সদর এমপি বনাম প্রেসক্লাব: প্রেসক্লাবকে হঠকারী সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার আহবান

ক্রাইমর্বাতা রিপোট:সাতক্ষীরা: : : সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সদর আসনের সংসদ সদস্যকে অবাঞ্ছিত ঘোষণার সিদ্ধান্ত কোনভাবেই কাম্য নয় বলে মনে করছেন জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা। অহেতুক এই ধরনের সিদ্ধান্ত জেলাবাসীর সামগ্রিক উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করবে উল্লেখ করে প্রেসক্লাবকে এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসা উচিত বলে মনে করেন তারা।
এ ব্যাপারে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য মুনসুর আহমেদ বলেন, প্রেসক্লাবে একটি পত্রিকার অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকে কেন্দ্র করে যে পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে- তা কোনভাবেই কাম্য নয়। সংসদ সদস্য ব্যস্ত মানুষ। সংসদ সদেস্যর ওইদিন একই সময়ে অন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রোগ্রাম ছিল। তারপরও পত্রিকার অনুষ্ঠানে তিনি যথাসময়ে হাজির হয়েছেন এবং কেক কেটে প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মমতাজ আহমেদ বাপীকে সাথে নিয়ে মেডিকেল কলেজের একটি সভায় যোগ দেন। কিন্তু পরবর্তীতে ওই অনুষ্ঠানে হাজির হওয়াকে কেন্দ্র করে তার বিরুদ্ধে এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণ অযৌক্তিক। এই সিদ্ধান্ত থেকে তাদের সরে আসতে হবে। তা না হলে জেলাবাসীর সামগ্রিক উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হবে।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম বলেন, যে কোন বিষয়েই আমাদের মধ্যে আন্ডারস্ট্যান্ডিং থাকা বাঞ্ছনীয়। তারপরও কোন কোন ঘটনাকে কেন্দ্র করে জটিলতা তৈরি হতে পারে- এটা স্বাভাবিক। আমি মিডিয়া নেতৃবৃন্দকে অনুরোধ করবো বিষয়টিকে স্থায়িত্ব না দিয়ে দ্রুত সমন্বয় করে নেয়া ভাল। কেননা মিডিয়াও গুরুত্বপূর্ণ রোল প্লে করে। সংসদ সদস্যও গুরুত্বপূর্ণ। তাই এটা দ্রুত সমন্বয় করে নেয়া ভাল।
প্রসঙ্গত, দৈনিক ভোরের ডাক পত্রিকার ২৮তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে কেক কাটাকে কেন্দ্র করে সদর আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবিকে প্রেসক্লাবে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়।
এ প্রসঙ্গে ভোরের ডাকের জেলা প্রতিনিধি মোহাম্মদ আলী সুজন বলেন, আমার অনুষ্ঠানে এমপি সাহেব ব্যস্ততার কারণে আসতে চাননি। তিন মিনিটের জন্য হলেও আমি তাকে অনুষ্ঠানে আসতে অনুরোধ করেছিলাম। বলেছিলাম ভাই কেকটি কেটে আপনি চলে যাবেন। তিনি প্রোগ্রামের সময়সূচি অনুযায়ী উপস্থিত হন এবং একই সময়ে অন্য জায়গা প্রোগ্রাম থাকায় তিনি তাৎক্ষণিক উপস্থিত প্রেসক্লাব সম্পাদক, সাবেক সম্পাদকসহ অন্যান্যদের নিয়ে কেক কেটে চলে যান।
তিনি বলেন, পরবর্তীতে তাকে প্রেসক্লাবের সাধারণ সভায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়। আমি ওই সভায় যায়ওনি, একেবারে শেষে গিয়েছিলাম। তারা তাদের মতো সিদ্ধান্ত নেছে।
এদিকে, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের ওইদিনের ঘটনায় সদর আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবির বিরুদ্ধে অশোভন আচরণের যে অভিযোগ আনা হয়েছে- তা আদৌ সত্য কি না তা দেখার জন্য সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের ২০ মার্চের সিসি টিভির ফুটেজ দেখার আহবান জানিয়েছেন সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবেরই অনেক সদস্যরা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রেসক্লাবের অনেক সদস্য জানান, ঘটনাটি যার মুখ থেকে প্রচার পেয়েছে- তিনি রঙ চঙ লাগিয়ে ছড়িয়েছেন কি না তাও দেখা দরকার।
আবার, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ ঘটনায় প্রেসক্লাবের সিদ্ধান্ত সংক্রান্ত নিউজে অনেক পাঠকই মন্তব্য করেছেন, ভোরের ডাকের অনুষ্ঠানে এমপি প্রধান অতিথি হলে তিনি অন্যান্য অতিথিদের জন্য অপেক্ষা করবেন কেন? তাকে অন্যান্য অতিথিদের জন্য অপেক্ষা করতে বলাটা কতটা শোভনীয় তা আগে ভেবে দেখতে হবে এবং প্রেসক্লাবকে এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে হবে। না হলে সাতক্ষীরার উন্নয়ন কর্মকা- বাধাগ্রস্ত হবে- এটা বলার অপেক্ষা রাখে না।

Check Also

তাবলীগ জামায়াতের সাদপন্থীদের নিষিদ্ধের দাবিতে সাতক্ষীরায় বিক্ষোভ-সমাবেশ

মুহাম্মদ হাফিজ, সাতক্ষীরা : তাবলীগ জামাতে সাদপন্থীদের বর্বোরিচত হামলার প্রতিবাদ ও সাতক্ষীরা জেলা আ.লীগের সহসভাপতি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।