে খুলনা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে বিএসসি শেষ করে ঢাকার ড্যাফডিল বিশ্ববিদ্যালয়ে এমএসসি পড়া-লেখা করছিল।
অনিক আজিজের আত্মহত্যার খবর জানার পর এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
জানাগেছে ময়না তদন্ত শেষে অনিক আজিজের মরাদেহ সাতক্ষীরায় নিয়ে আসা হবে।তার এ অকাল মৃত্যুতে সাতক্ষীরার সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। অনিক আজিজ স্বাক্ষর ছাত্রমৈত্রী ও সাতক্ষীরায় গণজাগরণ মঞ্চের অন্যতম নেতা ছিলেন। লাশের ময়না তদন্ত শেষে হেলিক্যাপ্টার যোগে সাতক্ষীরায় আনা হবে। আজ রবিবার বাদ আসর সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে তার নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হবে বলে পারিবারিক সূত্রে জানাগেছে। ২০জানুয়ারী,২০১৮শনিবার:ক্রাইমর্বাতা.কম/প্রতিনিধি/আসাবি