প্রধানমন্ত্রী কিন্তু লাইন ক্রস করে ফেলেছেন : পরিকল্পনামন্ত্রী

ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ ঢাকা: পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, ‘আমরা কেউ মানি আর না মানি, প্রধানমন্ত্রী কিন্তু লাইন ক্রস করে ফেলেছেন। তার বাবাও লাইন ক্রস করেছিলেন, এবার তিনিও করেছেন। এটা সবাই জানেন, সূর্যের মতো সত্যি।’
সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর মহাখালীতে অবস্থিত ব্র্যাক সেন্টারে ‘ইনোভেশনস ইন পাবলিক সার্ভিস ডেলিভারি’ শীর্ষক এক কর্মশালায় এ মন্তব্য করেন মন্ত্রী।
প্রথম এ বিষয়টি ব্যাখ্যা করে এম এ মান্নান বলেন, ‘তার বাবা লাইন ক্রস করেছিলেন এবং আমাদের ভূমিতে বসিয়ে দিয়ে গেছিলেন (দেশ স্বাধীন)। এটা আমাদের ছিল না, অ্যাবসুলেটলি। আর প্রধানমন্ত্রী লাইন ক্রস করেছেন – দারিদ্র্যের লাইন, অজ্ঞতার লাইন, কুসংস্কারের লাইন। পেছনে থাকার যে একটা মানসিক শেকড় আছে, আমাদের মধ্যে সেগুলোকে ভেঙে একুশ শতকে ঢোকার যে পথ আছে, সম্ভাবনা আছে, সেইদিকে তিনি কাজ করেছেন।’
অচলায়তনকে ভেঙে প্রধানমন্ত্রী দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন উল্লেখ করে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘তার সঙ্গে আমার প্রচুর অভিজ্ঞতা আছে। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাজ করে লক্ষ্য করেছি, তার মধ্যে সেই সাহস আছে, অভিজ্ঞতা আছে এবং এক ধরনের স্পৃহা আছে। ১০ বছর তার সঙ্গে কাজ করেছি। বিশ্বাস করুন, কোনো সভায় তিনি দেরিতে আসেন না। দু-একটাতে দেরি হয়েছে, সেগুলো তিনি জানিয়ে দিয়েছেন অথবা বলেছেন, হবে না। এটা সামান্য একটা উদাহরণ দিলাম। তার ভেতরে কী ধরনের সিরিয়াসনেস, কমিটমেন্ট এবং অচলাতয়তন ভেঙে কোনো কিছু তৈরি করার, আমাদের জন্য এটা খুবই প্রয়োজন ছিল। মনে হতে পারে, অনেক বেশি করে বলছি। কিন্তু এটা ফ্যাক্ট।’

‘সুশাসনের চেয়ে উন্নয়ন এক কদম আগে গেলে খুশি’
সুশাসনের চেয়ে উন্নয়ন এক কদম আগে গেলে খুশি হবেন বলে মন্তব্য করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
তিনি বলেন, ‘গভর্নেন্স (সুশাসন) ও ডেভেলপমেন্ট (উন্নয়ন), দুটোরই প্রয়োজন আছে। বর্তমান সময়ে ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড গর্ভনেন্স দুটোর পাশাপাশি যাওয়া উচিত। পাশাপাশি গেলেও ডেভেলপমেন্ট যদি এক কদম আগে যায়, আমরা অখুশি হব না। কারণ আন্ডার ডেভেলপমেন্টই আমাদের মূল সমস্যা। এটাকে অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। কারণ ৭০ থেকে ৮০ ভাগ মানুষ ওই দিকে বসবাস করেন। প্রায় ৭০ ভাগ মানুষ দিন আনে দিন খায়। মোটামুটি তারা একটা রশি পেয়েছেন, কিন্তু রশিটা অত্যন্ত দুর্বল। যেকোনো সময় ছিঁড়ে যেতে পারে। এটাকে শক্ত করা আমাদের কাজ।’
অনুষ্ঠানে আরও রক্তব্য রাখেন সংসদ সদস্য নাহিম রাজ্জাক, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আতিকুর রহমান, রাশেদা কে চৌধুরী ও ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গর্ভনেন্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (বিআইজিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইমরান মতিন।
এ সময় রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, ‘সরকারি সেবায় তৃতীয় পক্ষের মনিটর খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এখানে তৃতীয় পক্ষের মেকানিজমের ক্ষেত্রে কোথায় যেন গুরুত্ব থাকে না। সাধারণ মানুষের জন্য মানসম্মত সেবা, যার সঙ্গে মানবাধিকার যুক্ত, তা নিশ্চিত করতে হবে।’
তৃতীয় পক্ষের নজরদারি আরও প্রসারিত করার ইঙ্গিত দিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘আমার উপজেলায় যে দুটো হাসপাতাল আছে, সেখানে তাদের পারফরম্যান্স ভালো না। আমি যখন আমার বন্ধুদের জিজ্ঞাসা করি, তারা বলেন, চিকিৎসকদের হাসপাতালে পান না। আমি যখন যাই, তখন তারা তাড়াতাড়ি আসেন, আর না হলে সেখানে তারা যান না। এগুলো জাতিগত অভ্যাস মনে হয়। এ বিষয়গুলোও আপনারা মনিটরিং করতে পারেন।

Check Also

ঢাকা প্রসঙ্গে বদলাতে পারে ভারতের পররাষ্ট্রনীতি

পাঁচ দশকের বিরতির পর গত মাসে বাংলাদেশের বন্দর নগরী চট্টগ্রামে একটি পাকিস্তানি পণ্যবাহী জাহাজ ডক …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।