আবু সাইদ বিশ্বাস:ক্রাইমবার্তা রিপোটঃ সাতক্ষীরা: মাকে হারিয়ে হতভম্ব দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্রী আজমিরা। এক দিনের বোনকে কোলে নিয়ে ছোট ভাইকে সান্তনা দেয়ার চেষ্টা করছে। চোখে ছল ছল পানি টলমল করছে। আজ সকাল ১০ টায় মাকে শেষ বারের মত দেখে বাশ বনে রেখে এসেছে। আর কোন দিন মাকে দেখতে পানে না। মা বলে ডাকতে পারবে না। কারণ গতকাল তার মা চির বিদায় নিয়েছে। আজমিরা পুরাতন সাতক্ষীরার একটি মহিলা দাখিল মাদ্রাসার দ্বিতীয় শ্রণীর ছাত্রী।
আজমিরার ছোট বোন খুকুর জন্মের কয়েক ঘণ্টা পর চিকিৎসার অবহেলায় তার মা মারা যান। তার ছোট ভায়ের বয়স মাত্র তিন বছর। গতকাল বিকাল পাঁটটার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় খুলনা ২৫০ শর্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে মারা যান তহমিনার মা।
আজমিরার মৃতা মা মমতাজ বেগম (২৫) সাতক্ষীরা সদরের আলিয়া মাদ্রাসা সংলগ্ন আমিরুল ইসলামের স্ত্রী। মৃতার পিতা সাতক্ষীরা সদর উপজেলার মাহমুদপুর গ্রামের মাওলাবক্সের মেয়ে। আজ সকাল ১০টার দিকে পারিবারিক কবরস্থানে তা দাফন করা হয়।
আজমিরার বাবা আমিরুল ইসলাম জানান, তার স্ত্রীর গর্ভে সন্তান গেলে তিনি নিয়মিত সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চেকআপ করাতেন। নিয়ম অনুযায়ী চলতি সপ্তাতে তার স্ত্রীর সন্তান ভূমিষ্ট হওয়ার কথা ছিল। মঙ্গলবার সকাল ১০ টার দিকে তার স্ত্রীর প্রসব যন্ত্রনা উঠলে সাথে সাথে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। নিয়ে যাওয়ার ঘণ্টা খানিক পরে সিজার ছাড়ায় তার স্ত্রী এক কন্যা সন্তান জন্ম দেন। তার অভিযোগ গতমাসের আল্ট্রাসোনো রির্পোটে তার স্ত্রীর গর্ভে সন্তা উল্টে ছিলে বলে ডাক্তার জানান। কিন্তু গতদিন তার তার সন্তান ভ’মিষ্টের সময় সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে পরীক্ষা না করে নার্সরা জোরকরে তাকে নরমলে ডেলিভারি করান। এতে প্রচুর রক্ত ক্ষণণ হতে থাকে।
পরে বুধবার তার স্ত্রীকে কয়েক দফায় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানো হয়। বুধবার রাত ৮টার দিকে পরীক্ষার সকল কাগজ পত্র ডাক্তারকে দেখানোর জন্য রোগীর স্বজনরা নার্সদের বার বার তাগীদ করে। নার্সরা এতে কর্ণপাত করেনি। পরের দিন অর্থাৎ বৃহষ্পতিবার ডাক্তার এসে নার্সদের ধমকান এবং বলেন রোগী রিপার্ট করতে। বাধ্য হয়ে মুমূর্ষ অবস্থায় তারা রোগী খুলনাতে রিপার্ট করান। কিন্তু সেখানেই তার মৃত্যু হল। রোগীর স্বজন তহমিনা জানান, ব্লড নেয়ার জন্য যে ব্যাগ নিতে হয়,নার্সরা সেই ব্যাগ ২৫০ টাকা দিয়ে কিনতে বলে। তারা সেই ব্যাগ বাইরে থেকে কেনে মাত্র একশ টাকায়। প্রতি পদে পদে সদর হাসপাতালে সেবা নিতে তাদেরকে বাড়তি টাকা গুণতে হয়েছে। এরপর তাদের রোগী চিকিৎসা গাফিলতিতে মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ।
সিভিল সার্জন ডাঃ শেখ আবু শাহীন বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চেষ্টা করেছে । রোগীর অবস্থা ভাল ছিল না। এর পরও কর্তৃপক্ষের কোন গাফিলতি থাকলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Check Also
সাতক্ষীরা সীমান্ত থেকে ১০ বোতল ভারতীয় মদ জব্দ
মুহাম্মদ হাফিজ, সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরা সীমান্তে মাদক বিরোধী বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে ১০ বোতল ভারতীয় …