ক্রাইমবার্তা ডেস্করিপোর্ট:সব দলের অংশগ্রহণে সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন ঢাকায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত রেনচা তিয়ারিঙ্ক।
তিনি বলেছেন, জাতীয় নির্বাচনে আমরা বিরোধী দলের অংশগ্রহণ প্রত্যাশা করছি।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ইইউ বিশ্বব্যাপী গণতন্ত্র, সুশাসন ও মানবাধিকারের ওপর গভীর নজর রাখে। এসব ইস্যুতে যেকোনো উদ্বেগ নিরসনের ওপর আমরা গুরুত্বারোপ করে থাকি।
নির্বাচনী বছরে বাংলাদেশে থাকতে পেরে উত্তেজনাবোধ করছেন উল্লেখ করে রেনচা তিয়ারিঙ্ক বলেন, অনুকূল পরিস্থিতিতে ইইউ’র নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দল পাঠানোর ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের সাথে ইতোমধ্যে আমাদের আলোচনা হয়েছে।
বার্তা সংস্থা ইউএনবিকে দেয়া সাক্ষাতকারে রাষ্ট্রদূত এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশের নির্বাচন পর্যবেক্ষণে ইইউ সবচেয়ে বড় নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দল পাঠিয়ে থাকে। এ দল কয়েকটি ভাগে ভাগ হয়ে দীর্ঘ, মধ্য ও স্বল্প মেয়াদে দেশের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেয়। বিগত তিনটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন পর্যবেক্ষণে ইইউ সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। কিন্তু ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচন পর্যবেক্ষণ থেকে ইইউ বিরত ছিল।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ব্যবসাবান্ধক পরিবেশের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ খুব একটা ভালো অবস্থানে নেই। এ খাতে চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এটি মোকাবেলায় আভ্যন্তরীণ সংস্কার প্রয়োজন।
বিশ্বব্যাংকের ২০১৮ সালের ব্যবসা পরিবেশ প্রতিবেদনে ১৯০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৭৭। আগের বছরের চেয়ে বাংলাদেশ এ ধাপ নিচে নেমে গেছে। ব্যবসার শুরুতেই নানা প্রতিবদ্ধকতা এর অন্যতম কারণ।
রেনচা তিয়ারিঙ্ক বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যহত রাখতে রফতানি পণ্যের বৈচিত্রকরণ ও সরাসরি বিদেশী বিনিয়োগ (এফডিআই) আকর্ষণকে গুরুত্বের সাথে নিতে হবে। এফডিআই আকর্ষণে বিনিয়োগকারীদের আস্থা অর্জন করতে হবে। বিনিয়োগ পরিবেশকে রাখতে হবে অনুকূল।
১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠায় সরকারের পরিকল্পনাকে ‘উচ্চাভিলাষী’ উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বলেন, প্রথম পাঁচটি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করে তা যথাযথভাবে পরিচালনার মাধ্যমে অভিজ্ঞতা অর্জন করা যেতে পারে। এর পর ধারাবাহিকভাবে অগ্রসর হওয়া যায়।
ইউরোপে অবৈধভাবে অবস্থানরত বাংলাদেশীদের ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়ায় ভালো অগ্রগতি হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, গত কয়েক বছরে অবৈধ অভিবাসী ইউরোপের জন্য গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অবৈধদের ফিরিয়ে আনতে ইইউ ও বাংলাদেশের মধ্যে স্ট্যান্ডার্ড অপারেশন প্রসিডিউর (এসওপি) সই হয়েছে। এ প্রক্রিয়ার অগ্রগতি পর্যবেক্ষণে ইইউ’র একটি কারিগরি দল শিগগির ঢাকা আসছে।
বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের মান আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) সাথে সামঞ্জস্য রাখতে ইইউ স্থানীয় বেসরকারি খাত ও শ্রম নেতাদের সাথে কাজ করা অব্যাহত রাখবে বলে রাষ্ট্রদূত মন্তব্য করেন।