# ২৪ ঘন্টায় আরও ৪ জনের মৃত্যু # হাসপাতালে নতুন ভর্তি ১ হাজার ১৫৭ জন 
ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ : গত ২৪ ঘন্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও ৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এরমধ্যে ঢাকায় একজনসহ ৩ জেলায় ৩ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ তিন জেলা হলো, মুন্সিগঞ্জ, ময়মনসিংহ ও পিরোজপুর। এর মধ্যে মুন্সিগঞ্জ, ত্রিশালে দুই যুবক ও পিরোজপুর এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। এদিকে আবার বৃষ্টি হলে ডেঙ্গু রোগী আবারো অস্বাভাবিকহারে বেড়ে যাওয়ার কথা জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের হিসাব অনুযায়ী, গত একসপ্তাহে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা কমেছে ৩২৭ জন।  চিকিৎসকরা বলছেন,  সেপ্টেম্বরে থেমে থেমে বৃষ্টি হলে এই রোগীর সংখ্যা আবারও বাড়তে পারে। এ কারণে সেপ্টেম্বরকে টার্গেট করে সমন্বিত ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে  বিশেষজ্ঞরা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সাধারণত জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত সময়কে ডেঙ্গুর ঝুকিপূর্ণ সময় ধরা হয়। তবে, এবার সেটি নাও হতে পারে। কারণ, চলতি মৌসুমে যেমন নির্ধারিত সময়ের আগেই ডেঙ্গু  শুরু হয়েছে, তেমনি সময়ের আগে শেষও হয়ে যেতে পারে। এরপরও রোগীর সংখ্যা যেন না বাড়ে, সে জন্য কেবল নিদির্ষ্ট মৌসুম নয়, বছরের ৩৬৫ দিনই এডিস মোকাবিলায় কার্যক্রম হাতে নিতে হবে। সে অনুযায়ী কাজ করতে হবে। তারপরও সেপ্টেম্বরে থেমে থেমে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আর যদি থেমে থেমে বৃষ্টি হয়, তাহলে  বেড়ে যাবে এডিস মশার পরিমাণ। একইসঙ্গে বাড়বে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যাও। তাই সেপ্টেম্বরকে টার্গেট করে সমন্বিত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
এডিস মশার ক্ষেত্রে বৃষ্টির ধরন ও বাতাসের গতিবেগ নির্ভর করে বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. সানিয়া তহমিনা। তিনি বলেন, ‘এগুলো এডিস মশার জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করে। এছাড়া, থেমে থেমে বৃষ্টিপাতও এডিসের জন্য দায়ী।
অধ্যাপক ডা. সানিয়া তহমিনা বলেন, ‘সেপ্টেম্বরের যে আবহাওয়া পূর্বাভাস রয়েছে, সেখানে কিন্তু থেমে থেমে বৃষ্টি, মেঘলা আবহাওয়ার কথা বলা হয়েছে। তাই, রোগী কমে আসার বিষয়টিকে স্থায়ীভাবে কমে আসা মনে না করে যদি পুরো সময়টা ডেঙ্গু মোকাবিলার কার্যক্রম চালিয়ে যায়, তাহলেই কেবল আগস্ট-সেপ্টেম্বরে এই রোগটি আর বাড়বে না। আমাদের সমন্বিত প্রচেষ্টা যদি চলমান থাকে, তাহলে সেপ্টেম্বরে রোগী সংখ্যা বাড়বে না।’
মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ বলেন, চলতি মাসের মতো থেমে থেমে যদি সেপ্টেম্বরেও বৃষ্টি হয়, তাহলে  এমন পরিবেশ ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়তে পারে।  বৃষ্টি হলেই  এডিস মশার লার্ভা  এডাল্ট। তখন একটা ঝুঁকি তো থেকেই যায়।’
সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, ‘ সেপ্টেম্বরকে টার্গেট করে আসলে এখন আর বিশেষ কিছু করার নেই, যে কার্যক্রম এখন রয়েছে সেটাই অব্যাহত রাখতে হবে। গত কিছুদিন ধরেই রোগীর সংখ্যা কমে আসছে, এই কন্ট্রোলটাই যেন আমরা ধরে রাখতে পারি। সেটা কেবল সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নয়, বছরব্যাপী ধরে রাখতে হবে।’
ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ময়মনসিংহের ত্রিশাল ও খুলনায় মোট দু’জন মারা গেছেন। গতকাল ভোরে ময়মনসিংহের ত্রিশালের দরিরামপুরের হাফিজুল ইসলামকে ঢাকায় নেয়ার পথে মারা গেছে। তিনি ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ঈদের আগে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। মঙ্গলবার অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে ঢাকায় নেয়ার পথে বুধবার ভোর পাঁচটার দিকে মারা যান।
এদিকে, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শাহিদা নামের এক নারী মারা গেছেন। হাসপাতালের চিকিৎসক জানান, তিনি গত মঙ্গলবার খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। গতকাল ভোরে মারা যান।
এছাড়া ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে খুলনা ও যশোরে দুই নারীর মৃত্যু হয়েছে। খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার ভোরে সাড়ে ৪টায় শাহিদা (৫০) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়। এদিকে যশোরে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা যান রেবেকা বেগম (৫৫) নামের আরেক নারী ।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে আরও এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। তার নাম রিতু আক্তার (২০)। মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) রাত পৌনে ৮ টায় মেডিসিন ওয়ার্ডে তার মৃত্যু হয়।
জাহিদুল জানান, মৃত রিতু দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ কালিবাড়ি এলাকার বাসিন্দা ইব্রাহিম মোল্লার স্ত্রী ছিলেন। তার বাবার নাম লিটু মিয়া।
এদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ন্যাশনাল হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুমের সহকারী পরিচালক ডা. আয়েশা আক্তার  জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় (মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সারাদেশে নতুন আরও ১ হাজার ১৫৭ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর আগের ২৪ ঘণ্টায় (সোমবার সকাল ৮টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) এই সংখ্যা ছিল ১ হাজার ২৯৯ জন। অর্থাৎ, এই সময়ে রোগী কমেছে ১৪২ জন।
হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুমের তথ্য অনুযায়ী, গত জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৬৭ হাজার ২২১ জন। হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে ছাড়পত্র নিয়েছেন ৬১ হাজার ৮২২ জন। অর্থাৎ, আক্রান্তদের ৯১ শতাংশ রোগীই ছাড়পত্র পেয়েছেন।
সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে (আইইডিসিআর) ডেঙ্গু সন্দেহে ১৭৭টি মৃত রোগীর তথ্য এসেছে। এরমধ্যে ৮৮টি মৃত্যু পর্যালোচনা করে ৫২টি ডেঙ্গুজনিত মৃত্যু নিশ্চিত করেছে প্রতিষ্ঠানটি। তবে প্রতিদিনই মৃতের সংখ্যা বাড়ছে বলে জানা যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে। এ সংখ্যা এখনও সরকারি তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়নি।
ঢাকার বাইরে ডেঙ্গু রোগী বিষয়ে আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেবরিনা ফ্লোরা বলেন, এবার ঢাকার বাইরেও আগের চেয়ে বেশি সংখ্যক ডেঙ্গুরোগী পাওয়া যাচ্ছে। তবে তা উদ্বেগজনক নয়। এখন পর্যন্ত আমরা যত ডেঙ্গুরোগী পেয়েছি, সেসব রোগী ঢাকা থেকেই আক্রান্ত হয়ে সেখানে গিয়েছে। তাছাড়া ঈদের সময় আরও ১ হাজার ১৫৭ আক্রান্ত যারা বাড়িতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তারা ঢাকায় ফিরতে না পেরে সেখানেই চিকিৎসা নিচ্ছেন।

-0—

এডিস মশার বংশ ধ্বংস করার লক্ষ্যে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রচার প্রচারণা চলছে। জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল, পুলিশ সুপার মো. মোস্তাফিজুর রহমান, সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন, শিক্ষা অফিসার এসএম আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রায় মাসব্যাপী ডেঙ্গু দমনে নানা কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকেও চালানো হচ্ছে ডেঙ্গু বিরোধী প্রচার প্রচারণা। মসজিদের ইমাম থেকে শুরু করে প্রত্যেক সামাজিক ব্যক্তি মানুষকে ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে সতর্ক থাকার জন্য প্রয়োজনীয় পরামর্শ অব্যাহত রেখেছেন। জনপ্রতিনিধিরাও অনেকেই শামিল হয়েছেন এ প্রচারাভিযানে। কিন্তু এত কিছুর পরেও ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আশানুরূপ সফলতা আসেনি। দিকে দিকে জলাবদ্ধতা। বৃষ্টির জমা পানিতে জন্ম নিচ্ছে   মশা। গ্রাডেঙ্গু: সারাদেশে কমছে, সাতক্ষীরায় বাড়ছেমে-শহরে সর্বত্র এডিস আতঙ্ক বিরাজ করছে। ডাবের খোলা, সাইকেল, মটরসাইকেলের টায়ার, দইয়ের মালশা, সহ বিভিন্ন পাত্রে পানি জমে সেখানে মশার কারখানায় পরিণত হচ্ছে। বারবার এ বিষয়ে সতর্ক করা হলেও অনেক স্থানে এসব জিনিসপত্র চোখে মিলছে। জেলায় দিন দিন বেড়েই চলেছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। এমন পরিস্থিতিতে শোনা যাচ্ছে সেপ্টেম্বর মাসেও ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধি পেতে পারে। এ জন্য এখনই সতর্ক না হলে জেলায় ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে বলে অনেকেই মন্তব্য করেছেন। তাই ডেঙ্গু দমনে এখনই প্রস্তুতি নেওয়ার সময় বলে তারা জানান।

এদিকে জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল বুধবার জেলা সদর থেকে শ্যামনগরের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিষয়টি অবলোকন করেছেন। তিনি সদরের আলিপুর ইউনিয়নের পুষ্পকাটি এলাকায় পরিদর্শনকালে মশার তৈরির কারখানা আবিষ্কার করেন। এসময় গ্রামবাসিকে তিনি ডেঙ্গু সচেতনতায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। এলাকায় জনপ্রতিনিধিরা ডেঙ্গুর বিরোধী আশানুরূপ কাজ না করায় তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এরপর তিনি সড়ক খালের নেটপাটা উচ্ছেদ করেন। এরপর একের পর এক দেবহাটা, কালিগঞ্জ ও শ্যামনগরের মন্সিগঞ্জ পর্যন্ত ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে বাড়ি বাড়ি প্রচারাভিযান চালান। একই সাথে অবৈধ নেটপাটা উচ্ছেদ অভিযানেও অংশ নেন। এমনকি সরকারি বেসরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ক্লিনিকও পরিদর্শন করেন। সবাই যদি নিজ নিজ দায়িত্ববোধ থেকে এভাবে ডেঙ্গু বিরোধী প্রচারে কাজ করতেন তাহলে সবাই এর সুফল ভোগ করতেন।
এদিকে সারাদেশে ডেঙ্গু রোগী কমলেও জেলায় হঠাৎ রোগীর সংখ্যা ব্যাপক হারে বাড়তে শুরু করেছে। গত ২৪ ঘন্টায় জেলার হাসপাতালগুলোতে আরো ২২ জন রোগী ভর্তি করা হয়েছে। এরআগের দিন চিহ্নিত হয় ৩১ জন ডেঙ্গু রোগী। ইতোপূর্বে জেলায় প্রতিদিন গড়ে ১০/১২ জন রোগী ভর্তি হলেও গত দুইদিনে পরিস্থিতি ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। এরফলে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
গত ২৪ জুলাই জেলায় প্রথম ডেঙ্গু রোগীর সন্ধান পাওয়া যায়। এরপর থেকে প্রতিদিনই রোগীর সংখ্যা বাড়ছিল। তবে সেটা ছিল ১০/১২ জনে সীমাবদ্ধ। চলতি আগস্ট মাসের ২৬ তারিখ পর্যন্ত জেলার হাসপাতালগুলোতে ৩৪৪ জন রোগী চিকিৎসা নেয়। সেখানে গত দুইদিনে ৫৩ জন রোগী ভর্তি হয়। এনিয়ে জেরায় মোট রোগীর সংখ্যা ৩৯৭ জন। এরমধ্যে বিভিন্ন হাসপাতালে এখনও পর্যন্ত ভর্তি রয়েছে ৬৪ জন।
এছাড়া চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন আরো ২৬৫ জন এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্যত্র রেফার করা হয়েছে আরো ৬৮ জনকে।
সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহিন জানান, ঈদের পর থেকে প্রতিদিনই ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষ করে স্থানীয়ভাবে আক্রান্ত রোগীর সংখা বেশি। ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন অনেকেই। তবে, হাসপাতালে যারা ভর্তি আছেন তারা এখন আশঙ্কামুক্ত। ডেঙ্গু প্রতিরোধে তিনি এ সময় মশার কামড় থেকে দূরে থাকাসহ মশা যাতে জন্মাতে না পারে সেজন্য বাড়ির আশ পাশ পরিষ্কার করা ও পরিত্যক্ত জিনিস পত্র বোতল, নারকেলে খোসা, টায়ারসহ অন্যান্য জিনিস পত্র পরিষ্কার রাখা এবং ঘুমানোর আগে অবশ্যই মশারি ব্যবহার করার পরামর্শ দেন। তিনি ডেঙ্গু আক্রান্তদের পানি ও পানি জাতীয় খাদ্য (ডাব, শরবত, পেঁপে) বেশি খাবার পরামর্শ দেন।