ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ সুনামগঞ্জের ছাতকে সাদা পোশাকে পুলিশ পরিচয় দিয়ে তুলে নিয়ে যাওয়ার পথে নদীতে লাফ দিয়ে নিখোঁজ হওয়ার ২০ ঘণ্টা পর আনোয়ার হোসেন নামে এক যুবলীগ নেতার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
রোববার বিকালে উপজেলার জাউয়া বাজার ও ছাতক সড়কের কাচা নদী থেকে ওই যুবলীগ নেতার লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশ ওই যুবলীগ নেতার সঙ্গী শাহাবুদ্দিনকে আটক করেছে।
নিহত আনোয়ার উপজেলার চরমহল্লা ইউনিয়নের চানপুর গ্রামের মৃত আরশ আলী ছেলে।
নিহতের স্বজনদের দাবি, পুলিশ পরিচয়ে তুলে যুবলীগ নেতা আনোয়ার হোসেনকে (৩০) পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।
শাহাবুদ্দীনের বরাত দিয়ে আনোয়ারের চাচা ও ইউপি সদস্য এখলাছুর রহমান যুগান্তরকে জানান, গত শনিবার রাতে জাউয়া বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে সাদা পোশাকের দুজন লোক নিজেদের পুলিশ পরিচয় দিয়ে মোটরসাইকেল থামিয়ে আনোয়ারকে তাদের সঙ্গে পুলিশ ক্যাম্পে যেতে বলে। পায়ে হেঁটে কয়েক গজ যাওয়ার পর কাঁচা নদীর ব্রিজ থেকে নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ে নিখোঁজ হন আনোয়ার।
পরে দুজনের একজন পুলিশ পানিতে নেমে খোঁজাখুঁজি করে কোনো সন্ধান পাননি। এ সংবাদ পেয়ে তার আত্মীয়রা স্বজন জাউয়া বাজার পুলিশ ক্যাস্পে যোগাযোগ করেন। পুলিশ এমন কোনো ঘটনাটি অস্বীকার করলেও তারা নদীতে খুঁজে তাকে না পেয়ে রোববার সকালে থানা গিয়ে পুলিশকে ঘটনাটি জানান।
পরে বিকালে ছাতক থানার ওসি তদন্ত আমিনুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি দল জাউয়াবাজার ছাতক সড়কের কাঁচা নদীতে ডুবুরি দল ব্যাপক অভিযান চালিয়ে তার লাশ উদ্ধার করেন পুলিশ।
ইউপি সদস্য এখলাছুর রহমান বলেন, আনোয়ারের ডান চোখের ওপরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এ ছাড়া মুখ ও নাক রক্তাক্ত। তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।
আমরা সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। দাফন শেষে সবার সঙ্গে পরামর্শ করে মামলা করা হবে বলেও জানান এখলাছ মেম্বার।
এ ঘটনার একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী শাহাবুদ্দিনকে পুলিশ তাদের জিম্মায় নিয়ে গেছে। শাহাবুদ্দিন একই গ্রামের মৃত আবদুল আছিরের ছেলে।
এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ছাতক থানার ওসি গোলাম মোস্তফা জানান, আনোয়ার দুই বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি ছিল। পুলিশ তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা করলে সে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে নিখোঁজ হয়। পরে নদী থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
সাদা পোশাকে পুলিশ আসামি ধরতেই পারে জানিয়ে ওসি বলেন, সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি উধ্বর্তন অফিসারদের জানানো হয়েছে, উনারা এসে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।