সেখানে বছরখানেক চাকরি করে ‘বিডি কলিং ওয়েবসাইট ডিজাইন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানে ডেভেলপার হিসেবে যোগ দনে।পরে চাকরি ছেড়ে দেখতে কিছুটা ভেড়ার মতো গাড়ল খামার করে মেহেদী এখন স্বাবলম্বী।
গাড়লের খামার গড়াও লাভজনক।
প্রাণিটির মাংস কিন্ত বেশ সুস্বাদু।
গাড়ল সুন্দরবন অঞ্চলের একটি ভেড়ার জাত। এগুলো দেখতে সাধারণ ভেড়ার মতো,তবে আকারে খানকিটা বড়।
গাড়ল নোনা পানি অঞ্চলে সহজে মানিয়ে নেয় এবং খুব শক্ত প্রকৃতির। আর লেজ লম্বা। আকারে বড় ভেড়াগুলো আসলে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নাগপুর অঞ্চলের ছোটানাগপুরি জাতের ভেড়ার সঙ্গে আমাদের দেশি ভেড়ার ক্রস ব্রিড। এই ক্রস ব্রিডের নামকরণ করা হয় ‘গাড়ল’।
ভালো যত্ন পেলে গাড়ল ৭-৮ মাস পর পর একটি করে বাচ্চা দেয়। বাণিজ্যিক ভাবে শুধু আদি জাতের গাড়ল পালন করা লাভজনক হয় না। অল্প কিছু আদি জাতের গাড়ল আর বেশি সংখ্যক ক্রস গাড়ল দিয়ে খামার করলে লাভবান হওয়া যাবে।
বাণিজ্যিক ভাবে দেশের বিভিন্ন জেলায় ছোট-বড় বেশ কিছু গাড়লের খামার গড়ে উঠছে।
গাড়লের মাংস অত্যন্ত সুস্বাদু এবং স্বাস্থ্যকর। গরু-ছাগলের মাংসে যেসব ক্ষতিকর দিক রয়েছে, গাড়লের মাংস সেগুলো থেকে মুক্ত। ভেড়া খুব ভালো অনুসারী। র্অথাৎ পালের প্রথম ভেড়া যেদিকে যাবে,তাকেই অনুসরণ করবে অন্যগুলো। একই বৈশিষ্ট্য গাড়লের ও। কাজেই গাড়ল পালন অনেক সহজ।
সংশ্লিষ্টদের অভিমত, বাণিজ্যিক ভাবে দেশে বেশি বেশি গাড়লের খামার গড়ে উঠলে মাংসের চাহদিা পূরণ করে বিদেশে রফতানি করাও সম্ভব হবে।
গাড়ল সাধারণত কাঁচা ঘাস, খড়, দানাদার খাবার, চিটাগুড়, পানিসহ নানা ধরনের খাদ্য খেয়ে থাকে। অন্যান্য গৃহপালিত পশু থেকে গাড়ল খাদ্য খুব কম নষ্ট করে।
(কম্পিউটার প্রকৌশল বিজ্ঞানে উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণ করে ঢাকার হেমায়েতপুরে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ শুরু করেন মেহেদী হাসান।
সেখানে বছরখানেক চাকরি করে ‘বিডি কলিং ওয়েবসাইট ডিজাইন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানে ডেভেলপার হিসেবে যোগ দনে। পরে চাকরি ছেড়ে দেখতে কিছুটা ভেড়ার মতো গাড়ল খামার করে মেহেদী এখন স্বাবলম্বী।
যশোরের বেনাপোল র্পোট থানার শিকড়ী গ্রামের আঃ কাদেরের ছেলে তিনি।
নিজ গ্রামে এসে বিদেশি প্রজাতির গাড়ল চাষ শুরু করেছিলেন মেহেদী।২০১৮ সালের জুন মাসে মেহেরপুর আট কবর এলাকা থেকে দুটি গাড়লের বাচ্চা ১৫ হাজার টাকায় কিনে শুরু করেন এই খটাল।
এরপর ভারতের নাগপুর, কলিকাতা ও রাজস্থন থেকে আরো ৩৫টি ক্রস গাড়ল সংগ্রহ করেছে।
র্বতমানে তার খামারে রয়েছে ৯০/১০০ টি গাড়ল রয়েছে।
তার প্রথম কেনা একটি গাড়ল চার মাস লালন-পালনের পর ১৭ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন।
গাড়ল পালন অত্যন্ত সহজ। এরা যে কোন পরিবেশে জীবন যাপন করতে পারে।রোগ-ব্যাধি অত্যন্ত কম। বাজারে গাড়লের চাহিদাও অনেক।
একটি ৩-৪ মাস বয়সী গাড়লের দাম ৫-৬ হাজার টাকা।র্পূণবয়স্ক গাড়লের ওজন ৬০ থেকে ৮০ কেজি র্পযন্ত হয়।গাড়লের মাংসের দাম প্রতি কেজি ৮০০ থেকে এক হাজার টাকা।প্রতি ছয় মাস পর পর মা,গাড়লের বাচ্চা হয়।
এরা একবারে দুটি থেকে চারটি র্পযন্ত বাচ্চা দিয়ে থাকে।
বছরে চার বার কৃমির বড়ি আর দুইবার পিপিআর টিকা দিলে খামার রোগমুক্ত থাকে।
উপজেলা পশুসম্পদ অফিসে যোগাযোগ করলে বিভিন্ন টিকা বিনামূল্যে মেলে।
মেহেদী জানান,আগামী এক বছরে তার খামারে দুইশ থেকে তিনশ গাড়ল উৎপাদন হবে।তার খামারে তিনি ও বাড়ির লোক বাদে বেতনভুক্ত দুইজন কাজ করেন। যারা শিক্ষিত হয়ে চাকরি না পেয়ে হতাশায় ভুগছেন, তারা সহজে গাড়লের খামার করে স্বাবলম্বী হতে পারেন বলে মনে করেন মেহেদী।
এ ব্যাপারে র্শাশা উপজেলা প্রাণিসম্পদ র্কমর্কতা ডা. জয়দেবকুমার সিংহ জানান, যশোরের র্শাশাও বেনাপোলে গাড়ল খামার করে স্বাবলম্বী হয়েছেন অনেকে।এতে র্কমসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি পুষ্টির চাহিদা পূরণ হচ্ছে।পুষ্টির উৎস হিসেবে গাড়লের গুরুত্ব গরু-ছাগলের চেয়ে কোনো অংশেই কম নয়।
এ কারণে গাড়ল খামারের প্রতি আরো অনেকেই আগ্রহী হচ্ছেন।বাণিজ্যিক ও পারিবারিকভাবে গাড়ল খামার হওয়ায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মানুষ এখান থেকে গাড়লের বাচ্চা সংগ্রহ করছনে। #