ক্রাইমবার্তা ডেস্করিপোটঃ গেল কয়েক দিনে দেশের ক্রিকেটের ওপর দিয়ে বেশ বড় একটা ঝড় বয়ে গেছে। বেতন-ভাতা বাড়ানোসহ বিভিন্ন দাবি-দাওয়া আদায়ে ধর্মঘট ডাকেন ক্রিকেটাররা। পরিপ্রেক্ষিতে হার্ডলাইনে যায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। এতে ক্ষণিকেই ক্রিকেটাঙ্গন অচল ও স্থবির হয়ে পড়ে। অবশেষে দুই পক্ষের সমঝোতায় বিষয়টির নিষ্পত্তি ঘটে।
সেই রেশ না কাটতেই নতুন ঝামেলার উদয় হলো। সাকিব আল হাসানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিতে যাচ্ছে বিসিবি। আন্দোলনের মাঝে ৩ বছর মেয়াদে মুঠোফোন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান গ্রামীণফোনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হয়েছেন তিনি। বোর্ডকে না জানিয়েই সাড়ে ৩ কোটি টাকার এ চুক্তি করেছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। ফলে চুক্তিভঙ্গের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার আভাস দিয়েছেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন।
নিয়মানুযায়ী, বোর্ডের অনুমোদন ছাড়া কেন্দ্রীয় চুক্তিব্দ্ধ ক্রিকেটারদের কেউ কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করতে পারবেন না। অথচ সেটিই করেছেন সাকিব। অবশ্য সূক্ষ্ম দৃষ্টিতে দেখলে, কোনো ভুল করেননি তিনি। কারণ,গ্রামীনফোনের সঙ্গে চুক্তিকালে বোর্ডের সঙ্গে সব ধরনের কার্যক্রম থেকে বিরত ছিলেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার।
তবে বিসিবি বস বলছেন ভিন্ন কথা। সাকিবের এ কাজে বেজায় চটেছেন তিনি। পাপন বলেন, এ চুক্তি সে কোনোভাবেই করতে পারে না। কেন পারে না, আমাদের সঙ্গে করা ক্রিকেটারদের চুক্তিতে সব লেখা আছে। লিখিতভাবে তাদের বলে দেয়া আছে। এর আগে রবি আমাদের টাইটেল স্পন্সর হয়। সেখানে গ্রামীনফোন নিলামই করেনি। না করে ২/৩ কোটি দিয়ে খেলোয়াড়দের নিয়ে ফেলল তারা। এতে শেষ পর্যন্ত কী হবে? তিন বছরে বোর্ডের ৯০ কোটি টাকা লস হবে। খেলোয়াড় লাভবান হবে। সর্বোপরি, বোর্ডের ১২টা বাজবে।
অধিকন্তু সাকিবের এ কাজকে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ বলেও উল্লেখ করেন বিসিবি প্রধান। নাজমুল হাসান বলেন, এটি হতে পারে না। আমার জানামতে, মন্ত্রণালয় থেকেও তাদের বলা আছে, বিনা অনুমতিতে টেলকোর সঙ্গে চুক্তি করতে পারবে না তারা। আমাদের সঙ্গে চুক্তি তো আছেই। তবুও আমাদের না জানিয়ে কেমনে চুক্তি করে? তাও আবার টাইমিংটা দেখুন,খেলা বন্ধ করে! এগুলো তো ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ।
এ ঘটনার প্রেক্ষিতে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছে বোর্ড। কারণ দর্শানোর চিঠি দেয়া হবে সাকিবকে। নাজমুল হাসান সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, লিগ্যাল অ্যাকশনে যাচ্ছি আমরা। কোম্পানি ও খেলোয়াড় উভয়ের কাছেই ক্ষতিপূরণ দাবি করা হবে।
পাপনের ভাষায়, আমরা কি ছেড়ে দেব? আমি বলে দিয়েছি, গ্রামীণফোনকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠাও। বড় অঙ্কের ক্ষতিপূরণ চাও। এছাড়া বলেছি, চিঠি পাঠাও সাকিবকেও। আমাদের ব্যাখ্যা চাই। সে আইন ভঙ্গ করল কেন? তিনি এও বলেন, তবে ওকে বলার সুযোগ দেব আমরা। আমাদের কাছে ব্যাপারটিকে মনে হয়েছে, বোর্ডের কোনো নিয়মকানুন মানি না-এরকম কিছু। সেরকম হলে কঠোর ব্যবস্থা নেবই।
সদ্য সমাপ্ত আন্দোলনে প্রধান ভূমিকা ছিল সাকিবের। ক্রিকেটারদের দাবি-দাওয়া মেনে নেয়ার আশ্বাস দিয়েছে বোর্ড। তখনই ধারণা করা হচ্ছিল, তাদের ব্যাপারে কঠোর হবে বিসিবি। চুক্তিভঙ্গের অভিযোগে তাই প্রথম তোপটা দাগাচ্ছে সাকিবকে।