ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ কর্মী ফারুক হোসেন হত্যা মামলায় মানবতাবিরোধী অপরাধে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীসহ ১০৭ জনের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেছেন রাজশাহীর আদালত। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক এনায়েত কবীর সরকারের আদালতে তাকে হাজির করা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন ওই আদালতের এপিপি শিরাজী শওকত সালেহীন। তিনি বলেন, মামলায় মোট আসামী ১১০ জন। ১০৭ জনের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়েছে। এরমধ্যে তিনজন আসামী মারা গেছে। এছাড়া আদালতে উপস্থিত ছিলেন ৬০ জন। পলাতক ছিলেন ৪৭ জন আসামী। আসামীপক্ষে মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে একটি প্যানেল মামলা লড়ছেন।
এই মামলায় স্বাক্ষী ১০০ জনের ওপরে।
এদিকে, সাঈদীকে আদালতে তোলাকে কেন্দ্র করে বুধবার থেকেই রাজশাহীর আদালত চত্বরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। আজ বৃহস্পতিবার পুরো আদালত চত্বরকেই নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। বিপুল সংখ্যক পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ও রাজশাহী মহানগর পুলিশের বিশেষায়িত বাহিনী ক্রাইসিস রেসপন্স টিমের (সিআরটি) সদস্যদের দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে। সক্রিয় ছিলেন বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরাও। আদালত চত্বরের সবগুলো প্রবেশমুখে তল্লাশি ছাড়া কাউকেই ভেতরে ঢুকতে দেয়া হয়নি।
আসামী পক্ষের আইনজীবী রাজশাহী মহানগর জামায়াতের আমীর আবু সেলিম বলেন, এ মামলায় ৩৫ জনের নাম উল্লেখ রয়েছে। তার সঙ্গে বলা আছে, আরও ১৫-২০ জন। সে অনুযায়ী বাদীর কথা মতো ৫৫ জন আসামী হয়। কিন্তু মামলায় ১১০ জনকে আসামী করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, দেলাওয়ার হোসেন সাঈদী বৈঠক করে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিপত্য ছাড়া যাবে না বলে শিবির নেতাকর্মীদের হুকুম দিয়েছিলেন। তাই তাকে হুকুমের আসামী করা হয়েছে। বাকিরা হত্যার আসামী। অভিযোগ গঠনের শুনানিতে সাঈদী নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন।
প্রসঙ্গত, ২০১০ সালের ৮ই ফেব্রুয়ারি রাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রশিবির ও ছাত্রলীগ সংঘর্ষে নিহত হন ছাত্রলীগ কর্মী ফারুক হোসেন। এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মাজেদুল ইসলাম বাদী হয়ে মতিহার থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় ৩৫ শিবির নেতাকর্মীর নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও অনেক শিবির নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়।
পরে ওই মামলার হুকুমের আসামি করা হয় জামায়াতের শীর্ষ নেতা মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীসহ বেশ কয়জনকে। তবে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় নিজামী ও মুজাহিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। ২০১৩ সালের শেষের দিকে নগরীর মতিহার থানা পুলিশ ফারুক হত্যা মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করেন।