অভিযোগ দিলেও ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না মুক্তেশ্বরী পাটাবাজদের দখলে

ক্রাইমবার্তা  রির্পোটঃ যশোর:   যশোরের মুক্তেশ্বরী নদী এখন সংঘবদ্ধ পাটাবাজদের দখলে চলে গেছে। মনগড়া সমিতির ব্যানারে মাছ চাষের নামে ঘাটে ঘাটে অবৈধ পাটা দিয়ে যথেচ্ছাচার করা হচ্ছে। এ নিয়ে এলাকার একাট্টা মানুষ জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করা হলেও কার্যকরি ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। এছাড়া নদীতে একটিও পাটা থাকবে না বলে প্রশাসনের হুঁশিয়ারী থোড়ায় তোয়াক্কা করে যাচ্ছে চক্রটি। এলাকার বহুলালোচিত আলমাস, আশরাফ মেম্বার ও শওকত মেম্বারের নেতৃত্বে চলছে অব্যাহত এই পাটা সন্ত্রাস।
নদী ও পানি আইন, তথা যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ড ও প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী প্রদর্শন করে আরবপুর এলাকার একটি সংঘবদ্ধ অসাধু চক্র নদীর জমি অবৈধ দখলে লিপ্ত হয়েছে। গত কয়েক বছর ধরে বালিয়া ভেকুটিয়া ব্রিজ, রঘুরামপুর বাজার ব্রিজ, বাঁশবাড়িয়া ব্রিজ, পুলেরহাট ব্রিজসহ নদীর বিভিন্ন স্থানে পাটা দিয়ে অবৈধভাবে মাছ চাষ ও আহরণ করে আসছে। মনগড়া পাকদিয়া মৎস্যজীবী সমিতি নামে একটি সৎস্যজীবী সমবায় সমিতি খাড়া করে বন্দোবস্ত নেয়া হয়েছে প্রচার করছে চক্রটি। তারা মুক্তেশ্বরী নদীর ঘাটে ঘাটে অবৈধ পাটা দিয়ে রীতিমত ব্যবসায় নেমেছে। এ ঘটনায় এলাকার মানুষ নদী উন্মুক্ত রাখার আহবান জানিয়ে ওইসব পাটা ও অবৈধ দখলদার উচ্ছেদের দাবি জানিয়ে আসলেও কার্যকরি ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
খনন ইস্যুতে ভৈরব নদের পাটা উচ্ছেদ হলেও এখনও যশোরাঞ্চলে বিভিন্ন নদী ও খালে অনিয়মতান্ত্রিকভাবে পাটা দিয়ে মাছ আটকে চাষের অনৈতিকতা চলে আসছে। অল্প দুরত্বের ব্যবধানে নদী ও খাল গুলোতে তিন স্তরে পাটা দেয়ার কারণে ¯্রােতধারা চরমভাবে বিঘিœত হয়ে আসছে। এতে করে শহর পাড়া-মহল্লা ও লোকালয়ে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে থাকে প্রতি বর্ষা মৗসুমে। গত বর্ষা ও শুস্ক মৌসুমে বেত্রাবত্রী, মুক্তেশ্বরী, চিত্রা, কপোতাক্ষ, গোপিনাথপুর, গোবিন্দপুর হাজরাতলা, ঝিকরগাছা খালসহ আরও কয়েকটি নদী ও খালে একের পর এক পাটা লক্ষ্য করা যায়। যা সংখ্যায় অনেক। এর মধ্যে যশোর সদর উপজেলায় মুক্তেশ্বরী নদীতে এখন শক্তিশালী চক্রের ১০টির মত পাটা রয়েছে। বাঁশবাড়িয়া থেকে পুলেরহাট পর্যন্ত আরবপুর ইউনিয়ন অংশ। যশোর সেনানিবাস, এয়ারফোর্সসহ আরও কয়েকটি এলাকার পানি এ নদীতে পড়ে। কপোতাক্ষের সাথে মুক্তেশ্বরীর সরাসরি সংযোগ থাকায় এখানে কম হলেও নদীর ¯্রােতধারা থাকে। কিন্তু আরবপুর ইউনিয়নের একটি চক্র সন্ত্রাসী তৎপরতা চালিয়ে নদীর জমি দখল করছে আর যত্রযত্র পাটা দিয়ে মাছ চাষ করছে। স্থানীয় সাধারণ মানুষ ও অনেক জেলে সম্প্রদায়ের বাধা সত্ত্বেও বালিয়া ভেকুটিয়া, ব্রিজ ভেকুটিয়া, রঘুরামপুর বাজার ব্রিজ, বাঁশবাড়িয়া ব্রিজ, পুলেরহাট ব্রিজসহ নদীর বিভিন্ন স্থানে পাটা দিয়ে অবৈধভাবে মাছ চাষ ও আহরণ চলছে। নদী আইন অনুযায়ী জাল যার জলা তার এ বিধি ভুলুণ্ঠিত হচ্ছে। নদীর মাছ রাতের আঁধারে মেরে নেয়া হচ্ছে। এখানে সাধারণ মানুষ উঁকি পর্যন্ত দিতে পারছে না। ভেকুটিয়া, চাঁদপুর, পাকদিয়াসহ পার্শ্ববর্তী মাঠে হাজার হাজার একর জমির ফসল নদী দখলের কারণে নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট এসব দিক উল্লেখ করে একাট্টা জনতা আবারও যশোরের জেলা প্রশাসকের কাছে স্বারকলিপি দিয়েছেন।
পাকদিয়া মৎস্যজীবী সমিতির নামে নদী লিজ নেয়া হয়েছে বলে চক্রটি প্রচার করলেও তা ভুয়া বলে জনতার দাবি। ওই চক্রে কোনো প্রকৃত মৎস্যজীবী নেই। সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী চক্রটি প্রকৃত মৎস্যজীবীদের দিয়ে জাল টানার বিপরীতে দৈনিক হাজিরা দিচ্ছে মাত্র। এসব অভিযোগ উল্লেখ করে স্বারকলিপিতে আরও বলা হয়েছে, দ্রুত নদী সবার জন্য উন্মুক্ত করতে হবে। এতে পাটা উচ্ছেদের জোর দাবিও জানানো হয়েছে।
অভিযোগকারী স্থানীয় জনতার জোর অভিযোগ, ওই এলাকার চিহ্নিত বহুলালোচিত আলমাস, আশরাফ  মেম্বার ও  শওকত মেম্বারের নেতৃত্বে চলছে পাটা সন্ত্রাস। চক্রটি প্রশাসনের হুঁিশয়ারির প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে পাটা দিয়ে চলেছে। যা চরম দৃষ্টতা বলেও প্রতিয়মান হচ্ছে। মুক্তেশ্বরীর অনেক জমিও অনেক দিন ধরে অবৈধ দখলদারদের দখলে। অবৈধ পাটা তৈরীতে ব্যস্ত চক্রকে এখনই থামানোর দাবি ওই অঞ্চলের গণ মানুষের। তারা এব্যাপারে জেলা প্রশাসকসহ সরকারের উপর মহলে হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। অভিযোগকারীদের পক্ষে বলা হয়েছে আজ মুক্তেশ্বরী পাড়ের একাট্টা জনতা পাটা সন্ত্রাসে জড়িতদের নামের তালিকা নিয়ে হাজির হবেন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে।
Please follow and like us:

Check Also

তালায় বৃষ্টির জন্য এস্তেষ্কার নামাজ আদায়

কামরুজ্জামান মিঠু, তালা (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধিঃ সাতক্ষীরার তালায় বৃষ্টির জন্য বিশেষ নামাজ আদায় করেছেন এলাকার মুসল্লীবৃন্দ। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।