ক্রাইমবার্তা রিপোট: নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন এবং এতে হামলা ও আন্দোলনকারীদের গ্রেপ্তারের খবর গতকাল সোমবারও বিভিন্ন দেশের সংবাদমাধ্যমে স্থান পেয়েছে। খবর সংগ্রহের সময় সাংবাদিকদের ওপর হামলা এবং দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান রেখে আইন পাসের উদ্যোগের খবর বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নিয়ে সাক্ষাৎকার দেওয়ায় আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আলোকচিত্রী শহীদুল আলমের গ্রেপ্তারের বিষয়টিও খবরে গুরুত্ব পায়।
যুক্তরাজ্যের সম্প্রচারমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়, ঢাকায় অজ্ঞাতপরিচয়ের সশস্ত্র লোকজন সাংবাদিক ও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছে। ক্ষমতাসীন দলের সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের হামলায় অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছে।
যুক্তরাজ্যের লন্ডনভিত্তিক বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান রেখে সড়ক পরিবহন আইন প্রণয়নের উদ্যোগের বিষয়টি উঠে এসেছে। এ ছাড়া রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাটের গাড়িবহরে হামলা এবং আলোকচিত্রী শহীদুল আলমের গ্রেপ্তারের বিষয়ও রয়েছে এই খবরে।
ফ্রান্সের প্যারিসভিত্তিক বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে বলা হয়, কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পক্ষে মন্তব্য করেছিলেন আলোকচিত্রী শহীদুল আলম। এরপর গত রোববার দিবাগত রাতে তাঁকে নিজ বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায় সাদাপোশাকের অন্তত ২০ জন। এএফপির খবরে আরও বলা হয়, রাজধানীতে গত শনিবার পুলিশের ছোড়া রাবার বুলেটের আঘাতে নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরত শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়। রোববার পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে। সেই সঙ্গে ক্ষমতাসীন দলের লোকজনও হামলা চালায়। এর আগে শনিবার রাতে বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাটের গাড়িবহরে হামলা হয়। এএফপির খবরটিই পরিবেশন করা হয় দুবাই থেকে প্রকাশিত ইংরেজি দৈনিক গালফ নিউজের অনলাইন সংস্করণে।
কাতারভিত্তিক আল-জাজিরার খবরে বলা হয়, বিক্ষোভ সামাল দিতে সরকার মুঠোফোনে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দিয়েছে। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ওপর কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়েছে। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের হামলায় বেশ কয়েকজন সাংবাদিক আহত হয়েছেন এবং তাঁদের ক্যামেরা কেড়ে নেওয়া হয়েছে। উসকানি দেওয়ার অভিযোগে আলোকচিত্রী শহীদুল আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের রেডিও সম্প্রচারমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকার অনলাইন সংস্করণেও শহীদুল আলমের গ্রেপ্তারের খবর দিয়ে শিরোনাম করা হয়। এই খবরেও আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশের লাঠিপেটা, রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ার কথা বলা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অনলাইন সংবাদমাধ্যম ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস টাইমসের খবরে সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮-এর খসড়া অনুমোদনের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়।
ভারতের সংবাদমাধ্যম ফার্স্ট পোস্টের খবরে বলা হয়েছে, ‘হেলমেটধারী’ লোকজন যখন স্কুলশিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালাচ্ছিল, পুলিশ তখন নীরব দর্শকের ভূমিকায় ছিল।
সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন টেলিভিশন চ্যানেল আল আরাবিয়ার অনলাইন সংস্করণের খবরে পুলিশের কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ার বিষয়টি উঠে এসেছে। শনিবার রাতে মার্শা বার্নিকাটের গাড়িবহরে হামলার ঘটনাটিও তুলে ধরা হয়েছে এই খবরে।
অস্ট্রেলিয়ার সিডনি থেকে প্রকাশিত দৈনিক দ্য সিডনি মর্নিং হেরাল্ডের খবরে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, পুলিশের লাঠিপেটা ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ার ঘটনা এবং মুঠোফোনে ইন্টারনেট সেবায় ধীরগতির বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়।