ওবায়দুল কাদেরকে দেখতে হাসপাতালে সিঙ্গাপুরের ৪ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক: হাসপাতালে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও স্পিকার

ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ  আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে দেখতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে পৌঁছেছেন সিঙ্গাপুরের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। রাত পৌনে আটটার দিকে একটি এম্বুলেন্সে করে তারা হাসপাতালে পৌঁছান বলে জানিয়েছেন বিএসএমএমইউ’র পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল্লাহ আল হারুন। তিনি জানান, সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতাল থেকে চার জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক প্রতিনিধি দলে এসেছেন।

কাদেরকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও স্পিকার

কাদেরকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও স্পিকার – সংগৃহীত

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে দেখে এলেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।

হৃদরোগে আক্রান্ত ওবায়দুল কাদের রোববার সকাল থেকে এই হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে ভর্তি আছেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, জীবন সঙ্কটে থাকা ওবায়দুল কাদেরকে কৃত্রিমভাবে শ্বাসপ্রশ্বাস দেওয়া হচ্ছে।

রাজশাহীতে সেনাবাহিনীর একটি অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার পর ঢাকা ফিরে বিকাল সাড়ে ৩টায় বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। বিকাল সোয়া ৪টার দিকে তাকে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যেতে দেখা যায়। তার মিনিট দশেক পর বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে পৌঁছে ডি ব্লকের দোতলায় কার্ডিওলজি বিভাগে যান রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। তার পরপরই স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী হাসপাতালে পৌঁছান।

ওবায়দুল কাদেরকে দেখে বিকাল পৌনে ৫টায় হাসপাতাল থেকে ফিরে যান রাষ্ট্রপতি। স্পিকারও তার পরপরই বঙ্গবন্ধু মেডিকেল থেকে বেরিয়ে যান। চিকিৎসকরা বলছেন, ওবায়দুল কাদেরের রক্তনালীতে তিনটি ব্লক ধরা পড়েছে, যার একটি তারা অপসারণ করেছেন। কিন্তু তার অবস্থা সঙ্কটজনক।

উন্নত চিকিৎসার জন্য ওবায়দুল কাদেরকে সিঙ্গাপুরে নেওয়ার প্রস্তুতি চললেও এই শারীরিক অবস্থায় তা সম্ভব হবে কি না- সে বিষয়ে নিশ্চিত নন চিকিৎসকরা।

 ওবায়দুল কাদেরকে যে কারণে হাসপাতালে আনা হয়
ভোরে শ্বাসকষ্ট শুরু হবার পর তাকে দ্রুত শাহবাগের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে আনা হয়। সেখানে আনার পর তার শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি হয় বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। তখন তাকে নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটে স্থানান্তর করা হয়।

হাসপাতালে আনার পর এনজিওগ্রাম করে চিকিৎসকরা তার হৃদযন্ত্রে তিনটি ব্লক চিহ্নিত করেন। হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের প্রধান আহসান সকালে সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, ওবায়দুল কাদেরের অবস্থা স্থিতিশীল হলেও তিনি পুরোপুরি শঙ্কা মুক্ত নন।

তিনি বলেন, ‘ওনার এনজিওগ্রাম করা হয়েছে। এনজিওগ্রামে দেখা গেছে তিনটা নালী ব্লক। একটা নালী খুলে দিছি।’

‘এখন মোটামুটি উনি স্টেবল (স্থিতিশীল) আছে। স্ট্যাবল থাকলেও বলা যাবেনা যে স্ট্যাবল। এটা যে কোন মুহূর্তে আনস্টেবল (অস্থিতিশীল) হয়ে যেতে পারে। এবং হয়ে যেতেও পারে।’

হাসপাতালের ‘আইসিইউতে হার্ট অ্যাটাক’ হয় কাদেরের
এদিকে রোববার দুপুরে ওবায়দুল কাদেরের শারীরিক অবস্থা নিয়ে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কনক কান্তি বড়ুয়া সংবাদ সম্মেলন করেন। এ সময় আওয়ামী লীগের সিনিয়র কয়েকজন নেতা সেখানে উপস্থিতি ছিলেন।

অধ্যাপক বড়ুয়া বলেন, ‘ওনার একটু শ্বাসকষ্ট হয়েছিল। এই শ্বাস কষ্ট নিয়ে আমাদের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে উনি সকাল পৌনে আটটায় আসেন’।

‘আমরা আইসিইউতে নিয়ে যাই। আইসিইউতি চিকিৎসা দিতে দিতেই ওনার একটা হার্ট অ্যাটাক হয়। সে হার্ট অ্যাটাকের জন্য কোথায় কী হলো না হলো সেটা দেখার জন্য এনজিওগ্রাম করা হয়।’

‘এরপর একটা স্ট্যান্টিং করে দেয়া হয়। তার পরবর্তীতে উনি এখন স্ট্যাবল (স্থিতিশীল)।’

আওয়ামী লীগের উপ-দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া জানিয়েছেন, কাদেরের হৃদরোগের কোন ইতিহাস নেই। কাদের ২০১৬ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ২০ তম জাতীয় সম্মেলনে দলের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।

Please follow and like us:

Check Also

ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে সন্তান নিয়ে ট্রেনের নিচে নারীর ঝাঁপ: মারা যান মা-ছেলে

হাজীগঞ্জে এক বছরের সন্তান আব্দুর রহমানকে নিয়ে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দেন মা তাহমিনা (২৩)। এতে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।