সাতক্ষীরায় রহস্যময় চিরকুট লিখে উধাও হয়ে যাওয়া পুলিশ কনস্টেবলের ৮ম শ্রেণী পড়ুয়া ছেলে সিরাজগঞ্জে উদ্ধার নিছক গুজব: জঙ্গির পথ ধরতে পারে ধারণা বিশ্লষকদের

আবু সাইদ বিশ্বাস: ক্রাইমর্বাতা রির্পোট: সাতক্ষীরা:‘আমি গৃহপলায়ন করি নাই। গৃহত্যাগ করিলাম। সত্যের সন্ধানে যাচ্ছি। আমাকে খোঁজাখুঁজি করে লাভ নেই। সত্যের মধ্যে সত্য আছে। কাজের ভেতরে কাজ আছে।’-রহস্যময় এমন সব কথা চিরকুটে লিখে বাড়ি থেকে চলে গেছে সাতক্ষীরা সদর থানার পুলিশ কনস্টেবল মোস্তাফিজুর রহমানের ছেলে মোহায়মিনুল ইসলাম মোমিন (১৪)। দিনভর অনেক খোজা খুজির পর বিকাল বেলায় রাজশাহী বিভাগের সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া ট্রেন স্টেশন এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে দাবী করা হলেও তা  ছিল গুজবে  ।

অচেতন অবস্থায় স্থানীয়রা উ্দ্ধার করে উল্লাপাড়া স্থাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। শনিবার সন্ধা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত সে অচেতন অবস্থায় উল্লাপাড়া স্থাস্থ্য কমপ্লেক্সেই ছিলেন যে ছেলেটি সে আসলে মোমিন নয় বলে নিশ্চত করেছে সিরাজগঞ্জ থানা পুলিশ।

গতকাল রাতে সাতক্ষীরা থেক ঈগল পরিবহনে করে ঢাকা যান মোমিন বলে সূত্র জানাই।

সে সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। শুক্রবার রাতে মোহায়মিনুল এশার নামাজ পড়ার কথা বলে তাদের ভাড়া বাড়ি শহরের মনজিতপুর থেকে বেরিয়ে যায়। এর পর থেকে তার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।

নিজ হাতে লেখা দীর্ঘ চিঠিতে মোহায়মিনুল আরও লিখেছে, ‘দীর্ঘকালে আমাকে কেহ চিনে নাই, জানে নাই আমার কাজকে। আজ হয়তো প্রভুর অনুমতিক্রমে আমার সময় শেষ। তাই চলিলাম। ইহা স্বাভাবিক। অন্তত মুসলিমের পক্ষে। আমি সত্য লইয়াই আঁধার রাতে বাহির হইয়াছি।’

মোহায়মিনুলের বড় ভাই আবদুল আহাদ জানান, সে অত্যন্ত চুপচাপ স্বভাবের ছেলে। তার কোনো বন্ধুও নেই। দুই-একটি ছেলের সঙ্গে সে স্কুলে যেত।

তিনি বলেন, সে লেখাপড়ার পাশাপাশি সবসময় আল্লাহর পথ নিয়ে ভাবত। কথা বলত এবং কবিতা লিখত। গোপালগঞ্জ সদরে তাদের বাড়ি উল্লেখ করে আবদুল আহাদ বলেন, ক্লাসে তার রোল ১। সে রহস্যময় কথাবার্তা লিখে গেছে। প্রকৃতপক্ষে সে কোথায় গেছে তা এখনও নিশ্চিত করা যায়নি।

তিনি বলেন, এ বিষয়ে সাতক্ষীরা সদর থানায় একটি জিডি করা হয়েছে, যার নম্বর ৮৯৯।

মোহায়মিনুলের বাবা পুলিশ কনস্টেবল মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ‘আমার ছেলে নম্রভদ্র স্বভাবের। সে কোনো চক্রের খপ্পরে পড়ে থাকতে পারে। জেলা পুলিশের সহায়তায় তাকে আমরা খুঁজছি। এখনও পাইনি।’

সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সমরেশ সরকার জানান, শনিবার সকালে বিদ্যালয়ে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের পরই মোহায়মিনুলের বাবা পুলিশ কনস্টেবল মোস্তাফিজুর রহমান তার কাছে এসে জানান তার ছেলের গৃহত্যাগের কথা। এ সময় তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।

প্রধান শিক্ষক জানান, ছেলেটি অত্যন্ত বিনয়ী, নম্র ও ভদ্র স্বভাবের। তিনি তাকে ব্যক্তিগতভাবে চেনেন। তার লেখাপড়া, আচরণ ও শৃঙ্খলা- সব দিকই ছিল প্রশংসনীয়। তবে গৃহত্যাগের কারণ কী তা তিনি বলতে পারেননি।

সাতক্ষীরা সদর থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, চিঠিতে যেসব কথা বলা হয়েছে, তা আধ্যাত্মিক ভাষায়। তবে সে জঙ্গির পথ ধরেছে কিনা তা নিশ্চিত নয়।

জানতে চাইলে সাতক্ষীরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইলতুৎমিশ জানান, ছেলেটির নিখোঁজ খবর শুনে আমরা সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে খোঁজখবর নিয়েছি। তবে সে কোথায় ও কেন গেছে তার কোনো হদিস পাওয়া যায়নি।

 

————–0————

সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণীর ছাত্র মোমিন নিখোজ

সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণীর ছাত্র মো. মোহাইমিনুল ইসলাম মোমিন (১৪) নিখোজ হয়েছেন। গত ১৩ সেপ্টেম্বর শুক্রবার ৮টা ২৫ মিনিটে এশার নামাজ পড়তে সাতক্ষীরার মুনজিতপুরস্থ বাসা থেকে বের হয় তারপর আর ফিরে আসেনি। এ ঘটনায় তার পিতা মো. মোস্তাফিজুর রহমান (কং/৭৪৯) সাতক্ষীরা সদর থানায় জিডি করেছে (যার নং-৮৯৯, তারিখ-১৪.০৯.১৯)।
জিডিতে উল্লেখ করা হয়, গত ১৩ সেপ্টেম্বর শুক্রবার ৮টা ২৫ মিনিটে এশার নামাজ পড়তে মো. মোহাইমিনুল ইসলাম মোমিন মুনজিতপুরস্থ আবুল হোসেনের ভাড়াটিয়া বাসা থেকে বের হয়ে যায়। এরপর সে আর বাসায় ফিরে নি। তার গায়ের রং-ফর্সা, মুখমন্ডল-লম্বাকৃতি, উচ্চতা-৫ ফুট, শরীরের স্বাস্থ্য-মাঝারি, পরনে ছিল নীল রংয়ের জিন্সের প্যান্ট ও লাল হাফ হাতা গেঞ্জি। তার গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জ উপজেলার রঘুনাথপুর।
এদিকে যদি কেউ তার কোন সন্ধান পান তাহলে অনুগ্রহপূর্বক ০১৭৩৯-৭৩৩৫৩৩ ও ০১৮৫৭-৯৫৯০৬৮ মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করার জন্য পরিবারের পক্ষ অনুরোধ করা হয়েছে
#প্রেসবিজ্ঞপ্তি

Check Also

ডিসেম্বরের ২১ দিনে রেমিট্যান্স এল ২ বিলিয়ন ডলার

চলতি ডিসেম্বর মাসের প্রথম ২১ দিনে দেশে বৈধ পথে ২০০ কোটি  মার্কিন (২ বিলিয়ন) ডলারের …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।