কালবৈশাখী ও শিলাবৃষ্টিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘরবাড়ি ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বজ্রাঘাত, শিলা ও বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে বিভিন্ন জায়গায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৮ জন। এর মধ্যে দিনাজপুরের পার্বতীপুরে শিলার আঘাতে সৈয়দ আলী (৫৫) ও মাগুরা সদর উপজেলায় আকরাম হোসেন (৩৫) নামে দুই কৃষক, পাবনার ঈশ্বরদীতে জমেলা খাতুন (৫৫), সিলেটের ওসমানীনগরে সাবিয়া বেগম (৩০) এবং হাসান আহমদ নামে দেড় বছরের এক শিশু এবং যশোরের অভয়নগরে লাইজু খাতুন (১৯) নামে এক কলেজছাত্রী মারা গেছেন। এ ছাড়া রংপুরের তারাগঞ্জে নয়া মিয়া (২৫) ও বদরগঞ্জে শামীম মিয়া বজ্রপ্রাতে মারা যান। কোনো কোনো স্থানে শিলাবৃষ্টি এতটাই ভয়াবহ ছিল যে, অনেক ঘরের চাল ফুটো হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্তরা বলছেন, এত বড় শিলা তারা কখনও দেখেননি। বিভিন্ন স্থানে আহত হয়েছেন আরও শতাধিক মানুষ। এর মধ্যে সিলেট দক্ষিণ সুরমা উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মোসাদ্দেক আলী মুসা রয়েছেন। তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। সিলেট নগরী ও সুনামগঞ্জে ব্যাহত হয়েছে বিদ্যুৎ পরিসেবা। ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে রাস্তায় ও রেললাইনে গাছ ভেঙে পড়ে অনেকক্ষণ বন্ধ ছিল সড়ক ও রেল যোগাযোগ।
গতকাল বিকেল থেকেই দেশের উত্তরাঞ্চলে কালবৈশাখীর সঙ্গে শিলাবৃষ্টি শুরু হয়। সন্ধ্যায় রাজধানী ঢাকায় দমকা হাওয়ার সঙ্গে ধূলিঝড়ে দুর্ভোগে পড়েন পথচারীরা। বৃষ্টির সঙ্গে ঝড়ো হাওয়ায় গাছের ডালপালা ভেঙে পড়ে রাস্তায়। হঠাৎ হাওয়ায় ফুটপাতের অনেক দোকানের পলিথিন উড়ে যায়। এ সময় যান চলাচলেও বিঘ্ন ঘটে। পথচারীরা দোকানের ছাউনি, অফিস বা রাস্তার পাশের বিল্ডিংয়ে আশ্রয় নেন। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আজ শনিবার সকাল পর্যন্ত সারাদেশে বজ্রসহ আরও শিলাবৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। আবহাওয়াবিদ মঞ্জুর হোসেন বলেন, এটা কালবৈশাখীর মৌসুম। এখন ঘন ঘন এ ঝড় হানা দিতে পারে। কালবৈশাখীর কারণে নদীবন্দরগুলোতে সব নৌযানকে সাবধানে চলাচলের সতর্কতা দেওয়া হয়েছে।
গতকালের কালবৈশাখীতে বিমান চলাচল, যোগাযোগ ব্যবস্থা ও বিদ্যুৎ সরবরাহেও বেশ বিঘ্ন ঘটে। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিকেল সোয়া ৪টা থেকে তিন ঘণ্টার জন্য সতর্কতা জারি করা হয়। এ সময় অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক সব ফ্লাইট ওঠানামা বন্ধ রাখা হয়। এ ছাড়া, বন্ধ রাখা হয় দেশের অন্যান্য বিমানবন্দর থেকেও ঢাকাগামী ফ্লাইটগুলো। শাহজালাল বিমানবন্দরের পরিচালক কাজী ইকবাল করিম জানান, কক্সবাজার থেকে রিজেন্ট এয়ারের একটি ফ্লাইট ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে এলেও ঝড়ো হাওয়ার কারণে চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দরে অবতরণ করে। এ ছাড়া ইউএস-বাংলার একটি ফ্লাইটও দেরিতে ঢাকা থেকে রাজশাহীতে অবতরণ করে।
ব্যুরো, অফিস, প্রতিনিধি ও সংবাদদাতাদের পাঠানো খবর।
সিলেট : সিলেটের ওসমানীনগরে কালবৈশাখীর কবলে পড়ে এক নারী ও শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ওসমানীনগর থানার ওসি মোহাম্মদ সহিদ উল্যা জানান, গতকাল ঝড়ের সময় তাজপুর ইউনিয়নের দশহাল গ্রামে আত্মীয় বাড়িতে বেড়াতে আসা সাবিয়া বেগমের ওপর উড়ে আসা টিনের চাল পড়লে তার মৃত্যু হয়। সাবিয়া পার্শ্ববর্তী বালাগঞ্জ উপজেলার বোয়ালজুড় ইউনিয়নের সোনাপুর গ্রামের খালিছ মিয়ার স্ত্রী। এ ছাড়া ঝড়ের কবলে পড়ে উমরপুর ইউনিয়নের সিকন্দরপুর রংবরং গ্রামের সুমন মিয়ার দেড় বছরের সন্তান হাসান আহমদ পুকুরের জলে ডুবে মারা যায়। এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে কালবৈশাখীতে নগরীতে অসংখ্য গাছপালা, বিলবোর্ড ভেঙে পড়ে। সঞ্চালন লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ৯টা থেকে গতকাল সকাল পর্যন্ত প্রায় ১২ ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন ছিল পুরো নগরী। অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ পুনঃস্থাপিত হলেও লো-ভোল্টেজ ছিল বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ঝড়ের সময় বেশ কয়েকজন আহত হন। এর মধ্যে নগরীর কাজীবাজার ব্রিজে চটপটির ভ্যান উড়ে এসে যুবলীগ নেতা মোসাদ্দেক হোসেন মুসার মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দিলে তিনি গুরুতর আহত হন। গতকাল দুপুরে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে ঢাকায় নেওয়া হয়েছে। সিলেট বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী রতন কুমার বিশ্বাস জানান, নগরীর সুবিদবাজার এলাকায় ১১ কেভি সঞ্চালন লাইনের ওপর টিনের চালা পড়ে তা ছিঁড়ে যায়। এ ছাড়া কুমারগাঁওয়ে দুটি বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এগুলো মেরামতের পর গতকাল সকাল থেকে নগরীতে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হয়ে আসে।
রংপুর :গতকাল ঝড়ের সময় তারাগঞ্জ ও বদরগঞ্জে বজ্রপাতে শামীম মিয়া ও নয়া মিয়া নামে দুই ক্ষেতমজুর মারা যান। এদিন রংপুর নগরী ছাড়াও গঙ্গাচড়া, পীরগঞ্জ, মিঠাপুকুর, তারাগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আঘাত হানে। বিশেষ করে ঝড়ের সঙ্গে শিলাবৃষ্টিতে বোরো, ভুট্টাসহ ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। জেলা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১-এর সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার নুরুর রহমান জানান, ঝড়ে কিছু জায়গায় বিদ্যুতের খুঁটি ও তার ছিঁড়ে যাওয়ায় পরিসেবা ব্যাহত হয়েছে।
দিনাজপুর :গতকাল দুপুরে ঝড় ও শিলাবৃষ্টির আঘাতে পার্বতীপুর উপজেলায় হাজার হাজার ঘরবাড়ি, শিক্ষা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি হয়েছে। আহত হয়েছেন শতাধিক মানুষ। দুপুরে চণ্ডিপুর ইউনিয়নের চৈতাপাড়া গ্রামে ক্ষেতে কাজ করার সময় শিলার আঘাতে মারা যান কৃষক সৈয়দ আলী। কৃষকরা জানান, ঝড়ে বোরো ধানের ক্ষতি না হলেও সবজির ক্ষতি হয়েছে। মারা গেছে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি।
পাবনা :ঈশ্বরদীতে শিলার আঘাতে জমেলা খাতুন নামের এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল সন্ধ্যার দিকে উপজেলার লক্ষ্মীকুণ্ডা ইউনিয়নের কামালপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। জমিলা কামালপুর গ্রামের মৃত দেলবার হোসেনের স্ত্রী। এ ছাড়া সুজানগর ও চাটমোহর উপজেলায় ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আহত হয়েছেন শতাধিক নারী-পুরুষ।
যশোর : অভয়নগর উপজেলার প্রেমবাগ গ্রামে গতকাল কালবৈশাখীতে বিদ্যুতের ছিঁড়ে পড়া তারে জড়িয়ে লাইজু খাতুন নামে এক কলেজছাত্রী মারা গেছেন। এ সময় নওয়াপাড়া গ্রামের ফাতেমা বেগম ও প্রেমবাগ গ্রামের কলেজছাত্রী ঐশী খাতুন আহত হয়েছেন। লাইজু খাতুন যশোর আদর্শ ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী।
মাগুরা :মাগুরায় ঝড় ও শিলাবৃষ্টির কবলে পড়ে আকরাম হোসেন নামে এক কৃষকের মৃত্যু এবং অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। এ ছাড়া ঝড়ো বাতাসে গাছপালা ও অন্তত ৩০টি কাঁচা ঘরবাড়ি ভেঙে পড়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে হঠাৎ ঝড়ো বাতাসের সঙ্গে বড় বড় আকারে শিলাবৃষ্টি শুরু হয়। এ সময় সদর উপজেলার ডহরসিংড়া গ্রামের আকরাম হোসেন স্থানীয় বিলের ক্ষেতে কাজ করা অবস্থায় বড় আকারের শিলার আঘাতে গুরুতর আহত হন। পরে এলাকাবাসী খবর পেয়ে তাকে উদ্ধারের পর হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
সুনামগঞ্জ :গতকাল ঝড়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে বিশ্বম্ভ্ভরপুর এলাকায়। সুনামগঞ্জ-ছাতকের ৩৩ কেভি বিদ্যুৎ লাইনে গাছ উপড়ে পড়ায় অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ আছে। এ ছাড়া বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার বাদাঘাট দক্ষিণ ইউনিয়নের বাঘমারা, ভাটিপাড়া ও দুর্গাপুর গ্রামের বেশ কিছু ঘরবাড়ি ও হাওরের বোরো ধানেরও ক্ষতি হয়েছে।
রাজশাহী :জেলা আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক আবদুস সালাম জানান, গতকাল বিকেলে কালবৈশাখী আঘাত হানে। এ সময় বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয় এক মিলিমিটার। এরপর আবহাওয়া স্বাভাবিক হয়ে আসে।
ময়মনসিংহ :বৃহস্পতিবার রাতে বয়ে যাওয়া ঝড়ে ঈশ্বরগঞ্জ ও গৌরীপুরের বিভিন্ন গ্রামে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সাত শতাধিক ঘরবাড়ি ও গাছপালা। ওইদিন রাত ৮টার দিকে সোহাগী ও আঠারবাড়ির মাঝামাঝি এলাকায় একটি গাছ উপড়ে রেললাইনে পড়ায় ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে দমকল কর্মীরা গাছ সরানোর পর ট্রেন চলাচল শুরু হয়। আঠারবাড়ি-ঈশ্বরগঞ্জ সড়কে অর্ধশতাধিক গাছ উপড়ে পড়ায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। গতকাল বিকেলে আবার যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। এ ছাড়া সড়কটির বেশ কয়েকটি স্থানে খুঁটি উপড়ে পড়ায় এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।
মুক্তাগাছা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ঝড় ও শিলাবৃষ্টি হয়েছে। এতে বোরো ফসলের কিছুটা ক্ষতি হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ :গতকাল ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পৌরসভার উত্তর ষোলপাড়া গ্রামের কৃষক আশেক আলী জানান, শিলাবৃষ্টির কারণে আম ও লিচুর মুকুল ঝরে গেছে।
মুন্সীগঞ্জ :ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ছয়টি উপজেলায় আলু, ধান এবং বিভিন্ন সবজির ক্ষতি হয়েছে। উড়ে গেছে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, দোকানপাট ও ঘরবাড়ির টিনের চালা। ভেঙে গেছে শত শত গাছপালা। বিভিন্ন এলাকায় গতকাল রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল।
লালমনিরহাট :গতকাল সকালে দুই উপজেলায় শিলাবৃষ্টিতে ফসল, ঘরবাড়ি ও গাছপালার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ তাৎক্ষণিকভাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানাতে পারেনি।
নাটোর :বজ্রপাতে নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলা যোগেন্দ্রনগর গ্রামের ছয়জনসহ বিভিন্ন এলাকার ৯ জন আহত হয়েছেন। শুক্রবার বিকেল ৪টায় হঠাৎ ঝড়ো হাওয়াসহ শিলাবৃষ্টি শুরু হয়। এ সময় শ্রমিকরা মাঠে কাজ করছিলেন। মাঠ থেকে রসুন নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে যোগেন্দ্রনগর রাবার ড্যাম এলাকায় বজ্রপাতে ছয় শ্রমিক আহত হন। অন্যদিকে পৃথকভাবে তিন গৃহবধূ আহত হন। তাদের একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
ঠাকুরগাঁও :গতকাল সকালে ঝড় ও শিলাবৃষ্টি আঘাত হানে। এতে আম ও লিচুর মুকুল এবং ভুট্টার পাতা ব্যাপকভাবে ঝরে পড়েছে।
কুড়িগ্রাম :গতকাল সকালে দুই দফা শিলাবৃষ্টিতে বাড়িঘর ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। নানা স্থানে খুঁটি হেলে পড়ে এবং তার ছিঁড়ে যাওয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।
গাইবান্ধা :গতকাল দুপুরে ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ঘরবাড়িসহ ইরি-বোরো, পাট, ভুট্টা, আমের গুটি, মরিচ, বেগুন, শাকসবজিসহ বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পদুমশহর ইউনিয়নের সংরক্ষিত আসনের সদস্য আফরুজা বেগম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
রাজবাড়ী :কালবৈশাখীর আঘাতে দৌলতদিয়া ৫নং ফেরিঘাট পন্টুনের পকেট ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ঘাটটি বন্ধ রাখা হয়। ঝড়ের সময় নৌরুটে প্রায় এক ঘণ্টা ফেরি চলাচল বন্ধ ছিল। এতে ঘাট এলাকায় যানবাহনের সারি দীর্ঘ হয়।
ঝড়ের কারণে লণ্ডভণ্ড প্রধানমন্ত্রীর জনসভাস্থল
চাঁদপুর প্রতিনিধি
চাঁদপুরে আকস্মিক ঝড়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভাস্থল ও নির্মিয়মাণ মঞ্চের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সেই সাথে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে নেতাকর্মীদের সাঁটানো হাজারো বিলবোর্ড, ব্যানার, ফেস্টুন ছিঁড়ে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে।
শুক্রবার বিকেল পৌনে ৬টার দিকে ধেয়ে আসা ঝড়ে শহরের চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়ক, বাসস্ট্যান্ড, কালীবাড়ি, চিত্রলেখা, পুরাণবাজারসহ বিভিন্ন সড়কে নির্মিত তোরণগুলো উপড়ে পড়েছে।
এদিকে চাঁদপুরের হাইমচরের মেঘনা নদীরপাড়ের চরভাঙ্গা এলাকায় স্কাউটসের কমডেকা সমাবেশস্থলও ঝড়ের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কমডেকা সমাবেশ ও চাঁদপুর স্টেডিয়ামে আওয়ামী লীগের জনসভায় ১ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করার কথা রয়েছে।
হাইমচরে অবস্থান করা চাঁদপুর জেলা তথ্য অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) বেলায়েত হোসেন জানান, ঝড়ের কারণে হাইমচরের পথে পথে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে টানানো নেতাকর্মীদের ব্যানার-ফেস্টুনগুলো পড়ে আছে। কমডেকা সমাবেশস্থলের প্যান্ডেলের কাপড়গুলোর কিছু ছিঁড়ে গেছে। চরভাঙ্গা এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে নির্মিয়মাণ তোরণগুলো কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
স্কাউটসের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা মশিউর রহমান বলেন, ঝড় হয়েছে, তবে বৃষ্টি নামেনি। এতে করে প্যান্ডেলের কিছুটা ক্ষতি হলেও তাঁবুতে কোন সমস্যা হয়নি।
চাঁদপুর স্টেডিয়ামে অবস্থানরত প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রধানমন্ত্রীর জনসভা সফল করতে গত কয়েকদিন ধরে এখানে ব্যাপক প্রস্তুতি চলছিল। কিন্তু শুক্রবার বিকেলে আকস্মিক এই ঝড়ে জনসভার নির্মিয়মাণ মঞ্চের চারদিকের কাপড়গুলো ছিঁড়ে গেছে। এছাড়া স্টেডিয়ামের চতুর্দিকে লাগানো সুসজ্জিত বিলবোর্ডগুলো উপড়ে গেছে। স্টেডিয়ামের সামনের রাস্তায় যে বিলবোর্ড, ব্যানার, ফেস্টুনগুলো তার অধিকাংশই তছনছ হয়ে গেছে।
জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. জহিরুল ইসলাম বলেন, ঝড়ে প্যান্ডেলসহ স্টেডিয়ামের বাইরে-ভেতরে কিছু ক্ষতি হয়েছে। যার রিকভারি করার চেষ্টা আমরা করছি। কেন্দ্রীয় নেতারাসহ আমরা জেলা পর্যায়ের প্রায় অধিকাংশ নেতৃবৃন্দই স্টেডিয়ামে আছি।
জেলা প্রশাসক মো. মাজেদুর রহমান খান বলেন, হাইমচরে ঝড়ে কমডেকা সমাবেশস্থল এবং চাঁদপুর স্টেডিয়ামে জনসভাস্থলে যে ক্ষতি হয়েছে তা খুব বেশি নয়। এটি রিকভারি করা যাবে।
তিনি জানান, কমডেকার তাঁবুতে অবস্থানরত কিছু শিশুকে সরিয়ে নিরাপদ স্থানে রাখা হয়েছে।
https://youtu.be/-i9F_Mbpnos