ক্রাইমবার্তা রিপোট: অভিনেত্রী ও মডেল কাজী নওশাবা আহমেদের বিরুদ্ধে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে মামলা করা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে গুজব ছড়ানোর অভিযোগে আটক এ অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে গতকাল উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলাটি করে র্যাব। র্যাব-১ এর ডিএডি আমিনুল ইসলাম বাদি হয়ে তার বিরুদ্ধে এ মামলা করেন। এ মামলায় গতকাল নওশাবা আহমেদের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে দায়ের করা মামলায় তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই বিকাশ গতকাল তাকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা তাকে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। নওশাবার পক্ষে তার আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে শুনানি করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক মাজহারুল হক চার দিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেন। এর আগে গত শনিবার রাতে রাজধানীর উত্তরা এলাকা থেকে নওশাবাকে আটক করে র্যাব-১।
র্যাব অভিযোগ করে, জিগাতলায় নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় ‘দুই ছাত্রের মৃত্যু এবং একজনের চোখ তুলে ফেলার’ কথা নিজের ফেসবুকে ছড়ান নওশাবা।
গত শনিবার রাত ১২টায় র্যাব-১-এর কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে উসকানি দেয়ার জন্যই ফেসবুক লাইভে আসেন অভিনেত্রী কাজী নওশাবা আহমেদ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি এটা স্বীকার করেছেন। নওশাবা ঘটনাস্থলে না থেকেই লাইভে এসে গুজব রটান। উসকানি ছড়ানোই ছিল উদ্দেশ্য।
জানা গেছে, গত শনিবার দুপুরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে আওয়ামী লীগের ধানমন্ডি কার্যালয়ের কর্মীদের সংঘর্ষে জিগাতলা এলাকা রণক্ষেত্রে রূপ নেয়। বিকেল পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের সাথে চলা সংঘর্ষে হেলমেট পরা একদল যুবককে দেখা গেছে, যাদের একজনের হাতে আগ্নেয়াস্ত্রও দেখা গেছে। সংঘর্ষে শিক্ষার্থীদের মৃত্যুর গুজব ছড়িয়ে পড়লে অভিনেত্রী নওশাবা বিকেল ৪টায় ফেসবুক লাইভে আসেন। ১ মিনিট ৩৭ সেকেন্ডের লাইভ ভিডিওর শুরুতেই তিনি বলেন, আমি কাজী নওশাবা আহমেদ বলছি, আপনাদের জানাতে চাই, একটু আগে জিগাতলায় আমাদের ছোট ভাইদের একজনের চোখ তুলে ফেলা হয়েছে, দু’জনকে মেরে ফেলা হয়েছে।
নিরাপদ সড়কের দাবিতে চলমান আন্দোলনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোই নওশাবার উদ্দেশ্য ছিল বলে জানিয়েছে র্যাব।
র্যাব জানিয়েছে, নওশাবা স্বীকারোক্তিতে জানিয়েছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লাইভে আসার আগে তিনি ঘটনাস্থলে ছিলেন না। তিনি জিগাতলা নিয়ে কথা বলার সময় উত্তরায় ছিলেন। রুদ্র নামে এক ছেলে তাকে লাইভ করতে বলেন। তাই তিনি উত্তরা থেকে লাইভ করেছেন। র্যাব-১ এর ল অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন অফিসার আব্দুল হামিদ সাংবাদিকদের জানান, মামলা হওয়ার পর নওশাবাকে উত্তরা পশ্চিম থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে রুদ্র ছাড়া আর কারো নাম পাওয়া গেছে কি না জানতে চাইলে র্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, ‘রুদ্রর কাছ থেকে তথ্য পেয়ে সে ওই ভিডিও ছেড়েছে বলে আমাদের জানিয়েছে। এর বেশি কিছু বলেনি। তবে আমরাও তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বেশি সময় পাইনি। তাকে ব্যাপকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করলে গুজব ছড়ানোর এ ঘটনায় আরো কেউ সহযোগী থাকলে সে বিষয়ে জানা যেতে পারে।
Check Also
অন্তর্বর্তী সরকারকে ডি-স্ট্যাবিলাইজ করার ষড়যন্ত্র হচ্ছে: ফারুকী
নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী নানান ইস্যুতে প্রতিবাদের সুরে কথা বলেন। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শুরু থেকেই ছাত্র-জনতাকে …