সাতক্ষীরা সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জান্নাতুল ফেরদৌসের স্বেচ্ছাচারিতার প্রতিবাদে এক মুক্তিযোদ্ধার সংবাদ সম্মেলন

স্টাফ রিপোর্টার \ সাতক্ষীরায় সড়ক দুর্ঘটনায় আহত একজন মুক্তিযোদ্ধা সন্তানের বদলীর জন্য মন্ত্রী ও এমপিদের সুপারিশের তোয়াক্কা না করায় সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (টিইও)জান্নাতুল ফেরদৌসের স্বেচ্ছাচারিতার প্রতিবাদ জানিয়েছেন একজন মুক্তিযোদা। রবিবার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এই প্রতিবাদ জানান, শহরের কাটিয়া মধ্যপাড়া এলাকার মৃত হাজূ আদিল উদ্দিনের ছেলে মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আব্দুল হাই। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমার ছেলে শাল্যে প্রাইমারী স্কুলের সহকারি শিক্ষক মোঃ সালাহ উদ্দিন আল হানিফ ২০১৬ সালের ২৮ জুলাই বাইসাইকেলে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় মারাত্মকভাবে আহত হয়। তার বাম পায়ের হাটুর হাড় ভেঙ্গে যাওয়ায় খুলনার আকিজ হাসপাতালে তার অপারেশন করা হয়। দু’বছর পর ফের অপারেশনের মাধ্যমে তার হাটুতে লাগানো নাট ও বোল্ট বের করাতে হবে এবং এই সময় পর্যন্ত চিকিৎস্যক তাকে খুব সবধানে চলাচল করতে পরামর্শ দেন। ফলে অপারেশন করা হাটু নিয়ে বাড়ি থেকে ৮/১০ কিলোমিটার দূরে শাল্যে স্কুলে ক্লাস নেয়া তার পক্ষে খুবই কষ্ট সাধ্য হয়ে পড়ে। ফলে আমি তার মায়ের সাথে শাল্যে প্রাইমারী স্কুল হতে কাটিয়া নবনুর সরকারি প্রাইমারী স্কুলে পারস্পরিক বদলীর জন্য প্রাথমকি ও গণশিক্ষা মন্ত্রী বরাবর আবদেন করি। আমি ওই আবেদনে সাতক্ষীরা-২ ও সাতক্ষীরা-৩ আসনের এমপি, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান পৌর মেয়ার, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ও স্কুল পরিচালনা পরিষদের সুপারিশ গ্রহণ করি। একই সাথে স্থানীয় মহিলা এমপি একটি ডিও লেটার মন্ত্রী বরাবর প্রেরণ করেন। পরে এসব কাগজপত্রের ফটোকপি সাতক্ষীরা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শেখ অহিদুল আলমকে দেখালে তিনি ২০১৭ সালের ২৩ মার্চ মহপরিচালক বরাবর আমার ছেলের বদলীর জন্য একটি আবেদন প্রেরণ করেন। যা ২৮ মার্চ আমি হাতে হাতে মহা পরিচালকের কাছে দিলে তিনি চলতি বছরের জানুয়ারী থেকে মার্চের মধ্যে ফের আবেদন করতে বলেন। সে অনুযায়ী গত ৪ জানুয়ারী আমার আবেদনের প্রেক্ষিতে মহিলা এমপি রিফাত আমিন প্রাথমকি ও গণশিক্ষা মন্ত্রী বরাবর একটি ডিও লেটার প্রেরণ করেন। উক্ত ডিও লেটার নিয়ে ২৩ জানুয়ারী মন্ত্রীর সাথে দেখা করলে তিনি বদলীর জন্য সাতক্ষীরা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে ব্যবস্থা নিতে বলেন। তিনি উক্ত আবেদনে সদর থানার অর্ন্তগত ৩৪ নং শাল্যে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হতে ৯ নং কাটিয়া নবনুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তার মায়ের অবসর জনিত শূন্য পদে মানবিক কারণে বদলী কথাটি বিশেষ ভাবে মার্ক করে দেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে তিনি দ্রুত বদলীর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ২৯ জানুয়ারী সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তর কাছে প্রেরণ করেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জান্নাতুল ফেরদৌস ২৮ ফেব্র“য়ারী ৩৮–৪৩৪ নং স্মারকের একটি পত্রে ৪মার্চ মোট ১৭ জনের বদলীর আদেশ দেন এবং আমার অসুস্থ্য ছেলের আবেদনকৃত নবনুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১ নং ক্রমিকে সাবিত্রী বালা হালদার, শশীকে বদলী করেন। অথচ ওই সাবিত্রী বালা হালদার, শশীর পূর্বের কর্মস্থল ছিল উত্তর কাটিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়। যা তার বাড়ি থেকে মাত্র ১০/১৫ মিনিটের পথ। বর্তমানে তাকে দেয়া হয়েছে তার বাড়ির একেবারে পাশে। যেখানে যেতে সময় লাগবে মাত্র দেড় থেকে ২ মিনিট। পরবর্তীতে বিষয়টি রিফাত আমিন এমপির মাধ্যমে ডিপিইও’কে অবহিত করা হলে তিনি সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জান্নাতুল ফেরদৌসকে জানান। পরবর্তীতে তিনি আমাকে ও আমার ছেলে সহকারি শিক্ষক মোঃ সালাহ উদ্দিন আল হানিফ এবং শ্যাল্যে প্রাইমারী স্কুলের প্রধান শিক্ষককে তার অফিসে ডেকে পাঠান। গত ১২ মার্চ বেলা ১১ টায় আমরা তার কার্যালয়ে হাজির হলে তিনি আমাদের বলেন নীতিমালার বাইরে আমি কাউকে বদলী করতে পারবেন না। তথাপিও আপনার ছেলেকে উত্তর কাটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলী করে দিতে পারি। কিন্তু অসুস্থ্য ছেলের কথা বিবেচনা করে আমি নবনুর স্কুলে দেয়ার কথা বললে তিনি তা অস্বীকার করেন। তিনি এব্যপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলে জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট কমান্ডের ডেপুটি কমান্ডার আবু বাক্কার ছিদ্দিক, মুক্তিযোদ্ধা সদর উপজেলা কমান্ডার হাসানুজ্জামান ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সাধারন সম্পাদক লায়লা পারভীন সেজুতি প্রমূখ।

Please follow and like us:

Check Also

২৮শে এপ্রিল খুলছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শনিবারেও ক্লাসের পরিকল্পনা

আগামী ২৮শে এপ্রিল থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার জন্য সব রকমের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।