দেশের চারটি জেলায় পৃথক ‘বন্দুকযুদ্ধে’ চারজন নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার গভীর রাত ও আজ শুক্রবার ভোরে এসব বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। জেলাগুলো হলো কুমিল্লা, ময়মনসিংহ, কক্সবাজার ও খুলনা।
ময়মনসিংহ
আমাদের ময়মনসিংহ অফিস জানায়, ডিবি পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে একজন নিহত হয়েছে। পুলিশের দাবি, নিহত রশিদ একজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। তার বিরুদ্ধে মাদক, বিস্ফোরকসহ একাধিক মামলা রয়েছে।
গোয়েন্দা পুলিশের ওসি শাহ কামাল আকন্দ জানান, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে ময়মনসিংহ শহরের ত্রিশাল বাসস্ট্যান্ড এলাকায় কিছু মাদক ব্যবসায়ী মাদক কেনা-বেচা করছে এমন গোপন সংবাদে সেখানে অভিযান চালায় পুলিশ। এ সময় পুলিশকে লক্ষ্যে করে মাদক ব্যবসায়ীরা গুলি ছুড়লে পুলিশও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি ছুড়ে। এতে মাদক ব্যবসায়ীরা পালিয়ে যায়। পরে সেখানে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় রশিদ নামের একজনকে পাওয়া যায়। তাকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনাস্থল থেকে একটি পাইপগান ও কিছু হিরোইন উদ্ধার করা হয়। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মেডিকেলের মর্গে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। নিহত রশিদের নামে সাতটি মাদক ও বিস্ফোরক মামলা রয়েছে বলেও জানান তিনি।
কুমিল্লা
কুমিল্লার তিতাসে পুলিশের সাথে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মো: আল-আমিন নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে জেলার তিতাস উপজেলার ঝড়িকান্দি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত আল-আমিন ওই উপজেলার জিয়ারকান্দি ইউনিয়নের নয়াগাঁও গ্রামের মাঈনুদ্দিনের ছেলে।
পুলিশ বলছে, আল-আমিন একজন ডাকাত। এছাড়া ঘটনাস্থল থেকে একটি রিভলবার, একটি এলজি ও ৫ রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, দাউদকান্দির গৌরীপুর বাজারের রিয়াজ ট্রেডের পাঁচজন সেলসম্যান সিএনজি অটোরিকশাযোগে বৃহস্পতিবার সকালে টাকা নিয়ে হোমনা যাওয়ার পথে গৌরীপুর-হোমনা সড়কের তিতাস উপজেলার দড়িকান্দি সেতু অতিক্রম করার সময় একদল ছিনতাইকারী তাদের কাছ থেকে বিকাশ ডিলারের ৫৮ লাখ টাকা ছিনতাই করে। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে আল-আমিনসহ ওই চক্রের ২ সদস্যকে ১৫ লাখ টাকাসহ আটক করে পুলিশ।
এ ঘটনার পর বৃহস্পতিবার রাতে আটক আল-আমিনকে সাথে নিয়ে জেলা ডিবি পুলিশ ও তিতাস থানা পুলিশ অবশিষ্ট টাকা এবং অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে অভিযানে নামে। রাত সাড়ে ৩টার দিকে তিতাসের দড়িকান্দি নামক এলাকায় পৌঁছালে একদল ডাকাত পুলিশের গাড়িতে হামলা চালিয়ে আল-আমিনকে ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা চালায়। এ সময় পুলিশ আত্মরক্ষার্থে গুলি ছুড়লে ডাকাতদল পালিয়ে যায়।
তিতাস থানা পুলিশের ওসি সৈয়দ মোহাম্মদ আহসানুল ইসলাম জানান, ডাকাতদের একটি গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে আল-আমিনের ওপর পড়ে। এতে সে আহত হয়। এ সময় আমরা তাকে প্রথমে তিতাস উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
কক্সবাজার
কক্সবাজারের টেকনাফে র্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নুরুল আলম (৩৫) নামে এক রোহিঙ্গা ডাকাত নিহত হয়েছেন। শুক্রবার ভোর ৫টার দিকে টেকনাফের দমদমিয়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। এ সময় দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগজিন ও ১৩ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।
নুরুল টেকনাফের নয়াপাড়া আনসার ক্যাম্পের অস্ত্র লুট ও আনসার কমান্ডার আলী হোসেন হত্যা মামলার প্রধান আসামি।
কক্সবাজার র্যাব-১৫ এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর মেহেদী হাসান জানান, রাতে র্যাবের একটি টহল দল টেকনাফ দমদমিয়া এলাকায় কিছু লোককে চ্যালেঞ্জ করলে তারা অতর্কিত র্যাবের ওপর গুলিবর্ষণ করে। এ সময় র্যাবও পাল্টা গুলি চালায়। ২৫ থেকে ৩০ মিনিট ধরে চলে দুই পক্ষের গোলাগুলি। এ সময় অন্যরা পালিয়ে গেলেও ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় একজনকে উদ্ধার করা হয়। পরে হাসপাতালে নেয়ার পথে সে মারা যায়। পরে র্যাব রোহিঙ্গা ডাকাত নুরুল আলমের লাশ শনাক্ত করে।’
র্যাব জানতে পারে, টেকনাফের নয়াপাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অবস্থিত আনসার ক্যাম্পের অস্ত্র লুট ও আনসার কমান্ডার আলী হোসেনের হত্যা মামলার প্রধান আসামি এই নুরুল। সে দীর্ঘদিন পলাতক ছিল। নুরুলের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য টেকনাফ থানা পুলিশকে হস্তান্তর করা হয়েছে।
খুলনা
খুলনায় পুলিশের সাথে কথিত বন্দুকযুদ্ধে মাসুদ রানা (৩৫) ওরফে মাসুদ নামে একজন নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ৩টার দিকে নগরীর নিরালা কবরস্থান সংলগ্ন দীঘির পাড় এলাকায় বন্দুকযুদ্ধের এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ জানিয়েছে, নিহত মাসুদ খুলনা নগরীর সোনাডাঙ্গা থানার বসুপাড়া এলাকার মৃত আব্দুল হকের ছেলে। তিনি নগরীর কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।
ঘটনাস্থল থেকে ১টি দেশি পাইপগান, ১টি চাপতি, ১টি বড় ছোরা ও ১০০পিস ইয়াবা উদ্ধার করার কথা জানিয়েছে পুলিশ।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) উপ-পুলিশ কমিশনার মনিরুজ্জামান মিঠু জানান, রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নিরালা দীঘির পাড় কবরস্থান এলাকায় মাদক উদ্ধারে অভিযান চালায় সদর খানা পুলিশ। এ সময় পুলিশের সঙ্গে মাদক ব্যবসায়ীদের গোলাগুলিতে মাসুদ রানা নিহত হয়।