ক্রাইমবার্তা ডেস্করিপোর্ট: ঢাকা: আগামী নির্বাচনের আগে বাংলাদেশে আবারও গুমের ঘটনা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। নিরাপত্তা রক্ষাকারীদের হাতে আটক ব্যক্তিরা কোথায় আছেন, তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকারের জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত বলে মনে করে আন্তর্জাতিক মানবাধিকারবিষয়ক সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)।
একই সঙ্গে আটক ব্যক্তিদেরও মুক্তি দেওয়ার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে লেখা এক চিঠিতে এই আশঙ্কার কথা ব্যক্ত করেছে নিউইয়র্কভিত্তিক সংস্থাটি। প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দেওয়ার বিষয়টি বিবৃতিতে আলাদাভাবে জানিয়েছে এইচআরডব্লিউ।
‘বাংলাদেশ : ইনভেস্টিগেট ফেট অব ডিজঅ্যাপেয়ার্ড’ শীর্ষক বিবৃতিতে সংগঠনটি এ আহ্বান জানায়। নিউইয়র্ক থেকে গত শুক্রবার প্রকাশ করা এই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে জোরপূর্বক গুম ও চাপ প্রয়োগের বিষয়টি উদ্বেগের মূল কারণ হয়ে উঠেছে। গত শুক্রবার তারা নিজেদের ওয়েবসাইটে চিঠিটি প্রকাশ করেছে।
গুম বাংলাদেশের জন্য অন্যতম উদ্বেগের বিষয় উল্লেখ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে যেসব ব্যক্তি ‘গুম’ হয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে তাদের সন্ধান ও অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে এইচআরডব্লিউ। একই সঙ্গে গুমের এই প্রবণতা এখনই থামাতে সম্ভাব্য সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
বিবৃতিতে সংস্থাটির এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক ব্র্যাড অ্যাডামস বলেন, গুম এবং গোপনে আটক বাংলাদেশের মানুষের জন্য একটি আতঙ্কের বিষয় হয়ে গেছে। তাদের আশঙ্কা, কোনো সমালোচনা বা রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার কারণে প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুয়ারে করাঘাত হতে পারে।
ব্রাড অ্যাডামস আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার তৃতীয় দফা মেয়াদের শেষ ধাপে উপনীত হচ্ছেন। আক্রান্ত পরিবারগুলোর ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত হস্তক্ষেপ এবং ব্যাপক পরিসরে ছড়িয়ে পড়া এই সমস্যা সুরাহা করতে একটি নিরপেক্ষ কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা করা উচিত।
চিঠিতে আরো বলা হয়, ২০১৭ সালে বাংলাদেশে অন্তত ৮০টি গুমের ঘটনা গণমাধ্যমে এসেছে। এদের মধ্যে পরে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন ৭ জন। আর ১৭ জন এখনো নিখোঁজ। তবে প্রকৃত গুমের ঘটনা আরও বেশি হতে পারে, কারণ অনেক ঘটনা হয়তো গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়নি।
বিশেষ করে ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে এমন গুমের ঘটনা বাড়তে থাকে। তাই আগামী নির্বাচনের আগে বাংলাদেশে আবারও গুমের ঘটনা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)।