নির্বাচনী কেন্দ্রে ইভিএম পরিচালনার দায়িত্বে থাকবে সেনাবাহিনী

ক্রাইমবার্তা ডেস্করিপোটঃ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যেসব কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করা হবে, সেসব কেন্দ্রে এসব পরিচালনা করবে সেনাবাহিনী।

শনিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনের নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদ।

ইভিএম কেন্দ্রগুলো সেনাবাহিনীর পরিচালনায় রাখার ব্যাপারে কমিশনের পরিকল্পনার কথা জানিয়ে সচিব আরও বলেন, যেসব কেন্দ্রে ইভিএম ব্যবহার হবে- সেসব কেন্দ্রে থাকবে সেনাবাহিনী।

ওইসব কেন্দ্রে অন্যান্য কেন্দ্রের মতো আলাদাভাবে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবেও সেনাবাহিনী থাকবে বলে জানান তিনি।

ইচি সচিব বলেন, যেসব কেন্দ্রে ইভিএম ব্যবহার করা হবে সেসব যন্ত্র পরিচালনার জন্য সেনাবাহিনী রাখা হবে। কারণ এটি একটি টেকনিক্যাল বিষয়। টেকনিক্যাল বিষয় এবং আস্থার বিষয়গুলো বিবেচনায় রেখেই পরিকল্পনা করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, আগামী ২৩ ডিসেম্বরে অনুষ্ঠেয় এই ভোটে ইভিএম ব্যবহারে নির্বাচনী আইন গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ সংশোধনও করা হয়েছে।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ইভিএম ব্যবহারের পক্ষে হলেও অধিকাংশ রাজনৈতিক দল সংসদ নির্বাচনে এখনই যন্ত্রে ভোটগ্রহণের বিরোধিতা করছে।

এমনকি খোদ এক নির্বাচন কমিশনারও একাদশ সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করার পক্ষে না। নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারের ভাষ্য, ইভিএম ব্যবহারে ভোটারদের মধ্যে অনীহা রয়েছে। তাদের মধ্যে অভ্যাস গড়ে ওঠেনি। এজন্য সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করাটা ঠিক হবে না।

অপরদিকে ইভিএম ব্যবহারে ঘোর বিরোধী বিএনপিও। জনগণের অর্থ লুটপাট ও ভোটাধিকার হরণে নির্বাচন কমিশন তৎপরতা চালাচ্ছে। এতে সরকারি আর্থিক শৃঙ্খলা ও নিয়মনীতিও মানা হচ্ছে না।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলটির নেতারা প্রশ্ন তুলেছেন, কার নির্দেশে কাকে বিজয়ী করতে বিশ্বজুড়ে পরিত্যক্ত ইভিএম ব্যবহারে ইসি ওঠেপড়ে লেগেছে? জনগণ নির্বাচন কমিশনের এ তৎপরতা প্রতিহত করবে বলে মন্তব্য তাদের।

অন্যদিকে নির্বাচনে ইভিএম জোর করে চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন বিশ্লেষকরা।

তাদের মতে, সাধারণ মানুষকে প্রশিক্ষিত না করেই তাড়াহুড়ো করে ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বিপুল অর্থ ব্যয় করে এসব মেশিন কেনা হচ্ছে কার স্বার্থে?

শনিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার এটিএম শামসুল হুদা বলেন, সব দল ইভিএম না চাইলে তা এবারের নির্বাচনে ব্যবহার ঠিক হবে না। এছাড়া ইভিএম কেনার দায়িত্ব বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে দেয়া হচ্ছে, যেটি আশঙ্কার বিষয়।

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এম হাফিজউদ্দিন খান বলেন, সাধারণ মানুষকে প্রশিক্ষিত না করেই তাড়াহুড়ো করে ইভিএম চাপিয়ে দেয়া উচিত নয়।

Check Also

ডিসেম্বরের ২১ দিনে রেমিট্যান্স এল ২ বিলিয়ন ডলার

চলতি ডিসেম্বর মাসের প্রথম ২১ দিনে দেশে বৈধ পথে ২০০ কোটি  মার্কিন (২ বিলিয়ন) ডলারের …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।