ক্রাইমবার্তা রিপোট: কাজীর গরু কাগজে আছে গোয়ালে নেই। ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ ঠুটো জগন্নাথ নির্বাচন কমিশনের এমনই ফাঁকা বুলি মাত্র। সিইসি যে ভাষায় কথা বলছেন তাতে মনে হচ্ছে তিনি জনগণের সাথে মশকরা করছেন। নির্বাচনের নামে যেনতেন উপায়ে প্রহসন মঞ্চস্থ করার চেষ্টা করছেন। কিন্তু ইতিহাস প্রমাণ করে জনগণের প্রতিরোধের মুখে যুগে যুগে সব স্বৈরশাসককেই লজ্জাজনক পরাজয় বরণ করতে হয়েছে। বাকশালী ভূত তাড়াতে দেশের জনগণ আজ অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশী ঐক্যবদ্ধ।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষের প্রচারণায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির প্রতিবাদে শনিবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোঃ জহিরুল হক খোকন।
এতে তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) আসনে ধানের শীষের প্রচারণায় বাধা, হামলা, অফিস ভাংচুর ও গ্রেফতারসহ পুলিশী হয়রানীর চিত্র তুলে ধরেন। তিনি বলেন জেলার বাকী ৫টি আসনেও একই চিত্র বিরাজ করছে। তিনি বলেন, তফসিল ঘোষণার পর থেকে এ পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর আসনে এক শতাধিকসহ ছয়টি আসনে পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মীকে কোন কারণ ছাড়াই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানোর সময় মোবাইল ফোনে জেলা বিএনপির নেতাদের নিকট বিভিন্ন জায়গা থেকে একর পর এক গ্রেফতারের খবর আসছিল।
বিএনপি নেতা বলেন, ধানের শীষের গণজোয়ার দেখে সরকার তাদের নীলনকশা বাস্তবায়নে তৎপর। বারবার অভিযোগ করেও নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির কোনো বাস্তব পরিস্থিতি নেই। মিথ্যা মামলা, বিনা ওয়ারেন্টে গ্রেফতার, বাড়ি বাড়ি গিয়ে পুলিশের তল্লাশির নামে চলছে তাণ্ডব।
জহিরুল হক খোকন আরও বলেন, অব্যাহত হুমকি-ধামকি, হামলা, অফিস ভাংচুর, উঠান বৈঠক ও পথসভায় ১৪৪ ধারা জারি করা, সভার অনুমতি চাইলে দরখাস্ত গ্রহণ না করাসহ নানাভাবে নির্বিাচনের পরিবেশ নষ্ট করে ক্ষমতাসীন দলকে বিশেষ সুবিধা পাইয়ে দিতে প্রশাসন তৎপর।
তবে ৩০ ডিসেম্বর গণতন্ত্র মুক্তি দিবস উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে শহীদ জিয়ার হাতে গড়া বিএনপির ধানের শীষের বিজয় নিশান উড়বে ইনশাআল্লাহ্।
সংবাদ সম্মেলনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) আসনের ধানের শীষের প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার খালেদ হোসেন মাহবুব শ্যামল বলেন, পুলিশের এক পেশে মনোভাবের কারণে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সরকার দলীয় লোকজনের জন্য উৎসবের হলেও বিএনপির জন্য তা যেন রীতিমত আতঙ্ক। তিনি বলেন, পুলিশের তাণ্ডবের কারণে বিএনপির নেতাকর্মীরা নির্বাচনের মাঠেই দাঁড়াতে পারছে না। প্রতিদিন বিএনপির নেতাকর্মীদের অহেতুক গ্রেফতার করা হচ্ছে। এ পরিস্থিতি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সহায়ক নয়।
তাকে নির্বাচনে বাধা দেওয়াসহ হামলার শিকার হতে হচ্ছে উল্লেখ করে রিটার্নি কর্মকর্তার কাছে নিরাপত্তা চাইলেও তাকে কোন নিরাপত্তা দিচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেন তিনি। এছাড়া তাদের নির্বাচনী ক্যাম্প পুড়িয়ে দিয়ে তাদের নেতাকর্মীকেই মামলা দিয়ে হয়রানি করার অভিযোগ করে তিনি বলেন, যতই প্রতিকূলতা থাকুক আমরা নির্বাচন থেকে পিছপা হব না। কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত পেলেই কেবল আমরা অন্য কোন কিছু চিন্তা করব।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির সভাপতি হাফিজুর রহমান মোল্লা কচির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি গোলাম সারোয়ার খোকন, সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম খোকন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এবিএম মুমিনুল হক ও সাংগঠনিক সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম সিরাজ, যুব বিষয়ক সম্পাদক মনির হোসেন ও দপ্তর সম্পাদক জহিরুল ইসলাম লিটনসহ জেলা বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী ও স্থানীয় বিভিন্ন প্রিন্ট, ইলেক্ট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন