গায়েবি মামলা’ নিয়ে হাইকোর্টে রিট করবে
শনিবার নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
মওদুদ বলেন, একটা মামলাকে দৃষ্টান্ত হিসেবে নিয়ে, বিবেচনায় নিয়ে, হাতিরঝিল মামলার মতো যে কোনো একটা মামলা নিয়ে আমরা হাইকোর্টের রিট পিটিশন করার চিন্তা করছি।
তিনি বলেন, যে অফিসার বাদী হয়ে এই মামলা দায়ের করেছেন, তার বিরুদ্ধে কেন সরকার বিভাগীয় পদক্ষেপ নেবে না, তার বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তার বিরুদ্ধে কেন শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে না- এই আলোকে আমরা একটা রিট পিটিশন করার চিন্তা করছি।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ২০০৯ সাল থেকে এই পর্যন্ত ৯০ হাজারের বেশি মামলা করেছে সরকার। এর মধ্যে ৪ হাজার ১৪৯টি মামলা হয়েছে গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে ৫ অক্টোবরের মধ্যে।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমানউল্লাহ আমান, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, আইন বিষয়ক সম্পাদক কায়সার কামাল উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও প্রবীণ আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেছেন, দেশে সুষ্ঠু নির্বাচনে বাধা দিলে জনগণই তার প্রতিরোধ করবে, সরকারের পতন ঘটবে। তিনি বলেন, আমরা সন্ত্রাসী দল নই, আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। জনগণ আমাদের সাথে আছে, জনগণকে নিয়ে এই সরকারের পতন ঘটানো হবে।
গতকাল মহানগর বিএনপি অফিসের দ্বিতীয় তলায় জাতীয়তাবাদী সংগ্রামী দল কেন্দ্রীয় কমিটি আয়োজিত বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি, সুচিকিৎসা ও নিঃশর্ত মুক্তি এবং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলামের রোগমুক্তিতে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। অপর্ণা রায় দাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মো: জাহাঙ্গীর হোসেন।
খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, জাতীয় ঐক্যের সাত দফার দাবির মধ্য দিয়ে এই সরকারকে চলে যেতে হবে। তাদের সময় শেষ, দেশে আন্দোলন হবে আর সেই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সরকারের পতন হবে। যখনই ডাক আসবে সবাইকে রাজপথে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। সরকার পতন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে।
–০——–
বিএনপির বিরুদ্ধে মামলা ৯০ হাজার, আসামি ২৫ লাখ: ফখরুল
গত ১০ বছরে বিএনপির বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলার পরিসংখ্যান তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, ২০০৯ সাল থেকে গত ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে ৯০ হাজার ৩৪০টি। এসব মামলায় আসামি করা হয়েছে ২৫ লাখ ৭০ হাজার ৫৪৭ জনকে।
শনিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
এ সময় ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল প্রমুখ।
ফখরুল বলেন, বর্তমানে মোট জেলহাজতে আছেন ৭৫ হাজার ৯২৫ জন। হত্যা করা হয়েছে এক হাজার ৫১২ জনকে।
‘বিএনপির ৭৮২ নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী। এছাড়া মোট গুমের শিকার হয়েছেন এক হাজার ২০৪ জন। এরমধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজত থেকে গ্রেফতার দেখানো হয় ৭৮১ জনকে।’
এছাড়াও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে এ পর্যন্ত গুরুতর জখম ও আহত হয়েছেন ১০ হাজার ১২৬ জন বলেন জানান ফখরুল।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এসব ঘটনা প্রমাণ করে সরকার বিএনপিকে নির্বাচনের বাইরে রাখার সম্ভাব্য সব চেষ্টা চালাচ্ছে। তারা আরও একটি ভোটারবিহীন নির্বাচন করার জন্য কূটকৌশল হাতে নিয়েছে। সে কারণে আজকে সারাদেশে গায়েবি মামলার ছড়াছড়ি, যা দেশের মানুষের মধ্যে উদ্বেগ উৎকন্ঠা সৃষ্টি করেছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আগামী নির্বাচন কেন্দ্র করেই সরকার সবধরনের অপচেষ্টা চালাচ্ছে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকট আলাপ আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের উদ্যোগ নেয়ার জন্য আমরা বহুবার আহ্বান জানিয়েছি। কিন্তু সরকার কোন কর্ণপাত করছেন না।
‘তারা এখন গায়েবী মামলার পথ বেছে নিয়েছে। যে মামলা থেকে মৃতরাও রেহাই পাচ্ছেন না।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সাম্প্রতিক দেয়া একটি বক্তব্য উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, কি চমৎকার তাদের গণতন্ত্র। তিনি সারাদিন বলছেন সুষ্ঠু ভোট হবে। আর এই হলো তাদের গণতন্ত্রের নমুনা।
বিএনপির দেয়া সাত দফা দাবি মেনে নেয়ার মাধ্যমে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টির দাবি জানান ফখরুল। তিনি বলেন, নির্বাচনের আগে কারাবন্দি নেত্রীকে মুক্তি দেয়াসহ আমাদের যৌক্তিক দাবিগুলো মেনে নিলেই কেবল নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি হতে পারে।
এক প্রশ্নর জবাবে তিনি বলেন, দেশের সব মানুষকে সঙ্গে নিয়েই আমরা সরকারের এই ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করব