ক্রাইমবার্তা র্রিপোট সাতক্ষীরা:সাতক্ষীরায় টানা ৬০ বছর ধরে বসবাস করা ঘরবাড়ি থেকে পিস্তল দেখিয়ে ১২টি পরিবারকে সন্ত্রাসীরা উচ্ছেদ করে দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় সন্ত্রাসীদের কর্মকাণ্ডে বাধা দিলে ‘কথা বললে ইয়াবার মামলা দেব’ বলে শাসানো হয়।
ভয়ভীতি দেখিয়ে উচ্ছেদের পরে ওইসব বাড়িঘরে তালা ঝুলিয়েছে তারা। এমনকি পুকুরের মাছ, গাছগাছালি কেটে ফলাদি লুট করে নিয়েছে সন্ত্রাসীরা। শনিবার সদর উপজেলার ঝাউডাঙ্গা ইউনিয়নের মোহনপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
পরে দুপুরে উচ্ছেদ হওয়া ১২টি পারিবারের প্রায় ৪০ জন নারী-পুরুষ ও শিশু সাতক্ষীরা প্রেস ক্লাবে এসে এ ঘটনার প্রতিকার দাবি করেন। তারা জানান, পুলিশ অভিযুক্তদের না ধরে উল্টো ভিকটিম পরিবারের সদস্যদের গুলি করার হুমকি দিয়েছে। তাদের পিস্তল উঁচিয়ে তাড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
এদিকে ওই তাণ্ডব শেষে সন্ত্রাসীদের বহনকারী কালো রঙের মাইক্রোবাস পুলিশের সঙ্গে সাতক্ষীরা থানায় আসে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, এসব সন্ত্রাসীর নেতৃত্ব দিয়েছেন যশোরের বেজপাড়ার মাহবুবুর রহমান মধু।
তিনি পুলিশের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার স্বজন পরিচয়ে জোর করে জমি দখলে নেয়ার চেষ্টা করছেন। উচ্ছেদ হওয়া পরিবারের রুস্তম আলিসহ অন্যরা জানান, তারা মোট ১২ জন মোহনপুর গ্রামের আনসার সরদারের ছেলে জামালউদ্দিনের কাছ থেকে বহু বছর আগে খণ্ড খণ্ড করে দুই বিঘা জমি কিনে বসবাস শুরু করেন।
কিন্তু ওই জমি নিজের দাবি করে যশোরের মাহবুবুর রহমান মধু আদালতে মামলা করেন। মামলায় তিনি হেরে যান। এরই মধ্যে ওই জমি খাস খতিয়ানভুক্ত হওয়ায় ভূমি উন্নয়ন কর দিতে পারছেন না বসবাসকারীরা। এমনকি জমির মিউটেশনও বন্ধ রয়েছে।
অভিযোগে তারা জানান, শনিবার কোনো ধরনের আইনগত নোটিশ ছাড়াই সদর থানার এসআই হাজ্জাত মামুন একদল পুলিশ নিয়ে মোহনপুর গ্রামে হাজির হন। একই সময়ে সেখানে আসেন যশোরের মাহবুবুর রহমান মধু ও তার বাহিনী। একটি কালো রঙের মাইক্রোবাস থেকে তারা দ্রুত নেমে শুরু করেন হুমকি ধামকি তাণ্ডব।
যশোরের বেজপাড়ার মাহবুবুর রহমান মধু বলেন, ‘ওই জমি আমার বাবা খসরু জামানের কাছ থেকে বর্গা নিয়েছিলেন আনসার আলি সরদার। এখন সে জমি ছাড়ছেন না। জাল দলিল করে দখলে রেখেছেন।’
বিষয়টি সম্পর্কে সাতক্ষীরা থানার এসআই হাজ্জাত মামুনের কাছে বারবার ফোন করলেও তিনি ফোন ধরেননি। সদর থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘দুই পক্ষের কথা শুনেছি। তারা থানায় এসেছিল। ঘরের তালা খুলে দেয়া হয়েছে। ৪ সেপ্টেম্বর দুই পক্ষকে বসিয়ে কাগজপত্র দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’