# লবণের বর্তমান মূল্য উৎপাদন খরচের কম
রিয়াজ উদ্দিন, পেকুয়া (কক্সবাজার) সংবাদদাতা : কক্সবাজারের পেকুয়াসহ উপকূলীয় এলাকায় হাজার হাজার মণ লবণ মজুদ রয়েছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে লবণের মৌসুম শুরু হওয়ার উপক্রম হলেও মজুদ লবণ বিক্রি না হওয়ায় হতাশ চাষিরা। ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে যে লবণের দাম মণপ্রতি সাড়ে ৫শ থেকে ৬শ টাকা পর্যন্ত ছিল বর্তমানে সেই লবণের দাম ১৬০ টাকা থেকে ১৮০ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে। দাম কম থাকায় লবণ বিক্রি না করায় চাষি ও ব্যবসায়ীরা অর্থসংকটের মধ্যে দিনাপাত করছে
স্থানীয় সূত্রে জানায়, পেকুয়াসহ উপকূলে হাজার হাজার টন লবণ মজুদ আছে। লবণের বাজার মূল্য নিন্মমুখী হওয়ায় কৃষক এ সব উৎপাদিত লবণ বিক্রি না করে মজুদ করেছেন। মৌসুমে লবণের দাম কম থাকলেও বর্ষার দিকে চাঙ্গা হয়। এ দৃষ্টিভঙ্গিতে কৃষক এ সব লবণ বিক্রি না করে মজুদ রাখে। কিন্তু চায়না, ভারতসহ অন্যান্য দেশ থেকে সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা লবণ আমদানি করায় উৎপাদিত লবণের দাম কমে যায়। এর প্রেক্ষিতে পেকুয়াসহ উপকূলে লবণ চাষিদের মাঝে বেড়েছে হতাশা।
জানা গেছে, ২০১৭ ও ২০১৮ অর্থবছরে লবণ মৌসুমে কৃষক লবণ উৎপাদনের দিকে ব্যাপকভাবে উৎসাহ পেয়েছিলেন। এর আগের বছর লবণের দাম ছিল আকাশচুম্বী। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সর্বোচ্চ মূল্য ছিল লবণের। ওই অর্থবছরে কৃষক প্রতি মণ লবণ বিক্রি করে ৫শ থেকে ৬শ টাকা হারে। লবণের আকাশচুম্বী দাম ছিল সে সুবাধে কৃষক সর্বোচ্চ দামে লবণ চাষের জমি আগাম নেয়।
মৌসুমে প্রতি ৪০ শতক জমি আগাম নিতে কৃষকের ব্যয় হয়েছে সর্বনিন্ম ৩০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা। পানি, সেচ ও পলিথিন বাবদ প্রতি কানি জমিতে আরও ব্যয় হয়েছে ১২ হাজার টাকা। শ্রমের মজুরী ও লবণ উৎপাদনে অন্যান্য যোগানসহ প্রতি কানিতে কৃষক প্রায় লক্ষাধিক টাকা মূলধন ব্যয় করে। ওই অর্থবছরে গড় কানি প্রতি লবণ উৎপাদিত হয়েছে ২শ থেকে ২৫০ মণ। উৎপাদনকারী কিছুটা লাভবান ছিল।
পেকুয়া উপজেলার মগনামা ইউনিয়নের লবণ চাষি ও ব্যবসায়ী রবিউল আলম বলেন, লবণ জমা ৫ হাজার মণ। একটু বেশি দামের আশায় এ সমস্ত লবণ মজুদ করে রেখেছিলাম। বাজারমূল্য থাকলে উৎপাদন খরচসহ কিছু লাভের আশা ছিল। কিন্তু বর্তমান লবণের দাম আমাদের হতাশ করেছে। প্রতিমণ লবণ ১৪০ টাকা থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। অথচ প্রতিমণ লবণ উৎপাদন করতে খরচ হয়েছে তার চেয়েও বেশি। মজুদ লবণ এখন আমাদের গলার কাটা হয়ে আছে। না করতে পারছি বিক্রি না রাখতে পারছি মজুদ।
এ সময় লবণ চাষি ও ব্যবসায়ী তোফাইলও বলেন, মৌসুমের সময় লবণের দাম থাকায় ও উৎপাদন খরচ ওঠাতে না পারায় লবণ মজুদ করে রেখেছিলাম। মজুদ রাখা লবণই বিক্রি করতে পারছিনা। অল্প কিছুদিন পর শুরু হচ্ছে লবণের মৌসুম। মজুদ লবণ বিক্রি করতে না পারলে লাখ লাখ টাকা ক্ষতি ছাড়াও লবণের মাঠে নামা যাবেনা। এছাড়াও বেশ কয়েকজন চাষি সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলেন, লবণ দামের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করলে চাষিরা বাঁচবে। এ ব্যাপারে উজানটিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম চৌধুরী, মগনামার চেয়ারম্যান শরাফত উল্লাহ চৌধুরী ওয়াসিম জানায়, এ উপকূলের লবণ চাষীকে বাঁচানোর জন্য লবণের ন্যায্য মুল্য নিশ্চিত করার জন্য সরকারের প্রতি দাবী জানান। তারা আরো বলেন, শীঘ্রই বিদেশ থেকে লবণ আমদানি বন্ধ করতে হবে। দেশীয় লবণকে প্রাধান্য দিয়ে লবণের সঠিক দাম নিশ্চিত করতে হবে। নচেৎ লবণ শিল্প অচিরেই ধ্বংস হয়ে যাবে বলে সচেতন মহল আশংকা করছেন।
Check Also
আশাশুনির খাজরা ইউনিয়নের খালিয়া রাস্তার বেহাল দশা।। বিপত্তিতে শতাধিক পরিবার।।দ্রুত সংস্কার দাবি
এস,এম মোস্তাফিজুর রহমান,আশাশুনি।।আশাশুনি উপজেলার খাজরা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড খালিয়া গ্রামের সানাপাড়ার প্রায় শতাধিক পরিবার একটি …