জামায়াত মনোনিত ঢাকা-১৫ আসনে ধানের শীষের নির্বাচনী কার্যালয়ে আ’লীগের হামলা-লুটপাট, আটক ১৩

ক্রাইমবার্তা:  ঢাকা : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১৫ নির্বাচনী এলাকার ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী ডা.শফিকুর রহমানের কাফরুল মিতালি হাউজিং এলাকায় অবস্থিত নির্বাচনী কার্যালয়ে ভাঙচুর চালানো হয়। জানা গেছে, গতকাল (রবিবার) ২৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৭টায় পুলিশের সহযোগিতায় আওয়ামী লীগের ২৫/৩০জন কর্মী হামলা চালিয়ে ভাংচুর, লুটপাট করে। সেখান থেকে তারা ১৭টি কেন্দ্রের ভোটার স্লিপ, ৫০ হাজার লিফলেট, ২৫ হাজার পোস্টার, ৩টি কম্পিউটার এবং নির্বাচনের প্রচার কাজের জন্য অফিসে রক্ষিত লক্ষাধিক টাকা লুট করে নিয়ে যায়।

অফিসে নির্বাচনী প্রস্তুতি কাজে ব্যস্ত স্থানীয় নির্বাচনী এজেন্ট দেলোয়ার হোসেন,বোরহান আলী, মোঃ রিফাজ, মাওলানা তাজুল ইসলাম, আঃ সবুর ফরহাদ, নাজমুল হাসান খান, মাসুদুর রহমান ও আল মামুনকে ব্যাপক মারধর করে সেখান থেকে আটক করে নিয়ে যায় তারা। নির্বাচনী কর্মীদের আটক, লুটপাটের প্রতিকার চেয়ে ঢাকা-১৫ আসনের ধানের শীষের নির্বাচনী এজেন্ট লস্কর মুহাম্মাদ তসলিম আজ বিকাল ৪টায় সেগুন বাগিচাস্থ ঢাকা রিটার্নিং অফিসারের কাছে আইনানুগ ব্যবস্থার দাবি জানিয়ে অভিযোগ দায়ের করেছেন।

এতে উপস্থিত ছিলেন-সুপ্রিম কোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবী এ এস এম কামাল উদ্দিন, আইনজীবী মু. মঈন উদ্দিন, এস এম লুৎফুর রহমান আজাদ, ঢাকা মহানগর উত্তর জামায়াতের মজলিশে শুরা সদস্য মুহম্মদ আতাউর রহমান সরকার, এডভোকেট হাবিবুর রহমান, এডভোকেট এ বি সিদ্দিক হিল্লোল, এডভোকেট ওয়াজিদ শরীফ, এডভোকেট সাইদুর রহমান প্রমুখ।

রিটার্নিং অফিসার ছুটিতে থাকায় ঢাকা অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার ও অতিরিক্ত রিটার্নিং অফিসার তারিকুল ইসলাম অভিযোগটি গ্রহণ করেন।

ঢাকা-১৫ আসনে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের কোনো পরিবেশ নেই -ডা. শফিকুর রহমান

জাতীয় সংসদের ঢাকা-১৫ আসনে ২০-দলীয় জোটের মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আমার নির্বাচনী এলাকা ঢাকা-১৫ আসনে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের কোনো পরিবেশ নেই। এ আসনে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টির জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান।

গতকাল রোববার দেয়া বিবৃতিতে তিনি বলেন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকেই আমার নির্বাচনী এলাকা ঢাকা-১৫ আসনে সরকারের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সরকারী দলের মনোনীত প্রার্থীর সন্ত্রাসী বাহিনী ব্যাপকভাবে সন্ত্রাস ও সহিংসতা সৃষ্টি করছে। এ এলাকায় আমার নির্বাচনী কর্মীদের সরকারের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সরকারী দলের সন্ত্রাসীরা নির্বাচনী প্রচারণায় বাধা দিচ্ছে, গ্রেফতার করছে, গুম করছে, বাড়িতে বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর করছে এবং জনগণকে হুমকি দিচ্ছে। পোস্টার লাগাতে ও প্রচারপত্র বিলি করতে দিচ্ছে না।
তিনি বলেন, আমার নির্বাচনী সমন্বয়ক ড. রেজাউল করিমকে তার গাড়ীর ড্রাইভারসহ গ্রেফতার, বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. আবদুল হালিম, নির্বাচনী কর্মী নজরুল ইসলাম, আমীর হামজা সোহাগ, হাসিনা বেগম, আবিদা বেগম ও নজরুল ইসলামকে অপহরণ করে গুম করে রাখা হয়েছে। তাদের কোনো খবর পাওয়া যাচ্ছে না। ঢাকা মহানগরী উত্তর শাখা বিএনপির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক রেজাউর রহমান তপনসহ ৪ জন যুবদল নেতাকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। ২১ ডিসেম্বর ছাত্রদলের ২ জন কর্মীকে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা নির্দয়ভাবে প্রহার করে তাদের বাড়ি-ঘর ভাঙচুর করেছে। এভাবে ঢাকা-১৫ আসনের সর্বত্র চলছে সন্ত্রাসী তা-ব। এ রকম একটি নৈরাজ্যজনক অবস্থায় ঐ আসনে কিভাবে জনগণ ভোট কেন্দ্রে যাবে এবং ভোট দিবে? এ থেকে পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে যে সরকারী দলের পায়ের নিচে মাটি নেই। নির্বাচনে শোচনীয়ভাবে পরাজিত হওয়ার আশঙ্কায় নির্বাচন বানচালের জন্য সরকার পরিকল্পিতভাবে যে ষড়যন্ত্র করছে, তারই অংশ হিসেবে ঢাকা-১৫ আসনসহ সারা দেশে সরকারের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সরকারী দলের সন্ত্রাসীরা ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচনের পরিবেশ ধ্বংস করে দেশকে নৈরাজ্যের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। দেশকে এ নৈরাজন্যজনক অবস্থা থেকে উদ্ধার করার একমাত্র পথ হল অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করা।
তাই ঢাকা-১৫ আসনসহ সারা দেশে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে ঢাকা-১৫ আসনে নির্বাচনী সমন্বয়ক ড. মুহাম্মাদ রেজাউল করিমসহ সারা দেশে ২০-দলীয় জোটের গ্রেফতারকৃত সকল নেতা-কর্মীকে অবিলম্বে মুক্তি দেয়ার জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান।

Check Also

গাড়িচাপায় বুয়েট শিক্ষার্থী মাসুদের মৃত্যু ‘হত্যাকাণ্ড’

প্রাইভেটকার চাপায় বুয়েট শিক্ষার্থী মুহতাসিম মাসুদের মৃত্যুকে ‘হত্যাকাণ্ড’ বর্ণনা করে দায়ীদের সর্বোচ্চ শাস্তিসহ ৬ দফা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।