ক্রাইমর্বাতা রিপোট : ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হাতে নির্মমভাবে নিহত বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদের মতো হত্যাকাণ্ড এর আগে আর ঘটেনি বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
শুক্রবার দুপুরে তেজগাঁওয়ে বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনির্মিত প্রধান ফটক উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের এ মন্তব্য করেন তিনি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এ ধরনের হত্যাকাণ্ড, এ ধরনের মেধাবী ছাত্র যারা কিনা আমাদের ভবিষ্যৎ, যে প্রজন্মকে নিয়ে আমরা অহঙ্কার করি, এ ধরনের ঘটনায় যাতে তারা হারিয়ে না যায়, যারা এ কাজটি করেছেন, এর মতো খারাপ কাজ, এর মতো গর্হিত কাজ এর আগে আর ঘটেনি।’
‘তবে বুয়েট প্রশাসনের আরেকটু কেয়ারফুল (সতর্ক) থাকার দরকার ছিল। আরেকটু সতর্ক থাকলে হয়তো আবরার হত্যাকাণ্ডের মতো ঘটনা নাও ঘটতে পারতো।’
তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন না ডাক দিলে পুলিশ ভেতরে ঢোকে না, আপনারা সেটা জানেন। এ জায়গাটিতে বুয়েট কর্তৃপক্ষের আরেকটু সতর্ক থাকার দরকার ছিল। আরেকটু সতর্ক থাকলে হয়তো এ ধরনের ঘটনা নাও ঘটতে পারতো। ভবিষ্যতে প্রশাসন ছাত্রদের প্রতি আরও নজর দেবে, দায়িত্ববান হবে বলে মনে করি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আবরার হত্যাকাণ্ড যারা সংঘটিত করেছিল এদের প্রায় সবাইকে আমরা ধরে ফেলেছি। এ পর্যন্ত ১৭ জনকে আটক করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ১ জন ১৬৪ করেছে (স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন)। আমি আগেও বলেছি আজও বলছি, অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে এ মামলার চার্জশিট দেয়া হবে, আশা করছি তদন্ত সংশ্লিষ্ট সংস্থা দ্রুততম সময়ের মধ্যে মামলা তদন্ত সম্পন্ন করবে।
তিনি বলেন, এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে আরও অনেক ঘটনাই ঘটেছে, আমরা সানি হত্যাও দেখেছি। কিন্তু এ হত্যাকাণ্ডটি সবার হৃদয়ে দাগ কেটেছে। আমি আশা করবো আমাদের ছাত্র সমাজ এ ধরনের ঘটনা আর দেখবে না। যাতে না ঘটে সেজন্য তারাও সজাগ থাকবে।
আবরার হত্যার পেছনে মূল কারণ কী জানতে চাইলে বলেন, এ খুনের পেছনে কারণটা কী এটা আমাদের দেখতে হচ্ছে। যারা ধরা পড়ছে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে, তদন্ত চলছে, এর পেছনে মোটিভটা কী জানার চেষ্টা চলছে। এমনি এমনি একজন আরেকজনকে হত্যা করবে এটা যেমন বিশ্বাসযোগ্য নয়, এর পেছনে নিশ্চয়ই কোনো কারণ আছে, আরও কিছু উদ্দেশ্য আছে। এর সবই আমরা খতিয়ে দেখছি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা মনে করি, বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা পড়াশোনা করতে এসেছে, তারা সবাই মেধাবী। এ ধরনের মেধাবীরাই এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে। তার ভেতরে নিশ্চয়ই কোনো কারণ রয়েছে। সে কারণগুলো উদঘাটন করে নিখুঁত ও তথ্যসমৃদ্ধ চার্জশিট দিতে চাই।
প্রসঙ্গত ভারতের সঙ্গে চুক্তির বিরোধিতা করে শনিবার বিকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন ফাহাদ। এর জের ধরে রোববার রাতে শেরেবাংলা হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে ডেকে নিয়ে তাকে পিটিয়ে হত্যা করেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পরে তার লাশ সিঁড়িতে ফেলে রাখা হয়।