স্টাফরিপোটার: সাতক্ষীরা জেলা জামায়াতের সাবেক সহকারী অফিস সম্পাদক দৈনিক সোনার বাংলা পত্রিকা সাতক্ষীরার সাবেক জেলা প্রতিনিধি বিশিষ্ট কলামিষ্ট জহিরুল ইসলামের (৬৭) দাফন সম্পন্ন হয়েছে। আজ দুপুরে পুলিশ প্রহরায় পারিবারিক ভাবে জানাযা নামাজ শেষে পারিবারিক কবর স্থানে দাফন করা হয়। তিনি সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বৈকারী গ্রামের মৃত আইজুদ্দিন মোল্যার ছেলে। তিনি সাতক্ষীরা জামায়াতের প্রবীণ রোকন ছিলেন।
সাতক্ষীরা সদর থানার ওসি (তদন্ত) মহিদুল ইসলাম জহিরুল ইসলামের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলে তিনি দীর্ঘদিন পালিয়ে ছিলো। মারা যাওয়ার পর তার লাশ গ্রামে এনে কবর দেওয়া হয়েছে।
জহিরুল ইসলামের পারিবারিক সূত্র জানায়,দীর্ঘ দিন তিনি ডায়বেটিক্স সহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত ছিলেন। গত কয়েক বছর তিনি ভারতে চিকিৎসাধীন ছিলেন। পরবর্তিতে তাকে ঢাকায় একটি হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়। রবিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে তিনি মারা যান।
জহিরুল ইসলাম প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে সাতক্ষীরা জামায়াতের গুরুত্ব পূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। পাকিস্তান আমলেও তিনি সাতক্ষীরায় ইসলামী অন্দলনের অন্যতম নেতা ছিলেন।
তার এক সহপাঠি বলেন ১৯৭১ সালে তিনি পাকিস্থানের সহযোগীতা করেন। তার নের্তৃত্ব ছিল তুখড়। কথিত আছে তার সামনে তার কয়েকজন সহযোগী কয়েকজন হিন্দু নারীকে ধরে আনে। এতে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে যান। এবং তাদেরকে তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেন। পাকিস্থানের টিক্কা খানের মত তার আদেশ ছিল। তাই সেখান থেকে অনেকে তাকে টিক্কা খান বলে ডাকত। তার সহপাঠিরা জানান, তার মত আদর্শ,নৈতিক,নেতৃত্ব প্রদান কারী মানুষের তখন অনেক অভাব ছিল।
সাতক্ষীরা জামায়াতের একজন শ্রেষ্ঠ বুদ্ধিজীবি হিসাবে তিনি কাজ করতেন। জামায়াতের সাংবাদিক হিসিবে তিনি ছিলেন সুখ্যাতি। তার মৃত্যুতে সাতক্ষীরা জামায়াত গভীর ভাবে মর্মহত ।
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে সাতক্ষীরার সদর উপজেলার আলীপুরের আব্দুল্লহাহিল বাকী, জামায়তের সাবেক এমপি বৈকারী গ্রামের আব্দুল খালেক মন্ডল, খান রোকনুজ্জামান ও বৈকারীর জহিরুল ইসলামে বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার চলমান রয়েছে।
তাদের বিরুদ্ধে এ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ গত ৬ মে ২০১৯ তারিখে শেষ হয়েছে। আসামিদের মধ্যে রোকনউজ্জামান ও জহিরুল ইসলাম পুলিশের কাছে দীর্ঘদিন পলাতক ছিলেন।
মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা, ধর্ষণ, আটক, নির্যাতনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের সাতটি অভিযোগ আনা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ৬ জনকে হত্যা, ২ জনকে ধর্ষণ, ১৪ জনকে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ। আসামিদের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ৭ আগস্ট থেকে তদন্ত শুরু হয়, যা শেষ হয় ২০১৭ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি।