সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : অন্যের জমি জবরদখল করার প্রতিবাদ করায় মুক্তিযোদ্ধার ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিয়ে বিষয়টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে মিথ্যা সংবাদ সম্মেলনের প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।
সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার ভদ্রখালি গ্রামের মৃত মনোহর সরদারের ছেলে মুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দিন সরদার (৬১) মঙ্গলবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এ সংবাদ সস্মেলন করেন।
সংবাদ সস্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, পৈতৃক সুত্রে পাওয়া স্ত্রী রাজিয়া খাতুনের ফারাজি অংশে তিনি স্বপরিবারে বসবাস করে আসছেন। একই ভিটায় শ্বশুর মৃত আরশাদ আলী শেখসহ তার তিন ভাই শেখ আতিয়ার রহমান, শেখ আব্দুল ওয়াজেদ, শেখ সামছুদ্দিন পাশাপাশি বসবাস করে আসছেন। দীর্ঘ ৩৬ বছর বসবাসের সুবাদে চাচা শ্বশুর ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তার সুসম্পর্ক রয়েছে। তবে শেখ সামছুদ্দিন ও শেখ আতিয়ার রহমান দু’ ভাইয়ের মধ্যে জমি নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধ রয়েছে। আপোষ বন্টনসূত্রে পাওয়া পৈতৃক জমির সামনের অংশে সামছুদ্দিনের ঘরবাড়ি থাকায় তা গায়ের জোরে নিজের দখলে নিতে জামায়াত নেতা চাচা শ্বশুর শেখ আতিয়ার রহমান গত ১৩ জুলাই সামছুদ্দিনের ঘরবাড়ি ভাঙচুর করে। আতিয়ার রহমান বিষয়টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে সামছুদ্দিনের দু’ ছেলে, এক মেয়ে ও তার (মহিউদ্দিন) শ্যালক রবিউলসহ কয়েকজনকে আসামী করে গত ২১ জুলাই থানায় একটি মিথ্যা মামলা করে। অথচ পুলিশ ক্ষতিগ্রস্ত সামছুদ্দিনের দায়ের করা অভিযোগ মামলা হিসেবে রেকর্ড করেনি। ওই মিথ্যা মামলায় ২২ জুলাই পুলিশ তার শ্যালক রবিউলকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠায়। পরদিন রবিউল জামিনে মুক্তি পায়। রবিউলের নামে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা দেওয়া ও সামছুদ্দিনের জমি দখলের জন্য অন্যায়ভাবে ঘরবাড়ি ভাঙচুরের প্রতিবাদ করায় তাকে ও তার পরিবারের সদস্যদের চাচাত শ্যালক নাশকতা মামলার (জিআর-৫৫/১৩ কালিঃ) আসামী হাফিজুর রহমান, ইসলামী ব্যাংকের পিওন শেখ জহিরউদ্দিন, দূর্ণীতির দায়ে ইসলামী ব্যাক কালিগঞ্জ শাখা থেকে বরখাস্ত হওয়া শেখ আনিছুর রহমান, ছাত্রশিবির নেতা আবুজার রহমান, জাহিদুল ইসলামসহ কয়েকজন হুমকি ধামকি দেয়। এ ঘটনায় তিনি বাদি হয়ে গত ২৩ জুলাই নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে পিটিশন ৭০২/১৮ মামলা করেন। মামলার খবর পেয়ে তারা আরো ক্ষিপ্ত হয়ে ২৬ জুলাই গভীর রাতে তার বসত ঘরে প্রেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। তাতে নগদ ৩৫ হাজার টাকা, ব্যবহৃত জিনিসপত্রসহ সর্বস্ব পুড়ে যায়। গ্রামের লোকজন প্রতিবাদ করলে তাদেরকেও হাত কেটে, জীবন নাশের হুমকি ও মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে আতিয়ার শেখ, তার ছেলে ও শ্যালকরা। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দিলে পুলিশ তা রেকর্ড না করে আমাকে ফিরিয়ে দেয়। অথচ এ ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করে তাদের বিরুদ্ধে কাল্পনিক অভিযোগ এনে আবারো নতুন করে হয়রানিমূলক মামলা দেওয়ার চেষ্টা করছে আতিয়ার শেখ। ইতিপূর্বে তারা স্থানীয় শালিস মানেনি। একপর্যায়ে জামায়াতের অর্থযোগানদাতা আতিয়ার শেখের ছেলে জাহিদ গত ২৯ জুলাই আমাকে, তার ছেলে ও শ্যালকের বিরুদ্ধে মিথ্যা সংবাদ সস্মেলন করে নিজেদের ঘরে নিজেরাই আগুন দিয়েছে বলে উল্লেখ করেছে। যা সম্পূর্ণ বানোয়াট ও মিথ্যা।তিনি উক্ত সংবাদের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
সংবাদ সস্মেলনের মাধ্যমে যারা ২০১৩ সাল ও পরবর্তী সময়ে নাশকতার সঙ্গে যুক্ত থেকে দেশকে অচল করে দেওয়ার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিল তারা প্রশাসনে প্রভাব বিস্তার করে আবারো সেই ধরণের ঘটনা ঘটিয়ে এলাকায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে যাচ্ছে, মুক্তিযোদ্ধার ঘর পোড়াচ্ছে ও মিথ্যা মামলা দিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ পুলিশের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়।
সংবাদ সস্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মহিউদ্দিনের শ্যালক সামিউল ইসলাম ও ছেলে আজমীর হোসেন।
Check Also
সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন এর আয়োজনে বিজয় দিবস পালন ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠান
নিজস্ব প্রতিনিধি : সাতক্ষীরায় বিজয় দিবস উপলক্ষে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা,পুরুষ্কার বিতারণ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। …