সাতক্ষীরায় দুই ব্যক্তির গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার: পরিবারের দাবী তাদেরকে পুলিশ আগেই আটক করে ছিল

ক্রাইমবার্তা রিপোট: সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরা শহরের পাশে বাঁকালে দুই ব্যক্তির গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশের দাবি তারা চিন্হিত মাদক ব্যবসায়ী। মাদক ভাগাভাগি নিয়ে নিজেদের মধ্যে গোলাগুলিতে তারা নিহত হয়েছে। সোমবার ভোরে সাতক্ষীরা-ভোমরা স্থলবন্দর সড়কের বাঁকালের আগুনপুর গ্রামে রাস্তার পাশে লাশ দুটি পড়ে ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ সময় সেখান থেকে উদ্ধার করা হয়েছে একটি ওয়ান শুটার গান ও ১০৫ বোতল ফেনসিডিল।

গুলিবিদ্ধ মাদক ব্যবসায়ীরা হলো, সাতক্ষীরা শহরের মধুমোল্লারডাঙ্গি এলাকার মৃত এরাদ আলী মিস্ত্রীর ছেলে ইমদাদুল হক (৪০)ও সদর উপজেলার ভোমরাস্থল বন্দর সীমান্তে লক্ষিদাড়ি গ্রামের আজগর আলীর ছেলে

খলিলুর রহমান ওরফে পুটে (৪২)।
নিহত এমদাদের শ্যালক শেখ আদ দ্বীন আলীর ছেলে আল আমীন জানান, গতবুধবার তারাবী নামাজ শেষে ভগ্নিপতি বাড়ীতে এসে ভাত খচ্ছিল , এসময় দুটি মটরসাইকেল যোগে ৪জন সাধারন পোশাকধারী পুলিশ তাকে জোর করে তুলে নিয়ে যায়। আমার বোন খাদিজা খাতুন জানতে চাইলে আমার ভগ্নিপতির মোবাইলে ফোন( ০১৭১১৩৫৩২৯০) যোগাযোগ করার কথা বলে পুলিশ। আটক করে নিয়ে যাওয়ার পরে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন বন্ধ করে দেয় । আমরা সাতক্ষীরা সদর থানা ডিবি পুলিশের অফিস সহ বিভিন্ন স্থানে খোজ নিতে থাকি । তাকে খোজ না পেয়ে পরিবারের স্বজন উদ্বিগ্ন ছিল। তার নামে দেশের কোন থানা বা আদালতে একটি মামলা নেই । আমরা গতকাল সকালে কথিত বন্দুকযুদ্ধের নামে বাকাল এলাকায় তাকে হত্যা করে লাশ উদ্ধার করেছে বলে জানতে পেরেছি । আমার ভগ্নিপতি যদি মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত থাকে তবে তাকে আইনী ব্যবস্থা কোন না নিয়ে হত্যা করা হলো। আমার ভগ্নিপতির ছোট এক ছেলে মেয়েও স্ত্রীর দায়িত্ব কে নেবে । আমরা এর ন্যায বিচারের দাবী করছে।
অপরজন নিহত সদর উপজেলার ভোমরা সীমান্তে লক্ষীদাড়ী গ্রামের খলিলুর রহমানর(পুটে) প্রতিবেশী হারু ঘোষ জানান, নিহতের স্ত্রী মিনা বলে গত রবিবার সকালে আমার স্বামী আদালতে মামলা থাকায় হাজিরা দি

 

তে সকালে আদালতে যায় । হাজিরা শেষে আদালত থেকে বের হওয়ার সময় ৪জন সাদা পোশাকধারী তাকে নিয়ে যায়। বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত সদর থানা ও ডিবি অফিসে খোজ নিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। সোমবা

সকালে জানতে পারি তাকে কল্পিত ভাবে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। আমরা স্কুল পড়–য়া এক ছেলেও এক মেয়ের দায়িত্ব কে নেবে।

সদর থানার উপ-পরিদর্শক প্রবীর কুমার দাস জানান, আজ ভোরে খবর আসে যে বাঁকালের পাশে আগুনপুরে দুটি লাশ পড়ে রয়েছে। তিনি দ্রুততার সাথে সেখানে পুলিশের কয়েক সদস্যকে নিয়ে পৌছে যান। তিনি বলেন, লাশ

দুটির প্রত্যেকের দেহে একটি করে গুলির চিহ্ন রয়েছে। তাদের পরনে ছিল লুঙ্গি ও গেঞ্জি। মাত্র ১০ গজের ব্য

বধানে লাশ দুটি পড়ে ছিল বলে তিনি জানান। লাশের পাশেই পাওয়া গেছে একটি ওয়ান শুটার গান ও ১০৫ বোতল ফেনসিডিল। এ ছাড়া মদের খালি বোতলও পাওয়া গেছে।
উপ-পরিদর্শক প্রবীর কুমার দাস আরো জানান, প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে যে তারা মাদকের ভাগাভাগি নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। নিজেদের মধ্যে গোলাগুলির এক পর্যায়ে উক্ত দুই মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়।
ময়না তদন্তের জন্য লাশ দুটি সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এঘটনায় সদর থানায় মামলা হয়েছে।

সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার সাজ্জাদুর রহমান বলেন, নিহত দুইজনের গলায় গুলির চিহ্ন রয়েছে। তাদের পরনে একজনের লুঙ্গি ও সার্ট, অন্যজনের লুঙ্গি ও গেঞ্জি রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে সদর থানায় মাদক, ডাকাতিসহ একাধিক মামলা রয়েছে। মরদেহের পাশ হতে একটি পিস্তল, রাইফেলের একটি গুলির খোসা ও ১০৫ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে রাতের কোন এক সময়ে মাদক ভাগাভাগিকে কেন্দ্র করে ব্যবসায়ীদের দুগ্রুপের সংঘর্ষে এমন ঘটনা ঘটে। তদন্ত শেষে সঠিক তথ্য উৎঘাটন করা সম্ভব হবে।

 

 

Please follow and like us:

Check Also

আশাশুনিতে ইসতেসকার নামাজ আদায়

আশাশুনি প্রতিনিধি।। আশাশুনিতে তীব্র তাপপ্রবাহ থেকে মুক্তি পেতে আল্লাহর রহমতের বৃষ্টি প্রার্থনার নামাজ ইসতেসকার নামাজ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।