SAMSUNG CAMERA PICTURES

দিনাজপুরে দুইজনকে হত্যার অভিযোগে এক যুবককে পুড়িয়ে হত্যা

ক্রাইমার্তা ডেস্করির্পোটঃ    দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জ উপজেলায় এক নৈশপ্রহরীকে গলাকেটে হত্যা এবং অপরজনকে ছুরিকাঘাতে আহত করেছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে বিক্ষুব্ধ জনতা এক যুবককে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। তার নাম রবিউল ইসলাম (৩২)। বৃহস্পতিবার ভোরে বীরগঞ্জ পৌরসভার শালবাগান ও হাটখোলা মোড়ে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত নৈশ প্রহরী হলেন— বীরগঞ্জ পৌরসভার জেলখানা মোড় এলাকার আবুল কাশেমের ছেলে সুরুজ আলী (৪০)। আর আগুনে পুড়িয়ে মারা যুবক রবিউল একই এলাকার তারা মিয়ার ছেলে। আহত আরেক নৈশপ্রহরী হলেন— বীরগঞ্জ হাটখোলা এলাকার মধুমিয়ার ছেলে শহীদ (৩৮)।
জানা গেছে, ভোরে বীরগঞ্জ পৌরসভার শালবাগান মোড় নৈশপ্রহরীর দায়িত্ব পালন করছিলেন সুরুজ আলী। এসময় দুর্বৃত্তরা তাকে গলাকেটে হত্যা করে। এর পরপরই বীরগঞ্জ হাটখোলা মোড়ে পালনকালে নৈশপ্রহরী শহীদকে ছুরিকাঘাত করে দুর্বৃত্তরা।
এলাকাবাসী ও পুলিশ জানায়, এ ঘটনার পর স্থানীয়রা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন। ভোর ৫টা থেকে তারা দিনাজপুর-ঠাকুরগাঁও মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন। বিক্ষুব্ধ জনতা জেলখানা মোড় এলাকায় রবিউল ইসলামের বাড়িতে রক্তমাখা কাপড় দেখতে পেয়ে তাকে খুঁজতে থাকেন। সকাল ৮টায় রবিউলকে কাহারোল উপজেলার ১৩ মাইল গড়েয়া নামক স্থানে খুঁজে পাওয়া যায়। বিক্ষুব্ধ জনতা তাকে ধরে নিয়ে বীরগঞ্জ শালবাগান মোড়ে এনে পেটাতে থাকে। এক পর্যায়ের আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করে।
উভয় ঘটনার পর এলাকায় উত্তেজনার ছড়িয়ে পড়ে। সকাল থেকেই দফায় দফায় ওই মহাসড়ক অবরোধ করে স্থানীয়রা। এতে করে মহাসড়কে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার পর সকাল ১০টা থেকে যান চলাচল শুরু হয়। বীরগঞ্জ থানার অফিসার্স ইনচার্জ শাকিলা পারভীন দুইজন নিহত হওয়ার বিষয় নিশ্চিত করে জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।

হাবিপ্রবিতে ৫০ শিক্ষার্থী অসুস্থ
দিনাজপুরে হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (হাবিপ্রবি) বাইরের বাটি সার্ভিসের খাবার খেয়ে ৫০ শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এদের মধ্যে ১৮ জনকে দিনাজপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার রাতে এ ঘটনা ঘটে।
বর্তমানে চিকিৎসাধীন শিক্ষার্থীরা শঙ্কামুক্ত আছেন বলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান।
শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়া হলের ক্যান্টিন পরিচালনাকারী তরিকুল ইসলামের সরবরাহ করা খিচুড়ি, ব্রয়লার মুরগির মাংস ও আলু ভর্তা দিয়ে রাতের খাওয়া সারেন ৬০ শিক্ষার্থী। এই খাবার খাওয়ার পর থেকে তাদের অনেকের বমি ও পেটে ব্যাথা দেখা দেয় এবং ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হন। কেউ কেউ জ্বরেও আক্রান্ত হন। এ ঘটনার পর শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন সেন্টারে চিকিৎসা নেন।
হাবিপ্রবির মেডিকেল সেন্টার চিকিৎসা নেয়ার পরও তাদের অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় রাত ৮টার পর থেকে রাত ১২টার মধ্যে ১৮ শিক্ষার্থীকে দিনাজপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তারা হলেন- আবুল হাসেম (২১), ইয়াসির আরাফাত (২১) নজরুল ইসলাম (২১), সৌরভ সরকার (২১), সুমন (২১), কাউসার (২০), মুহিব (২০), রিফাত (২০), মো. আজগর আলী (২১), আরিফ (২২), আবু রাসেল (২৩), সানোয়ার জাহান (২৩) আরিফ (২২), ইয়াসিন (২২), শুভ মূরমূ (২১), আব্দুর রহমান (২৪), উৎপল (২২) ও মেহেদী (২১)।
দিনাজপুর জেনারেল হাসপাতালের মেডিসিন কনসালটেন্ট ডা. ওয়াহেদুল হক জানিয়েছেন, ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরা সবাই খাবারের বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত। তারা বর্তমানে পেটের ব্যাথা, ডায়রিয়া, বমি ও জ্বরে আক্রান্ত হয়ে পড়েছেন। তাদেরকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তবে সবাই আশঙ্কামুক্ত বলে জানান তিনি। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টায় দিনাজপুর জেনারেল হাসপাতালের কর্তব্যরত সিনিয়র স্টাফ নার্স ও ডায়রিয়া ওয়ার্ডের ইনচার্জ সুফিয়া বেগম জানান, বর্তমানে সবার অবস্থা উন্নতির দিকে।
অবস্থার উন্নতি হওয়ায় তাদের মধ্যে ইতোমধ্যে ৩ জনকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। হাসপাতালে ভর্তি ফিসারিজ বিভাগের দুই শিক্ষার্থী জানান, বাইরের খাবার বন্ধ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যান্টিন চালু করলে শিক্ষার্থীদের এ অবস্থা হতো না। তাই বাইরের সার্ভিস বন্ধ করে দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যান্টিন চালুর দাবী জানিয়েছেন। উল্লেখ্য, এর আগে গত ৩ আগস্ট ওই ক্যান্টিনের খাবার খেয়ে অন্তত ৫০ শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েন। এদের মধ্যে ১৮ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।

Check Also

ভারতীয় গণমাধ্যম প্রতিদিন আমাদের সম্পর্কে অপপ্রচার চালাচ্ছে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, ভারতীয় গণমাধ্যম প্রতিদিন আমাদের সম্পর্কে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।