ক্রাইমবার্তা রিপোর্ট:ঢাকা: জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার রায় যেটাই হোক তা বিএনপিকে মেনে নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) একেএম শহিদুল হক। তিনি বলেছেন, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয় এমন কোনো কর্মসূচি তারা দেবে না বলে আমার বিশ্বাস।
শুক্রবার রাজধানীর মিরপুরে শহীদ পুলিশ স্মৃতি কলেজের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ পরামর্শ দেন।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রায় নিয়ে কোনো ধরনের সহিংসতার আশঙ্কা রয়েছে কি না- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে বিদায়ী আইজিপি বলেন, রায় দেবেন আদালত। আদালত কোনো দলের পক্ষে-বিপক্ষে রায় দেন না। এতদিনের পাওয়া প্রাপ্ত তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে রায় দেয়া হবে। সুতরাং রায় যেটাই হোক সেটা সবার মেনে নেয়া উচিত। রায় না মানলে তিনি উচ্চ আদালতে যাবেন, এটারও আইনি প্রক্রিয়া আছে। তাছাড়া, বিএনপি একটি দায়িত্বশীল দল। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয় এমন কোনো কর্মসূচি তারা দেবে না বলে আমার বিশ্বাস।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে বৃহস্পতিবার জাবেদ পাটোয়ারীকে নতুন আইজিপি হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। আগামী ৩১ জানুয়ারি বর্তমান আইজিপি একেএম শহীদুল হক অবসরে গেলে ওইদিন দায়িত্বগ্রহণ করবেন তিনি।
এক প্রশ্নের জবাবে শহিদুল হক বলেন, প্রধানমন্ত্রী আস্থা রেখে আমাকে পুলিশ প্রধান করেছিলেন। আমি প্রধানমন্ত্রীর আস্থার প্রতি পূর্ণ সমর্থন রেখে কাজ করতে সব ধরনের চেষ্টা করেছি। পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও কল্যাণে অনেক কাজ করেছি। এক টেবিলে ৩ বছরে সব করা সম্ভব নয়। তারপরও যা করেছি ব্যক্তিগতভাবে আমি সেটিসফাইড। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় যতটুকু করেছি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি আমি সফল।
বিদায়ী আইজিপি শহীদুল হক বলেন, তার (নতুন আইজিপি) জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ এটা নির্বাচনের বছর। সুষ্ঠু ও সফলভাবে নির্বাচনটা সম্পন্ন করাই হবে বড় চ্যালেঞ্জ। তবে নতুন আইজিপি আমার ব্যাচমেট। তিনি ৩২ বছর চাকরি করেছেন। তার অনেক অভিজ্ঞতা আছে। আমি আশা করবো, আমরা যে গণমুখী পুলিশিং ব্যবস্থাটা চালু করেছি। তিনি সেটা অব্যাহত রাখবেন।
নিজের নানা পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে শহীদুল হক বলেন, আমরা সবসময় বিশ্বাস করেছি পুলিশ জনগণের বন্ধু। ভুক্তভোগীর শেষ আশ্রয়স্থল। জনগণের সঙ্গে সেতুবন্ধন করে আমরা কাজ করেছি। কমিউনিটি পুলিশিংয়ের মাধ্যমে জনবান্ধব জবাবদিহিতামূলক পুলিশিং ব্যবস্থা চালু করেছি। এ প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে বলে আশা করি। কমিউনিটি পুলিশিংয়ের মাধ্যমে জনগণের সঙ্গে পুলিশের সেতুবন্ধন অনেক এগিয়ে গেছে। এ ব্যবস্থাটা অব্যাহত থাকলে ভবিষ্যতে আরও উন্নতি হবে।
পুলিশে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পুলিশের ওপর মাঠপর্যায়ে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের চেষ্টা হয়। যারা রাজনীতি করেন তারা জনকল্যাণেই কাজ করেন। সুতরাং জনকল্যাণে কোনো হস্তক্ষেপ হলে আপত্তি নেই। তবে পুলিশ কারো ব্যক্তিগতভাবে ব্যবহৃত হবে না। কারণ আমরা যা-ই করি আইন মেনে করি। সারাদেশে হাজারও কাজ করে পুলিশ, কতটা কাজে আর হস্তক্ষেপ আসে? সব রাজনৈতিক দলই পুলিশের ওপর হস্তক্ষেপের চেষ্টা করে। কিন্তু আমাদের কাজ আমরা করে যাই।
২৬জানুয়ারী,২০১৮ শুক্রুবার:ক্রাইমর্বাতা.কম/প্রতিনিধি/আসাবি