Pakistan's cricketer-turned politician Imran Khan of the Pakistan Tehreek-e-Insaf (Movement for Justice) speaks to the media after casting his vote at a polling station during the general election in Islamabad on July 25, 2018. Pakistanis voted July 25 in elections that could propel former World Cup cricketer Imran Khan to power, as security fears intensified with a voting-day blast that killed at least 30 after a campaign marred by claims of military interference. / AFP PHOTO / AAMIR QURESHI

ইমরান প্রধানমন্ত্রী হলে ভারতের জন্য ৮ বিপদ : কে এই ইমরান

ক্রাইমবার্তা ডেস্করিপোট:  পাকিস্তানের রাজনীতিতে ছক্কা হাঁকালেন ইমরান খান। প্রধানমন্ত্রী হিসাবে অভিষেক হওয়াটা এখন কেবল সময়ের ব্যপার মাত্র। যার পুরো নাম ইমরান খান নিয়াজি। বিশ্ব ক্রিকেটের সর্বকালের অন্যতম সেরা এই অলরান্ডার খেলোয়াড়ি জীবনের মতো রাজনীতির ময়দানেও সফল। ১৯৯২ সালে অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডে যৌথভাবে আয়োজন করা বিশ্বকাপের শেষ তারই হাতে উঠে এসেছিল বিশ্বজয়ের কাপ। সেদিন পাকিস্তানের মানুষকে ক্রিকেটে বিশ্বজয়ের আনন্দ তিনিই দিতে পেরেছিলেন। এবার কি পাকিস্তানের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনন্দ দিতে পারবেন।

বুধবার অনুষ্ঠিত ভোটের ফলাফল এখনও পূর্ণাঙ্গভাবে ঘোষণা করা হয়নি। তবে সর্বশেষ প্রাপ্ত  ফলাফলে দেখা যায়,  ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফ (পিটিআই) ১১৬টি আসনে জয় য়েছে। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নওয়াজ শরিফের দল পাকিস্তান মুসলিম লিগ (এন) পেয়েছে ৫৯ আসন। আর বিলওয়াল ভুট্টো জারদারির পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) পেয়েছে ৩৭টি আসন। যান্ত্রীক ক্রুটির কারণে ফলাফল ঘোষণা আপাতত স্থগিত রয়েছে। তবে ইমরান খানই যে পাকিস্তানের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী সে ব্যাপারে সংশয় নেই রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।

রাজনৈতিক দিক থেকে গোলযোগে ভরা দেশটিতে রাজনীতির আঙিনায়  ইমরানের দল পিটিআই প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছিল সঙ্ঘত কারনেই।  ভোটে জয় পাওয়ার পর এখন দেখার বিষয়,  ক্রিকেটের মূলধনকে রাজনীতির মূলধনে রূপান্তর করতে কতটা সক্ষম হবেন অক্সফোর্ডের এই সাবেক শিক্ষার্থী।

১৯৫২ সালের ৫ অক্টোবর লাহোরে জন্ম। এক সিভিল ইঞ্জিনিয়ার ইক্রামূল্লা খান নিয়াজি এবং শৌকত খানুমের ছেলে তিন। লাজুক এই ছেলেটি বড় হতে থাকে তার চার বোনের সাথে। লাহোরের এচিসন কলেজ পড়াশুনা৷ পরে অক্সফোর্ডে থেকে স্নাতক হন ১৯৭৫ সালে। ১৯৭১ সালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে খেলতে নেমে টেস্ট ক্রিকেট অভিষেক। তার তিন বছর বাদে অবশ্য একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে অংশ নেওয়া। ১৯৮২ সালে পাকিস্তানের ক্যাপ্টেন হন। ৮৮টি টেস্ট খেলে তার ঝুলিতে রয়েছে ৩৬২টি ইউকেট ৩৮০৭ রান। অন্যদিকে ১৭৫টি একদিনের ম্যাচ খেলে তিনি রান ৩৭০২ রান করেন এবং ১৮২টি উইকেট পান। তার ক্যাপ্টেন্সিতে ৪৮টি টেস্টে পাকিস্তান ১৪টি জেতে এবং ৮টিতে পরাজিত হয়েছিল।

১৯৯৬ সালে ইমরান খান গঠন করেন তার রাজনৈতিক দল তেহরিক-ই-ইনসাফ। ১৯৯৭ সালে তিনি নির্বাচনে দুটি কেন্দ্র থেকে দাঁড়ালেও দুটিতেই হেরেছিলেন। তবে ১৯৯৯ সালের তিনি পারভেজ মোশারফের সামরিক অভুত্থানকে সমর্থন করেন এই আশায় যে দেশ থেকে দুর্নীতির অবসান ঘটবে। ২০০২সালে নির্বাচনে তিনি জেতেন। এদিকে ২০০৭ সালে ২ অক্টোবর তিনি আরও ৮৫জন পার্লামেন্ট সদস্যদের সাথে পদত্যাগ করেন আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের বিরোধিতা করে কারণ সেবার সেনা প্রধান পদ থেকে পদত্যাগ না করেই নির্বাচনে লড়ছিলেন মোশারফ। এরপর প্রেসিডেন্ট হয়ে মোশারফ জরুরি অবস্থা জারি করে ইমরানকে গৃহবন্দী করেন। ওইসময় কিছুদিন তাকে হাজতবাসও করার পর মুক্তি পান।

২০১৩ সালে পকিস্তানে নির্বাচনে তার দল দ্বিতীয় বৃহত্তম দল হিসেবে আসন জেতে। ২০১৮তে ফের ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ে নেমে কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছে যান। যদিও তার এই জয়ের পেছনে সেনাবাহিনীর হাত রয়েছে বলে বিরোধী মহল থেকে অভিযোগ রয়েছে।

তবে ইমরান ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে মাঝে মাঝেই বিতর্ক উঠেছে। তার প্লে-বয় ইমেজ নিয়ে নানা রটনা। ১৯৯৫ সালে তার সাথে জেমিমা গোল্ডস্মিথেব বিয়ে হলেও ২০০৪ সালে তাদের ডিভোর্স হয়ে যায়। এরপর ফের ২০১৫ সালে ব্রিটিশ- পাকিস্তানী সাংবাদিক রেহাম খানের সাথে পরিণয় হলেও সে বিয়েও টেকেনি বেশি দিন ওই বছরেই ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। এরপরে আবার ইমরানের সাথে সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং বিয়ে হয় তার আধ্যাত্মিক উপদেষ্টা বুশা মানিকার।

ইমরান প্রধানমন্ত্রী হলে ভারতের জন্য ৮ বিপদ

ইমরান প্রধানমন্ত্রী হলে ভারতের জন্য ৮ বিপদ

বুধবার পাকিস্তানে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনে নওয়াজ শরীফের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ ভোট পেয়ে এগিয়েছে ইমরান খান। তার দল তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) এখন সরকার গঠনের দ্বারপ্রান্তে।

পাকিস্তানে তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) সরকার গঠন করছে এবং ইমরান খান প্রধানমন্ত্রী হলে ভারত ও মোদি সরকারের জন্য ৮টি সমস্যা দেখা দিতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

ভারতের আশঙ্কা, ইমরানের পেছনে রয়েছে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর সমর্থন। তিনি সেনাবাহিনীকে সঙ্গে নিয়েই সরকার চালাবেন। ফলে জনমতের চেয়ে সেনা মত গুরুত্ব পেতে পারে। এতে পাকিস্তান সরকার আগের চেয়ে বেশি ভারতবিদ্বেষী হতে পারে।

কাশ্মীরে স্বাধীনতাকর্মীদের পাকিস্তান সমর্থন দিয়ে থাকে বলে দীর্ঘদিন অভিযোগ করে আসছে ভারত। ইমরান খান পাকিস্তান কাশ্মীর উপহার দেবেন বলে ঘোষণা দিয়েছে। এটি নিয়ে ভারত-পাকিস্তান মুখোমুখি অবস্থানে চলে যেতে পারে বা বড় কোনো ঘটনা ঘটতে পারে।

আফগানিস্তানের ভারতবিদ্বেষী তালিবানদের পাকিস্তান সমর্থন দিয়ে থাকে বলেও অভিযোগ রয়েছে ভারতের। ইমরান খান তালিবানদের মধ্যে ভারতবিদ্বেষীদের মদদ দিতে পারে বলে শঙ্কিত।

ভারতকে অস্থিতিশীল করতে বা জম্মু-কাশ্মীর এলাকা থেকে ভারতকে হটাতে স্থানীয়দের মদদ দিয়ে অস্ত্র সরবাহ করতে পারে ইমরান খান। এটি নিয়েই বেশি ভাবনায় আছে ভারত।

পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে সহযোগিতা বন্ধের পর থেকে তারা যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ক্ষুব্ধ রয়েছে। এক্ষেত্রে দেশটির যুক্তরাষ্ট্রকে ছেড়ে রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধতে পারে। ফলে চীন-পাকিস্তান ঐক্য হলে ভারতের জন্য সমস্যা দেখা দিতে পারে।

পাকিস্তানের বিভিন্ন ইসলামি সংগঠন এবার নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। সেনাবাহিনী ও ইমরান খানের সঙ্গে তাদের ভালো সম্পর্ক রয়েছে। ফলে সরকারের ভেতরেই পাকিস্তান বিদ্বেষ বাড়বে এবং ইসলামি সংগঠনগুলো এক্ষেত্রে সরকারকে প্রভাবিত করবে।

নির্বাচনের আগে ইমরান খান নওয়াজ শরীফের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ এনেছেন তার মধ্যে একটি ছিল নওয়াজ শরীফ ভারতঘেঁষা নীতি অনুসরণ করেছেন। ইমরান ওই নীতি থেকে বেরিয়ে আসবেন। সেক্ষেত্রে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রনীতিতে পরিবর্তন আসতে পারে।

পাকিস্তানে ইতিপূর্বে যারা ক্ষমতায় ছিলেন তাদের সঙ্গে ভারতের অনেকের বন্ধুত্ব ছিল। কিন্তু ইমরান খানের সঙ্গে ভারতের রাজনীতিবিদদের তেমন কোনো সম্পর্ক নেই। ফলে ইমরানের সঙ্গে ভারতের কোনো বিষয় আলোচনা বা সমঝোতা হওয়ার সম্ভাবনা কম।

Check Also

সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন এর আয়োজনে বিজয় দিবস পালন ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠান

নিজস্ব প্রতিনিধি : সাতক্ষীরায় বিজয় দিবস উপলক্ষে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা,পুরুষ্কার বিতারণ ও আলোচনা সভা  অনুষ্ঠিত হয়েছে। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।