সাতক্ষীরায় ভূমি কর্মকর্তার যোগসাজসে আশ্রয়ণ প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়ম ও দূর্ণীতির অভিযোগ

ক্রাইমবার্তা রিপোটঃসাতক্ষীরা সদরের বাঁশদহা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এসএম মোশাররফ হোসেন ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মুনছুর আলীর যোগসাজসে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পে ব্যপক অনিয়ম ও দূর্ণীতি করেছে বলে অভিযোগ তুলেছেন স্বয়ং ওই ইউনিয়নের ৫ ইউপি সদস্য। সঠিকভাবে ঘর বিতরণের আশায় ওই ৫ ইউপি সদস্য চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত ভাবে অভিযোগ করেছেন।

অভিযোগে তারা উল্লেখ করেছেন, প্রধানমন্ত্রীর অশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় বাঁশদহা ইউনিয়নে ২০ টি ঘর বরাদ্দ হয়। চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন কোন ইউপি সদস্যকে না জানিয়ে ৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১নং ওয়ার্ডে ১৪টি, ২নং ওয়ার্ডে ০৪টি ও ৪নং ওয়ার্ডের ২০ জনকে বরাদ্দ দিয়েছেন। বাকি ৬ টি ওয়ার্ডকে বঞ্চিত করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ওই প্রকল্পের কাজও শুরু হয়েছে।

বাঁশদহার ইউপি সদস্য আব্দুল কাদের ও মহাসিন আলী বলেন, ঘর এসেছে শুনেছি তবে এ ব্যাপারে চেয়ারম্যান আমাদের কিছুই জানায় নি। চেয়ারম্যান তার ইচ্ছামতো ১, ২, ও ৪নং ওয়ার্ডের ২০ জনের মাঝে বিতরণ করেছে। চেয়ারম্যানের চাহিদামতো আমরা টাকা দেবো না বলে চেয়ারম্যান আমাদের কিছুই জানায় নি।

এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের এক নেতা জানান, ৩/৪ লাখ টাকার উন্নতমানের ঘর দেওয়ার কথা বলে চেয়ারম্যান ওই তিন ওয়ার্ডের মেম্বরদের মাধ্যমে ঘর প্রতি ৩০/ ৪০ হাজার টাকা নিয়েছে। এখন টিনের ঘর দেওয়া হচ্ছে বলে অনেক ঘর গ্রহিতারা ক্ষোভ প্রকাশ করছে। মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা অসহায়ের দুঃখ দূর করার লক্ষে বিনা মূল্যে ঘর প্রদান করছে। এসকল দূর্ণীতিগ্রস্থ চেয়ারম্যানের কারনে সরকারের ভাবমূর্তি দারণভাবে ক্ষ’ন্ন হচ্ছে। এমন চেয়ারম্যানের শাস্তি হওয়া উচিত।

নাম প্রকাশ না করে একজন ঘর গ্রহীতা বলেন, ঘর আনতে অনেক খরচ আছে বলে চেয়ারম্যান মোশারাফ হোসেন আমার কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা নিয়েছে। এখন শুনছি কোন টাকা লাগছে না। গরু, ছাগল বিক্রি করে চেয়ারম্যানকে টাকা দিয়েছি। চেয়ারম্যান আমাদের সাথে চরমভাবে চিটিং করেছে।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে বাঁশদহা ইউপি চেয়ারম্যান এসএম মোশাররফ হোসেন বলেন, আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে তা সঠিক নয়। আমার প্রতিপক্ষরা আবার বিরুদ্ধে এগুলো রটাচ্ছে।

চেয়ারম্যান কাকে কাকে ঘর বরাদ্দ দিয়েছে নায়েব কিছুই জানে না জানিয়ে বাঁশদহা ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মুনছুর আলী বলেন, চেয়ারম্যান এসে বললো এই কাগজে স্বাক্ষর দিন উপজেলা হতে স্বাক্ষর দিতে বলেছে তাই আমি স্বাক্ষর দিয়েছি। কাকে দিয়েছি আর কোথায় দিয়েছে তা আমি বলতে পারবো না। ওটা মেম্বর চেয়ারম্যান জানে।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ইয়ারুল ইসলাম বলেন, এ সংক্রান্ত ব্যাপারে মেম্বরদের পক্ষ থেকে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টির নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ঘর নির্মাণ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তার তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী আশ্রয়হীনদের মাঝে ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তবে ঘর পাওয়ার অযোগ্য কাউকে যদি ঘর দেওয়া হয় তদন্ত করে তার ঘর বাতিল করা হবে।

Check Also

সাতক্ষীরায় ৪ গ্যালন ফরমালিন পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধার

নিজস্ব প্রতিনিধি: সাতক্ষীরা থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৪ গ্যালন ফরমালিন পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধার করেছে। তবে এসময় …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।