ক্রাইমবার্তা ডেস্করিপোর্ট: বিশিষ্ট লেখক ও শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবালের উপর হামলাকারী ফয়জুর রহমানের (২৪) কুমারগাঁওয়ের শেখপাড়ার বাড়িতে তল্লাশি চালেয়েছে র্যাব ও পুলিশ। এসময় বাড়িটি তালাবদ্ধ দেখতে পায় এই দুই বাহিনী।
বাড়িতে কাউকে না পেলেও পার্শ্ববর্তী মামার বাড়ি থেকে মামা ফজলুর রহমানকে আটক করেছে পুলিশ।
আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে জালালাবাদ থানার ওসি শফিকুর রহমান্ বলেন, ফয়জুর রহমানের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তার মামাকে আটক করা হয়েছে।
ওসি বলেন, ফয়জুর সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার কালিয়াপন গ্রামের হাফিজ আতিকুর রহমানের ছেলে। পরিবারের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের পার্শ্ববর্তী কুমারগাঁওয়ের শেখপাড়ার থাকত সে।
ফয়জুর মাদ্রাসায় পড়ালেখা করে মঈন কম্পিউটার নামে একটি দোকানে কাজ করতো বলে জানা গেছে। ফয়জুরের বাবা মাওলানা হাফিজুর রহমান সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের পার্শ্ববর্তী টুকেরবাজারে একটি মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেন।
উল্লেখ্য, শনিবার বিকালে সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবি) ক্যাম্পাসে এক অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থী ও পুলিশের উপস্থিতিতে জাফর ইকবালের উপর হামলা হয়। ছুরি দিয়ে এই লেখক-অধ্যাপকের মাথায় আঘাত করে হামলাকারী।
বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে ওই হামলার পরপর জাফর ইকবালকে সিলেট এমএজি ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে তার ক্ষত স্থান পরিষ্কার করে সেখানে সেলাই দেওয়া হয়েছে। এরপর অধ্যাপক জাফর ইকবালকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে সিলেট থেকে ঢাকা নিয়ে সিএমএইচ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়।
এদিকে হামলার পরপরই উপস্থিত শিক্ষার্থী ও পুলিশ সদস্যরা হামলাকারীকে ধরে ফেলে। এরপর পিটুনি দিয়ে ওই তরুণকে ধরে নেয়া হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে। সেখানে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে এনে হাসপাতালে ভর্তি করে।
————–0———–
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শনিবার অধ্যাপক মুহাম্মদ অধ্যাপক জাফর ইকবালের ওপর হামলাকারীর প্রাাথমিক পরিচয় জানা গেছে। হামলাকারীর নাম ফয়জুর রহমান (২৪) বলে জানা গেছে। তিনি সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার কালিয়াপন গ্রামের হাফিজ আতিকুর রহমানের পুত্র। ফয়জুর রহমানের মামা আওয়ামী লীগ নেতা বলে একটি সূত্র জানিয়েছে।
শনিবার বিকেলে ক্যাম্পাসের মুক্তমঞ্চে জাফর ইকবালকে হামলার পরপরই ওই যুবককে ধরে ফেলা হয় । তাকে বেদম পেটানোর পর বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন-২-এ আটকে রাখা হয়েছিল। রাত ৯টার দিকে র্যাবের একটি টিম হামলাকারীকে উদ্ধার করে ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি করেছে বলে জানা গেছে।
হামলাকারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে সিটিটিসি
অধ্যাপক ড. জাফর ইকবালের উপর হামলাকারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে সিটিটিসি। । কাউন্টার টেররিজম ডিভিশনের উপকমিশনার (ডিসি) মুহিবুল ইসলাম খান শনিবার রাতে এই তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছি। আমাদের সদস্যরা সিলেটে গিয়ে ড. জাফর ইকবালের ওপর হামলাকারী আটক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে।’
জাফর ইকবালের পেছনেই দাঁড়িয়েছিল হামলাকারী যুবক
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছুরিকাঘাতে আহত প্রফেসর ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালকে আগে থেকেই অনুসরণ করছিল সেই যুবক। হামলার আগে ওই যুবক ড. জাফর ইকবালের ঠিক পেছনেই দাঁড়ানো ছিল। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ওই যুবক একেবারে নিশ্চিন্ত মনে দাঁড়ানো ছিল। এসময় কেউ ভাবতেই পারেনি ওই যুবক কিছুক্ষণ পরে ভয়ংকর হয়ে উঠবে। ড. জাফর ইকবাল শাবির মুক্তমঞ্চে ইলেট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ফেস্টিভ্যালে অতিথি ছিলেন। মঞ্চে উঠার ঠিক আগ মুহূর্তে ওই যুবক ভয়ংকর হয়ে উঠে। ছুরি নিয়ে হামলায় চালায় জাফর ইকবালের ওপর। পরে শিক্ষার্থীরা ওই যুবককে গণপিটুনি দেয়।
ছাত্রবেশী সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে
ছাত্রবেশী সন্ত্রাসী ড. জাফর ইকবালের ওপর হামলা চালায় বলে জানিয়েছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্য প্রফেসর ড. ফরিদ উদ্দীন আহমেদ। শনিবার রাতে সিলেটের ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা জানান। ড. ফরিদ উদ্দিন বলেন, পুলিশের প্রহরায় থাকলেও ছাত্রবেশী সন্ত্রাসী হওয়ার কারণে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ফাঁক গলে এ হামলা হয়েছে।
হামলাকারীর পরিচয়
লেখক ও শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের উপর হামলাকারীর নাম ফয়জুর রহমান (২৪) বলে জানা গেছে। তিনি সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার কালিয়াপন গ্রামের হাফিজ আতিকুর রহমানের পুত্র। পরিবারের সাথে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের পার্শ্ববর্তী কুমারগাঁওয়ের শেখপাড়ার থাকতেন ফয়জুর। তিনি মাদ্রাসায় পড়ালেখা করেছেন বলে জানা গেছে। ফয়জুর মঈন কম্পিউটার নামে একটি দোকানে কাজ করতেন বলে জানা গেছে।
ঘটনার পরপরই শেখপাড়ার বাসাটি তালাবদ্ধ করে ফয়জুলের পরিবারের সদস্যরা চলে গেছেন। শনিবার সন্ধ্যায় শেখপাড়ার বাসাটিতে গিয়ে কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাদের বাসাটি তালাবদ্ধ।
এলাকাবাসী জানিয়েছেন, ফয়জুল মাদরাসা শিক্ষার্থী বলে এলাকায় পরিচয় দিতেন। তবে কোন মাদ্রাসায় পড়েন-এ বিষয়ে এলাকার কেউ জানাতে পারেননি। ফয়জুলের বাবা মাওলানা হাফিজুর রহমান সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের পার্শ্ববর্তী টুকেরবাজারে একটি মাদরাসায় শিক্ষকতা করেন।
এলাকাবাসী আরো জানায়, ফয়জুল এলাকার মসজিদকে হানাফি মাযহাবের মসজিদ দাবি করে নিজে ওই মসজিদে নামাজ পড়া থেকে বিরত থাকে।
উল্ল্যেখ্য, শনিবার বিকালে সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এক অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থী ও পুলিশের উপস্থিতিতে জাফর ইকবালের উপর হামলা করে ফয়জুল।
সে আহলে সুৃন্নাতের একজন নেতা। আহলে হাদীদের অনুসারী বলে দাবী করত