ক্রাইমবার্তা রিপোট: লিমফেটিক ম্যালফরমেশন বা রসবাহী নালীর বিকলাঙ্গতা রোগে আক্রান্ত সাতক্ষীরার মুক্তামনি মারা গেছে। বুধবার সকাল ৭টা ২৮ মিনিটে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কামারবাসা গ্রামের নিজ বাড়িতেই মৃত্যু হয় ১২ বছর বয়সী শিশুটির।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে জটিল ও বিরল রোগী মুক্তামনির চিকিৎসা চলছিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে। ছয় মাসের অধিক সময় ধরে মুক্তামনির চিকিৎসার প্রধান চিকিৎসক হিসেবে কাজ করছিলেন বার্ন ইউনিটের প্রধান সমন্বয়কারী সামন্তলাল সেন। বুধবার মুক্তামনির মৃত্যুর পর তিনি বলেন, মুক্তামণির ধুঁকে ধুঁকে মৃত্যু কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না। ওর মৃত্যুটা আমার জন্য খুবই হৃদয় বিদারক।
তিনি বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরেই মুক্তামণির বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করে ঢাকায় নিয়ে আসতে বলে আসছিলাম। গতকালও সাতক্ষীরার সিভিল সার্জনের সঙ্গে কথা বলে দুজন চিকিৎসককে তাদের বাড়িতে পাঠাই। বাড়িতে গিয়ে চিকিৎসকরা জানায়, মুক্তামণির শারিরিক অবস্থা খুবই খারাপ। হাতে পচন ধরে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। মারাত্নক (হিমোগ্লোবিনের অভাব) রক্তশূন্যতায় ভুগছে। তখন মুক্তামণির বাবাকে বলি, ঢাকায় না হউক অন্তত সাতক্ষীরা হাসপাতালে ভর্তি করেন। কিন্তু তার বাবা রাজি হয়নি। তারা ভেবেছে, রোজার সময় ঢাকায় নিয়ে এসে চিকিৎসা- বেশ ঝামেলার। আর কোনো লাভ হবে না। গ্রামের মানুষ তাই বুঝতে পারেনি।
গত বছরের জুলাইয়ে গণমাধ্যমে মুক্তামনিকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। এর পর স্বাস্থ্য বিভাগের টনক নড়ে। প্রথমে স্বাস্থ্য সচিব এবং পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার চিকিৎসার দায়িত্ব নেন। ১১ জুলাই তাকে বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর চিকিৎসকরা জানান, মুক্তামনি লিমফেটিক ম্যালফরমেশন বা রসবাহী নালীর বিকলাঙ্গতা রোগে আক্রান্ত। পরে কয়েক দফা তার হাতে অস্ত্রোপচার করা হয়। ওই বছরের ২২ ডিসেম্বর তাকে এক মাসের ছুটিতে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এর পর মুক্তামনি আর হাসপাতালে ফেরেনি।