গাজীপুর সিটি নির্বাচনে কেন্দ্রে ঢুকে ব্যালট ছিনিয়ে সিল: প্রথম আলো#ব্যালট ছিনতাই করে ভোট: নয়াদিগন্ত#৫-৬টি কেন্দ্রে জোরপূর্বক সিল:যুগান্তর# কেন্দ্রে ব‌্যালট ছিনতাই :সমকাল#ভোটগ্রহণ স্থগিত: আমাদেরসময়

 ক্রাইমবার্তা ডেস্করিপোট: গাজীপুর সিটি নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। বিভিন্ন গণমাধ্যম এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেছে। শীর্ষ কয়েকটি দৈনিকের অনলাইনে প্রকাশিত রিপোট ক্রাইমবার্তা ডটকমের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হল।

প্রথমআলো রিপোট:  গাজীপুরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে এম এ আরিফ কলেজ কেন্দ্রে সিল মারা ব্যালট পেপার। ছবি: সাজিদ হোসেনগাজীপুরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের এম এ আরিফ কলেজ কেন্দ্রে ব্যালট পেপার ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ওই কেন্দ্রের ১ নম্বর কক্ষে ঢুকে একদল তরুণ ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নিয়ে সিল দেয়। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে কেন্দ্রের ভেতর এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ভোটগ্রহণ বন্ধ ছিল।

কয়েকজন ভোটার জানান, যারা সিল মারেন তাঁদের প্রত্যেকের গলায় আওয়ামী লীগ প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমের পরিচয়পত্র ঝুলছিল। কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ চলছে বোঝানোর জন্য ওই তরুণদের কয়েকজন সাধারণ ভোটারদের লাইনের সামনে দাঁড়িয়ে পড়েন। ভেতরে সিল মারার কাজ চলে।গাজীপুরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে এম এ আরিফ কলেজ কেন্দ্রে সিল মারা ব্যালট পেপার। ছবি: সাজিদ হোসেন

জানতে চাইলে নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক একজন পোলিং এজেন্ট বলেন, আমার চোখের সামনে এ ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু কিছু করার ছিল না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার এরশাদ আলী কোনো মন্তব্য করেননি। প্রিসাইডিং অফিসার মাহমুদুল আলী বলেন, এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। এটা গুজব। মাত্র ৫ / ৬ মিনিট ভোটগ্রহণ বন্ধ ছিল। ওই কেন্দ্রে ২ হাজার ১০ ভোট রয়েছে বলে তিনি জানান।

—–০———–ব্যালট ছিনতাই করে ভোট, প্রতিবাদে বিক্ষোভনির্বাচন

ব্যালট ছিনতাই করে ভোট দেয়া হয় – ছবি : নয়া দিগন্ত

নয়া দিগন্ত: গাজীপুর সিটি নির্বাচনে শহীদ স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে জাল ভোট মারা হয়েছে। কেন্দ্রটির ৬নং বুথে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার প্রতিবাদে ভোট স্থগিতে বিক্ষোভ করা হয়েছে। মেয়র পদে নৌকা ও কাউন্সিলর পদে ঠেলাগাড়ী প্রতীকে এসব ভোট মারা হয়।

এ ব্যাপারে সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার হুমায়ুন কবির বলেন, কয়েকজন লোক সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে ভোট কেন্দ্রে ঢুকে পড়ে। তারা ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নিয়ে সিল মারতে থাকে। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বিষয়টি জানালে তারা তাদেরকে সরিয়ে দেয়।

এ ব্যাপারে প্রিসাইডিং অফিসার কফিল উদ্দিন ভূঁইয়ার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে প্রথমে তিনি বিষয়টি জানেন না বলে জানান। পরে তিনি ওই কক্ষে গিয়ে বিষয়টির সত্যতা পান। এরপর তিনি বলেন, ‘আগে আমাকে এ বিষয়ে জানানো হয়নি। পদক্ষেপ নেয়া হবে।’

বিএনপির এজেন্টদের বের করে দেয়া হয়েছে- এমন অভিযোগের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘সকাল দিকে বিএনপির কিছু এজেন্ট এসেছিল, পরে তারা নিজেরাই চলে গেছে।’

এদিকে, একই কেন্দ্রে ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নেয়া নিয়ে দুই কাউন্সিলর প্রার্থী- ঘুড়ি প্রতীকের প্রার্থী হান্নান মিয়া ও ঠেলাগাড়ি প্রতীকের প্রার্থী আব্দুল করিমের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে ঘুড়ি প্রতীকের প্রার্থীর লোকজন বিক্ষোভ করলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।]

-০—–৫-৬টি কেন্দ্রে জোরপূর্বক সিল, জালভোটের কথা স্বীকার রিটার্নিং কর্মকর্তার

গাজীপুর সিটি নির্বাচন
গাজীপুর সিটি নির্বাচনে একটি কেন্দ্রে ভোট প্রদানের অপেক্ষায় নারী ভোটাররা। ছবি-যুগান্তর

গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে পাঁচ-ছয়টি কেন্দ্রে জোরপূর্বক সিল ও জালভোটের কথা স্বীকার করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা রকিবউদ্দীন মণ্ডল।

যুগান্তর:মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে কেন্দ্র পরিদর্শনে বেরিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কয়েকটি কেন্দ্রে ব্যালটে জোরপূর্বক সিল মারা ও জালভোট দেয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে।

এ ছাড়া পাঁচ-ছয়টি কেন্দ্র থেকে বিএনপির এজেন্টকে বের করে দেয়ার ঘটনা ঘটেছে বলে জানান তিনি।

তবে রকিবউদ্দীন কোনো কেন্দ্রের নাম উল্লেখ করেননি।

তিনি বলেন, অনিয়ম হওয়া কেন্দ্রগুলোতে নির্বাচন কমিশন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতায় নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। আর যেসব কেন্দ্রে এজেন্ট বের করে দেয়া হয়েছে বা ঢুকতে দেয়া হয়নি, সেখানে তারা এজেন্ট রাখার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।

একটি কেন্দ্রে অনিয়মের কারণে ভোট স্থগিত হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। তিনি বলেন, সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে। এর পর ব্যবস্থার নেয়া হবে।

নির্বাচন কমিশনের এক সূত্র বলছে, অনিয়মের কারণে ৭২ ও ৭৩ নম্বর কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত হতে পারে। এই দুটি কেন্দ্রের অনিয়ম তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে নির্বাচন কমিশন থেকে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়কে জানানো হয়েছে।—0———এক কেন্দ্রে ব‌্যালট ছিনতাই, গ্রেফতার ২

ছবি: সমকাল

সমকাল”:গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে খন্দকার রজব আলী বিদ্যানিকেটন পুরুষ ভোটকেন্দ্র ১০০ পৃষ্ঠার একটি ব্যালটবই ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার এই ঘটনায় এক কাউন্সিলর প্রার্থীর দুই কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এই সময় ৪৫ মিনিট ভোটগ্রহণ বন্ধ রেখে দেড়টার দিকে আবার চালু করা হয়।

প্রিজাইডিং কর্মকর্তা সাবিউল ইসলাম জানান, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কাউন্সিলর প্রার্থী আবদুল্লাহ আল মামুন মন্ডলের (টিভিনবাটি মার্কা) সমর্থকরা একটা ব্যালট বই ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়েছি। ছিনতাই হওয়া ব্যালট পেপারগুলো বাতিল করে দিয়েছে। ফলে ভোটে এর কোনো প্রভাব পড়বে না। ঘটনার পর ৪৫ মিনিট ভোটগ্রহণ বন্ধ রাখা হয়। পরে দেড়টার দিকে তা আবার চালু করা হয়েছে।

ব্যালটবই ছিনতাইয়ের ঘটনায় দু’জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে বলেও জানান তিনি।

ছবি : আমাদের সময়

আমাদের সময়: গাজীপুর সিটি নির্বাচনে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের জেরে গাজীপুরের একটি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ বন্ধ রয়েছে। আজ মঙ্গলবার বেলা ১টা থেকে ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে।

বন্ধ হওয়া ভোটকেন্দ্রটি ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের মির্জা ইব্রাহিম হাইস্কুল। এই কেন্দ্রে বিএনপির কোনো এজেন্টদের খুঁজে পাওয়া যায়নি। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ বন্ধ রয়েছে কেন্দ্রটিতে।

প্রিজাইডিং অফিসার শ্যামল চন্দ্র হালদার জানিয়েছেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সাহায্য চাওয়া হয়েছে। বিষয়টির প্রতিকার চেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।

এ ছাড়া ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের লাঘালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কেন্দ্রের সামনে ধানের শীষের বুথে পুলিশি হামলা হয়েছে বলে দাবি দলটির কর্মীদের। বিএনপির প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকারের এক কর্মী জানিয়েছেন, সকাল ১২টার দিকে হঠাৎ সাদা পোশাকধারী পুলিশ হামলা চালায়। এতে দুজন কর্মী আহত হয়।

তবে এই কেন্দ্রে ধানের শীষে এজেন্টদের দেখতে পাওয়া যায়।

কয়েকটি কেন্দ্রে ভোট স্থগিত, কর্তৃপক্ষের দাবি ব্যালট সংকট

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
সংঘর্ষের পর ভোটারদের কেন্দ্র থেকে বের করে দিচ্ছে পুলিশগাজীপুরে কয়েকটি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ স্থগিত রয়েছে। ওইসব কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তারা জানিয়েছেন ব্যালট শেষ হয়ে গেছে। তাই ভোট গ্রহণ আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। এছাড়া বেশ কয়েটি কেন্দ্রে বিএনপির কোনও পোলিং এজেন্ট পাওয়া যায়নি। বিএনপির মেয়র প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকারের অভিযোগ, তাদের এজেন্টদের কেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। কোথাও কোথাও তাদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া হয়েছে।
কোনাবাড়ীর গ্রেটম্যাট প্রাইমারি স্কুল ৬২ নম্বর কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ বন্ধ রয়েছে। এ কেন্দ্রে চারটি ভোটার বুথ রয়েছে। এ কেন্দ্রে বিএনপির কোনও পোলিং এজেন্ট দেখা যায়নি।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এ কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা বলেন, ‘ব্যালট পেপার শেষ হওয়ায় ভোট গ্রহণ বন্ধ রয়েছে। এ কেন্দ্রের ভোটার সংখ্যা ২ হাজার ৫২ জন। এরমধ্যে ৩০০‘র মতো ভোট পড়েছে।’ কেন্দ্রে বিএনপির এজেন্ট নেই কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কেন তারা কেন্দ্রে আসেনি এটা তো আমি বলতে পারবো না।’হাসান সরকার জানান, তিনি ৪টি কেন্দ্রে ঘুরে বিএনপির কোনও পোলিং এজেন্ট খুঁজে পাননি। এরমধ্যে একটি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ বন্ধ। আরেকটি কেন্দ্রের দুটি বুথেও ভোট গ্রহণ বন্ধ রয়েছে।আব্দুর রহমান (৪০) নামে এক ভোটার বলেন, ‘প্রায় দেড়ঘণ্টা পর্যন্ত ভোট দেওয়ার জন্য দাঁড়িয়ে আছি। কিন্তু বলা হচ্ছে ব্যালট পেপার নেই।’

Check Also

সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন এর আয়োজনে বিজয় দিবস পালন ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠান

নিজস্ব প্রতিনিধি : সাতক্ষীরায় বিজয় দিবস উপলক্ষে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা,পুরুষ্কার বিতারণ ও আলোচনা সভা  অনুষ্ঠিত হয়েছে। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।