ইদলিবে যুদ্ধবিরতির আহ্বান তুরস্কের, রাশিয়ার বিরোধিতা

 

ক্রাইমবার্তা ডেক্সঃ

সিরিয়ার বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত ইদলিব প্রদেশে আসন্ন সর্বাত্মক হামলায় প্রাণহানি এড়াতে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিজেপ তায়িপ এরদোয়ান। কিন্তু এ আহ্বানে সায় দেননি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

তার সঙ্গে সুর মিলিয়ে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানিও বলেছেন, সিরিয়াকে অবশ্যই দেশের পুরো ভূখন্ডের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

ইদলিব পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার মধ্য দিয়ে সেখানে মানবিক বিপর্যয় এড়ানোর উপায় খোঁজার চেষ্টায় শুক্রবার তেহরানে বৈঠকে বসেছে তুরস্ক, ইরান ও রাশিয়া। এ বৈঠকেই তিন দেশের নেতার মধ্যে এ মতানৈক্য দেখা দিয়েছে।

সিরিয়ার সরকারি বাহিনী ইদলিব প্রদেশে খুব শিগগিরই অভিযান শুরু করবে আশঙ্কায় এলাকা ছেড়ে পালাচ্ছে শত শত মানুষ।

ইদলিবে সর্বাত্মক অভিযান শুরু হলে রক্তবন্যা বয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। জাতিসংঘ আগেই ইদলিবে মানবিক বিপর্যয় নেমে আসার ব্যাপারে সতর্ক করেছে। যুক্তরাষ্ট্রও ইদলিবে হামলার ফল অপরিণামদর্শী হবে বলে হুঁশিয়ার করেছে।

কিন্তু সিরিয়ার ইদলিব প্রদেশটিই এখন বিদ্রোহী এবং জিহাদি গোষ্ঠীগুলোর শেষ ঘাঁটি হওয়ার কারণে অনেক ঝুঁকি নিয়েও সেখানে যুদ্ধ থেকে পিছু হটতে রাজি নয় সিরিয়া এবংরাশিয়া।

জাতিসংঘের হিসাবমতে, ইদলিবের জনসংখ্যা ২৯ লাখ। এর মধ্যে ১০ লাখই শিশু। তাই সেখানে বেপরোয়া হামলায় প্রাণহানি নিয়ে উদ্বেগ আছে।

এ উদ্বেগ মাথায় রেখেই তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান শুক্রবারের বৈঠকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন এবং ইরানের প্রেসিডেন্ট রুহানিকে ইদলিবে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হওয়ার আহ্বান জানান। যুদ্ধবিরতি চুক্তি হলেই সম্মেলন সফল হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

তাছাড়া, ইদলিবে হামলার পরিণামে সীমান্তে নতুন করে আর কোনো শরণার্থী তুরস্ক নিতে রাজি নয় বলেও জানান এরদোয়ান।

কিন্তু রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেন, এমন যুদ্ধবিরতি করা যাবে না। কারণ, ইদলিবের নুসরা ফ্রন্ট এবং ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গিরা শান্তি আলোচনায় আসেনি। সিরিয়াকে পুরো ভূখন্ডই নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে।

তিনি বলেন, “বাস্তবতা হচ্ছে সশস্ত্র বিদ্রোহী গ্রুপগুলো থেকে আলোচনার টেবিলে কোনো প্রতিনিধি উপস্থিত নেই। তাছাড়া, জাবাত আল নুসরা এবং আইএস কিংবা সিরিয়ান আর্মিরও কোনো প্রতিনিধি আলোচনায় নেই।”

“আর তাই সাধারণ বিচারে তুর্কি প্রেসিডেন্টের কথা ঠিক এবং এটি একটি ভাল সমাধান হলেও তা করার কথা আমি বলতে পারছি না। তাছাড়, নুসরা ফ্রন্ট কিংবা আইএস যে গুলি চালানো কিংবা বোমা হামলা বন্ধ করবে সেটিও নিশ্চিত করে বলা যায় না।”

ওদিকে, ইরানের প্রেসিডেন্ট রুহানি বলেন, গোটা দেশ বিশেষ করে ইদলিব থেকে জঙ্গি নির্মূল করতে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। তবে সে অভিযানে বেসামরিক নাগরিকদেরকে সুরক্ষিত রাখাটাও দরকার।

একারণে রুহানি সিরিয়ার সব জঙ্গিকে অস্ত্র পরিহার করে সংঘর্ষের শান্তিপূর্ণ সমাধান খোঁজার আহ্বান জানান।

Check Also

ভোমরা বন্দরে চার মাসে ৪০০ কোটি টাকা আয়

দক্ষিণবঙ্গ সাতক্ষীরার আধুনিক নিরাপদ ও পরিবেশ বান্ধব বাণিজ্যিককেন্দ্র ভোমরা স্থল বন্দর। আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও দারিদ্র্য …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।