টাঙ্গাইলে পুলিশি বাঁধায় শহরে বিক্ষোভ মিছিল করতে পারেনি যুবদল
হাফিজুর রহমান. টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধি ॥
বিএনপি’র চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবিতে যুবদল টাঙ্গাইলে বিক্ষোভ মিছিল করতে চাইলে পুলিশি বাধায় করতে পারেনি। পরে শহরের ভিক্টোরিয়া রোডে দলীয় কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে তারা।
জানা যায়, কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসেবে শনিবার শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ড ও উপজেলা যুবদলের নেতাকর্মীরা মিছিলযোগে দলীয় কার্যালয়ের সামনে এসে সমবেত হয়। সেখান থেকে জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আশরাফ পাহেলীর নেতৃত্বে মূল মিছিল বের হলে পুলিশ বাঁধা প্রদান করে। এসময় পুলিশের সাথে তাদের ধস্তাধস্তি হয়। পুলিশ মিছিল না করতে দিলেও দলীয় কার্যালয়ের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে যুবদল নেতাকর্মীরা।
এতে বক্তব্য রাখেন, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আশরাফ পাহেলী, জেলা বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুর রহমান খান, যুগ্ম সম্পাদক খ. রাশেদুল আলম, যুবদল নেতা টিটন প্রমুখ।
তারা বলেন, ভোট হীন অবৈধ সরকার তাদের ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে নানা ষড়যন্ত্র করছে। খালেদা জিয়াকে জেলে রেখে হত্যার মাধ্যমে বিএনপিকে ধ্বংসের পায়তারা করছে। সারাদেশে বিএনপি’র নেতাকর্মীদের গুম, খুন করা হচ্ছে। আগামীতে অবৈধ সরকারকে উৎখাত করতে যুবদল নেতাকর্মীরা সোচ্চার থেকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে বলেও হুশিয়ারি দেন নেতারা।
টাঙ্গাইলে ধান কাটার শুরুতেই শ্রমিক সংকট, বিপাকে চাষীরা
হাফিজুর রহমান. টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধি ॥
টাঙ্গাইলের বিভিন্ন উপজেলায় মাঠে-মাঠে এখন পাকা ধান। শ্রমিক সংকটে সময়মতো ধান কাটাতে পারছে না অনেক কৃষক। ৬-৭’শ টাকায়ও মিলছে না একজন শ্রমিক। শ্রমিক মিললেও জনপ্রতি মজুরি দিতে হচ্ছে ৬৭০ থেকে ৭০০ টাকা। সঙ্গে দুই বেলা খাবার। এতে গৃহস্থের শুধু ধান কাটতেই প্রতি মণ ধানের খরচ পড়ছে ৮০০ টাকা। অন্যান্য খরচ যেমন জমি চাষ, সেচ, চারা, সার, কীটনাশক, শ্রমিক আছেই। চলতি বোরো মৌসুমে ঝড়, শিলাবৃষ্টি, পোকা-মাকড়, রোগ-বালাই নিয়ে কৃষকরা ছিল মহাবিপাকে। টাঙ্গাইলের বিভিন্ন উপজেলার বাজারে প্রতি মণ ধান বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা।
সরেজমিনে জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, এ বছর শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধি থাকায় অনেক স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা ধান কাটার কাজ নেমে পড়েছে। প্রতিটি এলাকায় কম-বেশি বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে। ধনবাড়ী উপজেলার পাইস্কা ইউনিয়নের কয়ড়া গ্রামের কৃষক মো. সবুর উদ্দিন জানান, আমি এবার ১০ বিঘা জমিতে বোরো ধান আবাদ করেছি। শ্রমিক মূল্য বেশি হওয়ায় ধানের উৎপাদন খরচ অনেক বেশি। এ কারণে ধান চাষ করে আমাকে লোকসান গুনতে হচ্ছে। মধুপুর উপজেলার ফুলবাগচালা ইউনিয়নের ধানচাষী কালাম জানায়, ফলন ভাল হলেও শ্রমিক সংকটের কারণে সঠিক সময়ে ধান কাটতে পারছি না। দ্বিগুণ মজুরি দিয়ে ধান কাটার ফলে এ বছর লোকসান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ঘাটাইল উপজেলার দেউলাবাড়ী ইউনিয়নের চৈতঠ গ্রামের কৃষক আব্দুছ ছালাম জানায়, তিনি এ বছর ৫ বিঘা জমিতে বোরো আবাদ করেছিলেন। একটি জমিতে ব্লাস্টের আক্রমণ হলেও অন্য সব জমিতেই ভাল ফলন হয়েছে। শ্রমিক মজুরি দিতে গিয়ে আমি দিশেহারা হয়ে পড়েছি।
টাঙ্গাইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আব্দুর রাজ্জাক জানান, চলতি বোরো মৌসুমে জেলায় চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১ লক্ষ ৬৬ হাজার ৯৮ হেক্টর কিন্তু বোরো চাষ হয়েছে ১ লক্ষ ৭০ হাজার হেক্টর জমিতে। হেক্টর প্রতি গড়ে সাত থেকে আট মেট্রিক টন করে ফলন পাওয়া যাচ্ছে। গত বছর এ লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১ লক্ষ ৬৩ হাজার হেক্টর। বোরো চাষ হয়েছিল ১ লক্ষ ৬৬ হাজার ৩৬২ হেক্টর জমিতে। এ বছর ধানের দাম বৃদ্ধির কারণে কৃষকরা ধান চাষের প্রতি বেশি আগ্রহী হয়েছে। ব্লাস্ট নামক ছত্রাকের আক্রমণে কোনো কোনো স্থানে ধানের ফলন কম হলেও জেলার সার্বিক ফলন ভাল হয়েছে বলে তিনি জানান।
টাঙ্গাইলে সেতু আছে সড়ক নাই
হাফিজুর রহমান. টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধি ॥
টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলা মামুদনগর পোষ্টকামারী রাস্তার ফরিদ সিকদারের বাড়ির নিকট ২০ ফুট সেতুটি কোন উপকারে আসছে না জনসাধারণের। সেতুর দু পাশে মাটি না থাকায় শুকনো কিংবা বর্ষা মৌসুমে এই সেতুর কোন সুফল ভোগ করতে পারছে না এলাকার জনগন। ফলে চার গ্রামের জনসাধারনের গলার কাটা হয়ে দাড়িয়েছে এ সেতুটি।
জানা যায়, উপজেলার মামুদনগর পোষ্টকামারী রাস্তার ফরিদ সিকদারের বাড়ির নিকট ২০ ফুট দীর্ঘ সেতুটি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে ১৫ লাখ ৯১ হাজার ৭৬৯.২৮ টাকা ব্যয়ে নির্মান করে মেসার্স এমডি জিল্লুর রহমান নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সেতুটি ২০১৬ সালের ২৫ জুন সম্পন্ন করে সংযোগ সড়ক না করেই সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার চুড়ান্ত বিলসহ জামানত তুলে নেন বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন। এতে অবর্ণনীয় দূর্ভোগে পরে জনসাধারন। স্থানীয় জমির উদ্দিন ও সোলায়মান সিকদার বলেন, এ এলাকার সাধারন জনগনের উপজেলা শহরের সাথে যোগাযোগের একমাত্র সড়ক এটি। এছাড়া প্রতিদিন এ সড়ক ধরে শত শত ছাত্র-ছাত্রী বিভিন্ন স্কুল কলেজে যাতয়াত করে। শুকনো মৌসুসে বিকল্প রাস্তায় চলাচল করা গেলেও বর্ষা মৌসুমে ভোগান্তি হয় দ্বিগুন। এলাকাটি কৃষি নির্ভর হওয়ায় এখানে প্রচুর সবজি উৎপাদন হয়। ব্যবসায়ীদের সবজি মৌসুমে বাজারজাত করতে যেমন অসুবিধা হয় তেমনি কৃষি মালামাল বহনেও গুনতে হয় দ্বিগুন ভাড়া।
এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, পোষ্টকামারী রাস্তার ফরিদ সিকদারের বাড়ির নিকট ২০ ফুট ব্রীজটি এলাকার জনগনের জন্য একটি বিষঁফোড়ার মত। যে ব্রীজটি এলাকার জনগনের কোন কাজেই আসে না। এ নিয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার তাগিদ দেয়া হয়েছে। নতুন বরাদ্দ পেলে ব্রীজের দুপাশের মাটি ভরাটের ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা বেগম শাহীন জানান, এ প্রকল্পটি আমার পূর্ববর্তী কর্মকর্তার সময়ে হয়েছে। সংযোগ সড়কে মাটি ভরাটের বিষয়ে ইতোমধ্যে অবগত হয়েছি। যত দ্রুত সম্ভব ব্রীজের দুপাশে মাটি ভরাটের জন্য বরাদ্দ দেয়া হবে।
এ ব্যাপারে ঠিকাদার আব্দুল খালেক জানান, সেতুটি নির্মানের পর দু পাশের সংযোগ সড়কে মাটি ভরাট করা হয়েছিল। বর্ষার পানিতে মাটি ধুয়ে গেছে বলেও তিনি দাবি করেন। ইউপি চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন জানান, পোস্টকামারী রাস্তার ফরিদ সিকদারের বাড়ির কাছে ২০ ফুট সেতুটি এলাকার জনগণের জন্য একটি বিষঁফোড়ার মত। যে সেতুটি এলাকার জনগণের কোনো কাজেই আসে না। এ নিয়ে কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার তাগিদ দেয়া হয়েছে। নতুন বরাদ্দ পেলে সেতুর দু’পাশের মাটি ভরাটের ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা বেগম শাহীন জানান, প্রকল্পটি পূর্ববর্তী কর্মকর্তার সময়ে হয়েছে। সংযোগ সড়কে মাটি ভরাটের বিষয়ে ইতোমধ্যে অবগত হয়েছি। যত দ্রুত সম্ভব সেতুর দু’পাশে মাটি ভরাটের জন্য বরাদ্দ দেয়া হবে।
টাঙ্গাইলের দেলদুয়ারে ট্রাক চাপায় সাইকেল আরোহীর মৃত্যু
হাফিজুর রহমান. টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধি ॥
টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার পুটিয়াজানী বাজার নামক স্থানে ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে এক সাইকেল আরোহীর মৃত্যু হয়েছে। শনিবার বেলা ১১টার দিকে এ ঘটনাটি ঘটে। নিহত সাইকেল আরোহী হাসেন (৬০) টাঙ্গাইল সদর উপজেলার ধরের বাড়ী গ্রামের বাসিন্দা বলেও নিশ্চিত করেছেন দেলদুয়ার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহিরুল ইসলাম।
তিনি জানান, টাঙ্গাইল সদর উপজেলার ধরের বাড়ী গ্রামের বাসিন্দা ও নিহত সাইকেল আরোহী হাসেন (৬০)দিনমজুরের কাজ করতেন ও তার পরিচয় সনাক্ত করেছেন একই নিহতের সহকর্মী মজিবুর রহমান। এ সনাক্তকারী সংবাদের ভিত্তিতে নিহতের ছেলে ঘটনাস্থলে এসে মরদেহ পরিবারের কাছে নিয়ে গেছে। তবে এ ঘটনায় জড়িত ঘাতক ট্রাক চালক পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও ট্রাকটি আটক করেছে পুলিশ।
টাঙ্গাইলে পরকীয়ার জেরে মাজেদুল নামে এক তাঁত শ্রমিক খুন
হাফিজুর রহমান. টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধি ॥
টাঙ্গাইলে পরকীয়ার জের ধরে মাজেদুল(৩৫) নামে এক যুবককে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে। শনিবার (২৮ এপ্রিল) ভোরে শহরের রাবনা বাইপাসের মায়া হোটেলের পেছনে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর ওই এলাকার সিদ্দিক হোসেন এবং সাজ্জাত হোসেন নামে দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ। নিহত মাজেদুলের বাড়ি গাজীপুরে। তিনি মায়া হোটেল সংলগ্ন একটি তাঁত ফ্যাক্টরিতে শ্রমিকের কাজ করতেন।
টাঙ্গাইল মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সায়েদুর রহমান জানান, মাজেদুল তাঁত ফ্যাক্টরির পাশের বাড়ির স্বামী পরিত্যক্ত এক নারীর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। শনিবার ভোরে মাজেদুল ওই নারীর বাড়িতে যান। এক পর্যায়ে ওই নারীর পরিবারের লোকজন মাজেদুলকে আটক করে বেদম মারধর করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই নারীর আত্মীয় সিদ্দিক হোসেন এবং সাজ্জাত হোসেনকে আটক করে। গুরুতর আহত অবস্থায় মাজেদুলকে উদ্ধার করে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
টাঙ্গাইলে জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস উদযাপিত
হাফিজুর রহমান. টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধি ॥
টাঙ্গাইলে নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস উদযাপিত হয়েছে। এ উপলক্ষে শনিবার(২৮ এপ্রিল) সকালে জেলা লিগ্যাল এইড কমিটির উদ্যাগে বর্ণাঢ্য র্যালি ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
জেলা ও দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গণ থেকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা অ্যাডভোকেট বার সমিতির সামনে গিয়ে শেষ হয়। এর আগে বেলুন ও কবুতর উড়িয়ে র্যালি উদ্বোধন করা হয়।
র্যালিতে জেলা সিনিয়র জজ ও জেলা লিগ্যাল এইড কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শওকত আলী চৌধুরী, পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায়, অতিরিক্ত জেলা জজ আবুল মনসুর মিয়া, শারমিন জাহান, ভারপ্রাপ্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. হামিদুল ইসলাম, জেলা লিগ্যাল এইড কর্মকর্তা ফৌজিয়া হাফসা, অতিরিক্ত ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোশারফ হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরীফুল হক, জেলা সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা কাজী গোলাম আহাদ সহ বিচার বিভাগের সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়। পরে জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।