৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে আমার আবার মনে হয়েছে বঙ্গবন্ধু আবারও আমাদের মাঝে ফিরে এসেছেন

ক্রাইমবার্তা ডেস্করিপোটঃ    একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ১৯ দিন পর শনিবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিজয় সমাবেশ করেছে আওয়ামী লীগ। এখানে অন্যান্য নেতাদের পাশাপাশি বক্তব্য রেখেছেন নতুন মন্ত্রী সভায় স্থান না পাওয়া আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতারা। এই নেতাদের মধ্যে যারা বিগত সরকারের আমলে মন্ত্রী ছিলেন, তাদের বক্তব্য এখানে উপস্থাপন করা হলো;-

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে বিজয় সমাবেশে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতারা। সমাবেশে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘৩০ ডিসেম্বরের জন্য মানুষ অপেক্ষা করেছিল। এবার সংসদ হবে জামায়াত ও খুনিমুক্ত।’

সাবেক বাণিজ্য মন্ত্রী বলেন, ‘যারা খুনিদের সাথে আঁতাত করেছিল, জামায়াতের সাথে ঐক্য করেছিল; মানুষ তাদের ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে। দেশবাসী ১৯৭০ সালের মতো নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করার দায়িত্ব দিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘১৯৭০ সালের নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু শুধু বিজয়ীই হন নাই, নির্বাচনের দিন তিনি (বঙ্গবন্ধু) সাংবাদিকদের বলেছিলেন ‘আমি অবাক হব, যদি আমি দুটি আসনে হেরে যাই’। সত্যিই ওই দিন শুধু দুটি আসনেই তিনি হেরেছিলেন। ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে আমার আবার মনে হয়েছে বঙ্গবন্ধু আবারও আমাদের মাঝে ফিরে এসেছেন।’

প্রবীণ এ নেতা আরও বলেন, ‘৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে বাংলার মানুষ উন্নয়নের পক্ষে ভোট দিয়েছে। গ্রামের মানুষ, মা-বোন ঐক্যবদ্ধ হয়ে সারিবদ্ধভাবে ভোট দিয়েছে। জিজ্ঞেস করেছিলাম-মা কেন, আপনি ভোট দিতে এসেছেন? বলেছিলেন ‘শেখ হাসিনা আমাদের বয়স্ক ভাতাও দিচ্ছে’।

সমাবেশে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য সাবেক শিল্পমন্ত্রী  আমির হোসেন আমু বলেন, ‘আজ একটি ঐতিহাসিক দিন। বিগত ৩০ ডিসেম্বর প্রত্যেকটি জেলায় বাংলার মানুষ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিজয়ী হয়েছে। সেই বিজয় উপলক্ষে আজকের এ সমাবেশ। ১৯৭০ সালের ডিসেম্বরে পাকিস্তানের নির্যাতন-নিষ্পেষণের বিরুদ্ধে বাংলার মানুষের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক মুক্তির যে রায় নির্বাচনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকে দেয়া হয়েছিল, তা বাস্তবায়ন করার সুযোগ না দিয়ে সেই বাংলার নিরস্ত্র মানুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিল। বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে ত্রিশ লাখ মানুষের প্রাণের বিনিময়ে ১৯৭১ সালের ডিসেম্বরে বিজয় অর্জন হয়েছিল। বিজয়ের মাসে আরেক বিজয়ের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর অসামপ্ত কাজ অর্থনৈতিক মুক্তিকে তিনি (শেখ হাসিনা) সম্পন্ন করতে যাচ্ছেন।’

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সাবেক কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘আমি এ বিজয়কে অভিহিত করতে চায়, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নের অদম্য আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে মানুষ শেখ হাসিনাকে দায়িত্ব দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর কন্যা যে দীর্ঘপথকে পাড়ি দিয়ে বাংলার মানুষকে আলোর দিন উপহার দিয়েছেন। এ বিজয়কে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে মানবতার বিজয় বলে ঘোষণা করা যেতে পারে। বছরের প্রথম দিন যে গ্রামে গ্রামে শিশুদের মাঝে নতুন বই উপহার দেয়া হয়, এ বিজয় তার প্রতিফলন। কমিউনিটি ক্লিনিকের সেবার বিনিময়ে এ বিজয়।’

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘যারা নির্বাচনে হেরে গেছে, যারা লড়াইয়ের মাঠে হেরে গেছে তারা আর ঘুরে দাঁড়াতে পারে না। বাংলার জনগণ মনে করে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছেন তারা।’

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাবেক এলজিইডি প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘যারা ৩০ ডিসেম্বরে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করে, তারা কারা? তারা স্বাধীনতাবিরোধী, যুদ্ধাপরাধীর পক্ষ। ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার পরিকল্পনাকারী, হাওয়া ভবন সৃষ্টি করে দুর্নীতি ও লুটপাটকারী এবং দেশের টাকা বিদেশে পাচারকারী বিএনপি নেতা তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর দাবি জানাচ্ছি।’

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে বিজয় সমাবেশের আলোচনা পর্ব যৌথভাবে সঞ্চালন করেন দলটির প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ এবং উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন।

 

Check Also

সাতক্ষীরায় পুত্রবধূর হাতে নির্যাতিত সেই স্কুলশিক্ষক মারা গেছেন

ক্রাইমবাতা রিপোট, সাতক্ষীরা:   ছেলে ও পুত্রবধূর হাতে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের শিকার সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বাঁশতলা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।