ক্রাইমবার্তা ডেস্করির্পোটঃ
গ্রেপ্তারের পর ৬দিন পেরিয়ে গেলেও ছাত্র শিবির ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ শাখার সভাপতি শাফিউল আলমসহ ৫ জনকে আদালতে হাজির না করার প্রতিবাদে রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ ও উত্তর শাখা।
বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নিয়ে ছাত্রশিবির নেতারা বলেন, গণতন্ত্র, মৌলিক অধিকার ও আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থা ধ্বংস করে দেয়ার পর অবৈধ সরকার ও তাদের সেবাদাস পুলিশ নিরপরাধ ছাত্রদের জীবনকে ধ্বংস করে দেয়ার নির্মম খেলায় মেতে উঠেছে।
গত ১২ সেপ্টেম্বর রাত আনুমানিক সাড়ে ৮টায় শফিউল আলম তার ছোট ভাই ও ছোট ভাইয়ের বন্ধুকে নিয়ে হজ্জ ফেরত মা ও বড় ভাইকে রিসিভ করতে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে যান। মা ও বড় ভাইকে নিয়ে বাসার উদ্যোশ্যে গাড়ীতে উঠলে সাদা পোষাকধারী পুলিশ সদস্যরা মায়ের ভাইয়ের সামনে থেকেই শাফিউল আলমকে তার ছোট ভাই ও ছোট ভাইয়ের বন্ধু সহ গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়।
পরে যাত্রাবাড়ী এলাকায় অভিযান চালিয়ে তার বাসা থেকে মো. শফিউল্লাহ ও মো. মা’আজ নামে আরো দুই শিবির কর্মীকে প্রেপ্তার করে পুলিশ। কিন্তু গ্রেপ্তারের পর ৬ দিন অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত তাদেরকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়নি এবং আদালতেও হাজির করা হয়নি।
তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে সন্ধানের দাবী জানানো হয়। সংগঠনের পক্ষ থেকেও বিবৃতির মাধ্যমে তার সন্ধান দাবী করা হয়। যা বিভিন্ন গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রচার হয়েছে। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহীনি তাতে কর্ণপাত করছে না।
পুলিশের এই অমানবিক কর্ম সম্পূর্ণ বেআইনি ও উচ্চ আদালতের নির্দেশনার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। সরকার ও পুলিশের ধারাবাহিক এমন বেআইনি কাজে মনে হচ্ছে নিরপরাধ ছাত্রদের জীবন ধ্বংস করে দেয়ার সুগভীর ষড়যন্ত্র নিয়ে মাঠে নেমেছে তারা।
নেতৃবৃন্দ করে বলেন, পুলিশ সন্ত্রাসীদের প্রতি নজর না দিয়ে নিরীহ ছাত্রদের গ্রেপ্তারের পর অস্বীকার করে অমানবিকতার পরিচয় দিচ্ছে। পুলিশের এই নীতিহীন দ্বিমুখী আচরণ জনগণকে ক্ষুদ্ধ করে চলেছে। আমরা হুশিয়ার করে বলতে চাই, ছাত্রশিবির শান্তিপূর্ণ পথ চলায় বিশ্বাসী। কিন্তু বিনা অপরাধে নেতাকর্মীদের জীবন হুমকির মুখে ঠেলে দিলে কঠোর আন্দোলনের সিদ্ধান্ত নেয়া ছাড়া আমাদের আর কোন পথ খোলা থাকবে না।
আমরা অবিলম্বে গ্রেপ্তারকৃত ৫জনের সন্ধান ও মুক্তি দাবী করছি। অন্যথায় ছাত্রদের জান-মাল রক্ষায় কোন কঠোর কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে নামলে তখন যে কোন পরিস্থিতির জন্য সরকার ও পুলিশ প্রশাসনকে দায়ী থাকতে হবে।
ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ
গ্রেপ্তারের পর নিখোঁজ শিবির নেতা,শাফিউল আলমসহ ৫জনের মুক্তির দাবিতে রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ শাখা। সকাল ১১টায় কেন্দ্রীয় শিক্ষা সম্পাদক রাশিদুল ইসলামের নেতৃতে মিছিলটি গেন্ডারিয়া রেল স্টেশন থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে জুরাইন গিয়ে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। এসময় শাখা সেক্রেটারি কাজী মাসুম সরকারসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা অংশ গ্রহণ করে।
ঢাকা মহানগরী উত্তর
অবিলম্বে গ্রেপ্তারকৃতদের সন্ধান ও মুক্তি দাবী করে বিক্ষোভ মিছিল করে ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগরী উত্তর শাখা। সকাল সাড়ে ১১টায় কেন্দ্রীয় দাওয়াহ সম্পাদক শাহ মাহফুজুর রহমানের নেতৃত্বে মিছিলটি রাজধানীর বাড্ডা এলাকা থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। এসময় মহানগরী সেক্রেটারি মোস্তাফিজুর রহমানসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
ছাত্রশিবিরের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতিকে আটকের অভিযোগ
ছাত্রশিবির নেতা শাফিউল আলমরাজধানীর বিমানবন্দর এলাকা থেকে ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ শাখার সভাপতি শাফিউল আলমকে সাদা পোশাকে পুলিশ আটক করেছে বলে অভিযোগ জানিয়েছে সংগঠনটি।
তাদের দাবি, বুধবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে আটটার দিকে হজ থেকে ফেরত মা ও বড় ভাইকে রিসিভ করতে বিমানবন্দরে গেলে সাদা পোশাকধারী পুলিশ শাফিউল আলমসহ তার ছোট ভাই ও তার বন্ধুকে আটক করে। তবে পুলিশ বলছে, এমন কাউকে আটক বা গ্রেফতার করা হয়নি।
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সহকারী প্রচার সম্পাদক মাহফুজুর রহমান স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে কেন্দ্রীয় সভাপতি ইয়াছিন আরাফাত ও সেক্রেটারি জেনারেল মোবারক হোসাইন আটক শাফিউলের মুক্তির দাবি জানান। একইসঙ্গে এভাবে আটকের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান তারা।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গতকাল ১২ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে আটটায় দিকে শাফিউল আলম তার ছোট ভাই ও ছোট ভাইয়ের বন্ধুকে নিয়ে হজ ফেরত মা ও বড় ভাইকে রিসিভ করতে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যান। মা ও বড় ভাইকে নিয়ে বাসার যাওয়ার উদ্দেশে গাড়িতে উঠলে সাদা পোশাকধারী পুলিশ সদস্যরা তাদের গ্রেফতার করে।
একইদিন রাতে যাত্রাবাড়ী এলাকায় অভিযান চালিয়ে শাফিউলের বাসা থেকে মো. শফিউল্লাহ ও মো. মা’আজ নামে আরও দুই শিবির কর্মীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বিজ্ঞপ্তি