নতুন নির্বাচন দাবিতে জাতীয় সংলাপ – ঐক্য রেখেই এগোবে ঐক্যফ্রন্ট

ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ    ঐক্য অটুট রেখেই এগোতে চায় একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে গঠিত নতুন রাজনৈতিক জোট ঐক্যফ্রন্ট। ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে অপ্রত্যাশিত ফলাফলের পর তাদের রাজনৈতিক কৌশল নিয়ে বিভিন্ন মহলে যে সমালোচনা হচ্ছে, তাতে ফ্রন্টের নেতারা এই মুহূর্তে কানো দিতে চান না। তারা বলছেন, এত বড় অনিয়মের একটি নির্বাচন ‘ধামাচাপা’ দিতেই ঐক্যফ্রন্টকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা চলছে। কিন্তু তাদের হাতে নির্বাচনে অনিয়মের যথেষ্ট তথ্য-উপাত্ত রয়েছে। এসব তথ্য নিয়ে জনমত গড়ে তোলা হবে। নতুন নির্বাচনের যে দাবি তারা তুলেছেন, সামনের দিনগুলোয় তা আরো প্রবল হবে।

জানা গেছে, অনুষ্ঠিত নির্বাচন নিয়ে আগামী ২৮ জানুয়ারি রাজনৈতিক দলসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার প্রতিনিধিদের নিয়ে জাতীয় সংলাপ করবে ঐক্যফ্রন্ট। ওই সংলাপের পর পরবর্তী কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম পরামর্শক ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, ৩০ ডিসেম্বর দেশে কী হয়েছে সেটি আমরা কেন, দেশের সবাই দেখেছে। একে কোনোভাবেই নির্বাচন বলা যায় না। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মূল দাবি হচ্ছে ৩০ ডিসেম্বর দেশে যেহেতু অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন আদায় করা।

তিনি জানান, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নতুন নির্বাচন আদায়ের জন্য বেশ কিছু কর্মসূচি নিয়েছে। আগামী ২৮ জানুয়ারি এই বিষয়ে করণীয় জানতে জাতীয় সংলাপের আয়োজন করা হয়েছে। প্রেস ক্লাবের অডিটোরিয়ামে এ সংলাপে ফ্রন্ট সে সম্পর্কে আরো স্বচ্ছ ধারণা নেবে।

নেতারা বলেছেন, সব রাজনৈতিক দলের কাছে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন আদাই করাই ঐক্যফ্রন্টের এখন মূল লক্ষ্য। এজন্য তারা সব ধরনের রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাবে। আগামী ২ থেকে ৩ মাসের মধ্যেই একটি নতুন নির্বাচন তাদের দাবি।

অনিয়মের দাবি করলেও এর প্রতিবাদে উত্তপ্ত কোনো কর্মসূচিতে যায়নি ঐক্যফ্রন্ট। তারা প্রাথমিকভাবে জাতীয় সংলাপ, নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে মামলা এবং নির্বাচনে ক্ষতিগ্রস্ত জেলা পরিদর্শন ও নেতাকর্মীদের পাশে দাঁড়ানোর মতো কর্মসূচি দেয়। জেলা সফরের অংশ হিসেবে গতকাল সোমবার স্টিয়ারিং কমিটির নেতারা সিলেটের বালাগঞ্জে গিয়েছেন। আরো কয়েকটি জেলায় যাওয়ার পরিকল্পনা তারা করছেন। আর ট্রাইব্যুনালে মামলা বিষয়ে বেশ অগ্রগতি হয়েছে বলে জানা গেছে।

ডা: জাফরুল্লাহ বলেন, ৩ শ’ আসনের তথ্য প্রমাণ জোগার করা বেশ সময়সাপেক্ষ। এরপরও আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছি। এর বেশ অগ্রগতিও হয়েছে। কাজ প্রায় শেষপর্যায়ে। চূড়ান্ত হলেই আমরা মামলা করব।

তবে এসব কর্মসূচি নিয়ে সোচ্চার হওয়ার পাশাপাশি ঐক্যফ্রন্টের ঐক্য ধরে রাখাও এখন বেশ গুরুত্ব পাচ্ছে। বিএনপির অভ্যন্তরে ঐক্যফ্রন্টকে সাথে নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণের কৌশল নিয়ে সমালোচনা রয়েছে। কয়েক দিন আগে ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক জামায়াতে ইসলামীর বিষয়ে একটি পর্যবেক্ষণ দিয়েছে ঐক্যফ্রন্টের শরিক গণফোরাম। এই ইস্যুতে টানাপড়েনের আশঙ্কা করা হলেও এখনো পর্যন্ত সে ধরনের কোনো আভাস পাওয়া যায়নি। বিএনপির সিনিয়র কোনো নেতাই এই ইস্যুকে তেমন বড় করে দেখছেন না। তারা এক কাতারে থেকে ফের অনিয়মের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার ওপরই এখন জোর দিতে চাচ্ছেন।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমাদের ঐক্য অটুট আছে। রাজনৈতিক দলগুলোর পরস্পরের কিছুটা অমিল থাকতেই পারে, এটাই স্বাভাবিক; কিন্তু ঐক্যফ্রন্টের মধ্যে কোনো ঝামেলা নেই

Check Also

তাবলীগ জামায়াতের সাদপন্থীদের নিষিদ্ধের দাবিতে সাতক্ষীরায় বিক্ষোভ-সমাবেশ

মুহাম্মদ হাফিজ, সাতক্ষীরা : তাবলীগ জামাতে সাদপন্থীদের বর্বোরিচত হামলার প্রতিবাদ ও সাতক্ষীরা জেলা আ.লীগের সহসভাপতি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।