ক্রাইমর্বাতা রিপোট: সচিবালয়ে এসে নিজ নিজ কর্মস্থলে যোগ দিয়েই নিজেদের পরিকল্পনা তুলে ধরলেন একাদশ জাতীয় সংসদের মন্ত্রীরা। মঙ্গলবার ছিল মন্ত্রীদের প্রথম কার্যদিবস। সকাল ১০টায় ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে গিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পন করেন। এরপর যান সাভারের জাতীয় স্মৃতি সৌধে। সেখান পুষ্পস্তবক অর্পণের পর ফিরে এসে যোগ দেন সচিবালয়ের নিজ নিজ দপ্তরে। এসময় শুভেচ্ছা জানান দপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীরা। এরপর গণমাধ্যমের সাথে কথা বলেন মন্ত্রীরা। তারা সবাই নিজ নিজ মন্ত্রণালয়ের আগামি দিনের পরিকল্পনা কি হতে পারে এবং চ্যালেঞ্জ গুলো কি তার সম্পর্কে সাংবাদিকদের অবহিত করেন।
গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম নিজ কর্মস্থলে যোগ দিয়ে সাংবাদিকদের মূখোমুখি হন। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দুর্নীতি ও অনিয়মের জায়গায় শক্তিশালী অবস্থানে বিশ্বাস করি। কেবিনেটের সদস্য হিসেবে দুর্নীতিতে জিরো টলারেন্স থাকবে। তবে গৎবাঁধা অনেক অভিযোগ কিন্তু শেষ পর্যন্ত প্রমাণ হয় না। সুনির্দিষ্টভাবে অভিযোগ উত্থাপিত হলে শুধু সমাধান নয় যারা সম্পৃক্ত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেব এবং সেটা অবশ্যই আইনানুগ প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে।
পূর্তমন্ত্রী বলেন, যে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব আমাকে দেয়া হয়েছে সেটা বড় মন্ত্রণালয়। এর ১২টি অর্গান রয়েছে। এখানে কাজের পরিসর অনেক বড়। আমার বিশ্বাস মন্ত্রণালয়ের সকলকে নিয়ে আগের চেয়ে গতি আরও বৃদ্ধি করতে পারব। আমি আইন পেশায় আসার আগে সংবাদ মাধ্যমে ছিলাম। সংবাদ মাধ্যমের জন্য প্রচণ্ড ভালোবাসা আমার রয়েছে। আমাদের কোনো ত্রুটি বিচ্যুতি থাকলে ধরিয়ে দেবেন, আমরা সংশোধন করার চেষ্টা করবো।
খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, সততার সাথে কাজ করতে চাই। আগে কী ছিল, কেমন ছিল, সেটা বিষয় নয়। আমরা কীভাবে চালাবো, এটাই বিষয়। অভিজ্ঞতা ও স্বচ্ছতা নিয়ে নির্বাচনি ইশতেহার বাস্তবায়নে করতে চাই। খাদ্য মন্ত্রণালয় চালাতে সবার সহযোগিতা চাই। সততা নিয়ে কাজ করেছি। রাজনীতি করেছি বলে আজ এই জায়গায় আসতে পেরেছি।
সততার সাথে কর্মকর্তাদের কাজ করার আহ্বান জানিযে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, আমি যেন অহঙ্কারী না হই এবং সততা বিসর্জন না দেই, আমাদের যেন কোনো দুর্নাম না হয়, এজন্য আপনাদেরও সততার সঙ্গে কাজ করতে হবে। চালের দাম বাড়লেও সমস্যা, কমলেও সমস্যা। এ জন্য চালকল মালিকদের সঙ্গে তিনি বৈঠক করবেন বলেও তিনি জানান।
শ্রম কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান বলেন, সবাই নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করলে সরকারের লক্ষ্য বাস্তবায়নে শ্রম মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।
প্রতিমন্ত্রী খুলনার খালিশপুরে বন্ধ নিউজপ্রিন্ট মিল ও জুট মিলসহ অন্য বন্ধ কলকারখানাগুলো চালুর উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এছাড়া আদমজী জুট মিলের অব্যবহৃত জায়গা শিল্প-কারখানার কাজে লাগানোর চেষ্টা করবেন বলেও জানান।
অনুষ্ঠানে মন্ত্রণালয়ের সচিব আফরোজা খান, অতিরিক্ত সচিব সৈয়দ আহম্মদ, আশরাফ শামীমসহ মন্ত্রণালয় ও মন্ত্রণালয়ের অধীনস্ত অধিদপ্তরগুলোর প্রধানসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, আমি পাটকে ব্র্যান্ডিং করার চেষ্টা করবো। প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টিকতে হলে অবশ্যই দাম কমাতে হবে। এই প্রতিযোগিতামূলক বাজারে দাম বেশি থাকলে তো মার্কেটে টিকবে না।
সদ্য বিদায়ী মন্ত্রীর দেখানো পথে রেখে যাওয়া কাজগুলো দ্রুত এগিয়ে নেওয়ার ইচ্ছে ব্যক্ত করে মন্ত্রী বলেন, ওনারা যে কাজ রেখে গেছেন সেই ধারাবাহিকতা রক্ষা করেই এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। তাছাড়া দেশের স্বার্থে, মানুষের স্বার্থে যেটা ভালো হয় সেটাই করবো।
নিজেকে শিল্পের লোক দাবি করে মন্ত্রী বলেন, যেহেতু আমি শিল্পের লোক পাটও একটি শিল্প। আমার অভিজ্ঞতা দিয়ে কীভাবে এই সেক্টরের কাজ দ্রুত এগিয়ে নেওয়া যায় সেই চেষ্টা করবো।
তিনি বলেন, নতুন প্রজন্ম আসাদের দিকে চেয়ে আছেন। তাদের ক্ষেত্র তৈরি করতে হবে। এই সেক্টরে অনেক কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে। তাই কীভাবে বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়ানো যায় সেই চেষ্টা করবো। সরকার ঘোষিত ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার যে প্রত্যয় সেটাকে কীভাবে আরো আগে লক্ষ্যে পৌঁছাতে চাই