আনন্দবাজার পত্রিকার রিপোর্ট শাসক দলেরই ২ মেয়র ঢাকায়, নজরদারির মধ্যে ভোটের অভিযোগ

ক্রাইমবার্তা ডেস্করিপোটঃ   শনিবার বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার দু’টি সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে শাসক দল আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা জয়লাভ করলেও ভোট পড়েছে বেশ অল্প। সাধারণ ভাবে শান্তিপূর্ণ নির্বাচনেও ভোটারদের অনাগ্রহ নির্বাচন কমিশনের কপালে ভাঁজ ফেলেছে। কমিশনের সচিব জানিয়েছেন, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে ভোট পড়েছে ২৫.৩% এবং দক্ষিণে ২৯%।

যন্ত্রে ভোটের পরে ফলপ্রকাশে শনিবার মধ্যরাত পার হয়ে যায়। ঢাকা উত্তরে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের আতিকুল ইসলাম। প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি প্রার্থী তাবিথ আউয়ালকে তিনি ২ লক্ষের বেশি ভোটে পরাজিত করেছেন। ঢাকা দক্ষিণে বিএনপি প্রার্থী ইশরাক হোসেনকে প্রায় পৌনে দু’লক্ষ ভোটে পরাজিত করে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের ফজলে নুর তাপস। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুই প্রার্থীকে অভিনন্দন জানিয়ে ঘোষণা করেছেন, এই জয় তাঁর দলের জনপ্রিয়তা ও ইভিএম-এর জয়।

এই প্রথম ঢাকার সর্বত্র ভোটযন্ত্র (ইভিএম) ব্যবহার হয়েছে। এর ফলে ভোটারদের মধ্যে উৎসাহ বাড়বে বলে মনে করা হয়েছিল।
কমিশনের সচিব জানিয়েছেন, অন্তত ৫০% ভোট পড়বে বলে তাঁরা ধারণা করেছিলেন। ভোটের হার কেন এত অল্প হল, সেই প্রশ্নের স্পষ্ট জবাব না দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘সেটা গবেষণার বিষয়।’’ কিন্তু বিরোধী রাজনৈতিক নেতাদের দাবি, একটার পর একটা নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ ওঠার পরে মানুষ ভোটদানে আস্থা হারিয়ে ফেলেছেন। তাঁদের ধারণা হয়েছে, ফলাফল আগেই নির্ধারণ করে রাখায় সাধারণ মানুষের ভোটদান অর্থহীন। নির্বাচন কমিশনের সচিবের দাবি, ‘‘আওয়ামী লীগের সমর্থকেরাও নিজেদের প্রার্থীকে ভোট দিতে আসেননি। এলে এত কম ভোট পড়ত না।’’ বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেছেন, ‘‘বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাটির ওপরই সাধারণ মানুষকে আস্থাহীন করে তুলেছে সরকার।’’ নির্বাচনকে তামাশা বলে বর্ণনা করে রবিবার সকাল থেকে সন্ধে হরতালের ডাক দিয়েছিল বিএনপি। আওয়ামী লীগের মুখপাত্র মাহবুবুল আলম হানিফ বিরোধীদের নালিশ উড়িয়ে দাবি করেছেন, ‘‘বাংলাদেশে ১০০ বছরে এমন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়নি!’’

শনিবারে ভোট দিতে এসে অনেককে ফিরে যেতে হয়েছে, এমন অভিযোগ মিলেছে। কারও অভিযোগ বুথে ঢোকার আগেই বলা হয়েছে, তাঁদের ভোট দেওয়া হয়ে গিয়েছে। অনেকের আবার আঙুলের ছাপ বা নাগরিক কার্ডের নম্বর না-মেলায় ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

খোদ নির্বাচন কমিশনারের হাতের ছাপই যন্ত্রের সঙ্গে মেলেনি। প্রায় আধ ঘণ্টার চেষ্টার পরে নাগরিক কার্ডের নম্বর মেলায় তিনি ভোট দিতে পারেন। কোথাও আবার নজরদারির মধ্যে ভোট দিতে হয়েছে, এমন অভিযোগ মিলেছে। কোনও বুথে আধাপুলিশ, কোথাও নির্বাচন কর্মী বা কোথাও শাসক দলের কর্মীরা ভোটারদের সহযোগিতা করার নামে এই নজরদারি করেছে।

শনিবারের ভোটে ঢাকার অধিকাংশ বুথেই বিরোধীদের কোনও এজেন্ট চোখে পড়েনি। বিএনপির অভিযোগ, সকালে প্রায় সব বুথ থেকে তাদের এজেন্টকে বার করে দেওয়া হয়েছে। বুথের বাইরে তাদের কর্মীদের বসতে পর্যন্ত দেয়নি পুলিশ। আওয়ামী লীগের দাবি, এজেন্ট বসাতে পারেনি বিএনপিই। কেউ তাদের বাধা দেয়নি। কর্মী-সমর্থকেরাও তাদের পাশে নেই।

Check Also

সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন এর আয়োজনে বিজয় দিবস পালন ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠান

নিজস্ব প্রতিনিধি : সাতক্ষীরায় বিজয় দিবস উপলক্ষে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা,পুরুষ্কার বিতারণ ও আলোচনা সভা  অনুষ্ঠিত হয়েছে। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।